বঙ্গবন্ধু ছিলেন এক বিশাল হৃদয়ের মানুষ। নিজে স্বপ্ন দেখতেন এবং মানুষকে স্বপ্ন দেখাতেন। দেশের মানুষের প্রতি তাঁর আস্থা, ভালোবাসা ও বিশ্বাস ছিল অপরিসীম।
নিজের জীবন উৎসর্গ করে বাংলার মানুষের ভালোবাসার প্রতিদান দিয়ে গেছেন। ঋণী করে গেছেন বাঙালি জাতিকে।
জাতির পিতার আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে জাতি এগিয়ে যাক ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথে, নোঙ্গর ফেলুক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায়।
সোমবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে স্মারক বক্তৃতায় রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সন্ধ্যা ৬টায় সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়।
বিউগলে রাষ্ট্রপতির আগমনী অর্কেস্ট্রা বাজানোর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি মো, আবদুল হামিদ ৬টা ৭ মিনিটে সংসদ কক্ষে পৌঁছলে প্রথা অনুযায়ী জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়।
সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যসহ অধিবেশন কক্ষে থাকা সবাই দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রপতিকে সম্মান জানান।
এরপর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দেওয়া দুর্লভ ভাষণ সংসদ কক্ষে দেখানো হয়।
এ সময় পুরো অধিবেশনে নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। এরপর ৬টা ৩৪ মিনিটে স্পিকারের পাশে রাখা ডায়াসে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করেন রাষ্ট্রপতি, যিনি গণপরিষদ ও দেশের প্রথম সংসদের সবচেয়ে কনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে আইনসভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে দেখেছেন।
রাষ্ট্রপতি শুরুতেই দেশবাসীসহ দেশের বাইরে বসবাসরত সকল প্রবাসীকে মুজিববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ-২০২০ উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে থাকতে পারা আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দ ও গৌরবের বিষয়।
এটি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি। এজন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে অশেষ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
চলমান করোনা পরিস্থিতিতে বিশেষ অধিবেশনের আয়োজন নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমি আশা করি অধিবেশনের কার্যক্রম বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
এ ছাড়া জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অধিবেশনে জাতির পিতাকে সম্মান জানানোর মাধ্যমে আমরা নিজেরাও সম্মানিত হবো।
ভবিষ্যত প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর চেতনায় উজ্জীবিত করতে সকলকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়। বঙ্গবন্ধু একটি প্রতিষ্ঠান, একটি সত্তা, একটি ইতিহাস।
জীবিত বঙ্গবন্ধুর মতোই অন্তরালের বঙ্গবন্ধু শক্তিশালী। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, বাঙালি থাকবে, এদেশের জনগণ থাকবে, ততদিনই বঙ্গবন্ধু সকলের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।
নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের মুক্তির আলোকবর্তিকা হয়ে তিনি বিশ্বকে করেছেন আলোকময়। তাই আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম যাতে বঙ্গবন্ধুর নীতি, আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বেড়ে উঠতে পারে, সে লক্ষ্যে সকলকে উদ্যোগী হতে হবে।