সমিত জামানঃ
শত বছর ধরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে চলেছে ঈশ্বরদীর ঐতিহ্যবাহী সাঁড়া মাড়োয়ারী উচ্চ বিদ্যালয়। ঈশ্বরদী শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই বিদ্যালয়টি সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমায় অনেক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। এ স্কুল মাঠে আয়োজিত ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের জনসভা ভণ্ডুল করেছিল এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে বাংলাদেশের স্বাধীকার আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্রদের ভূমিকা গৌরবগাঁথা।
বিদ্যালয়ের খ্যাতিমান কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের সাবেক সেনা প্রধান জেএস চৌধুরী, সাবেক এমপি মনজুর রহমান বিশ্বাস, পুঠিয়ার সাবেক এমপি ফারুক সাহেব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনার বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ, সামরিক বাহিনীর বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক, কামিনী হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকা প্রবাসী ড. মোশতাক আহমেদ, কানাডা প্রবাসী প্রকৌশলী এলজিইডি’র পরিচালক মোশতাক আহমেদ সাবু বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম চৌধুরী রাবির মুক্তিযোদ্ধা শামছুজ্জামান সেলিম প্রয়াত ভাষাসৈনিক মাহবুব আহমেদ খান ভাষাসৈনিক লুৎফর রহমান অবসরপ্রাপ্ত উপ-সচিব বীরমুক্তিযোদ্ধা কামাল আহমেদ প্রমুখ।
১৯১৭ সালে পদ্মা নদীর তীরে সাঁড়ায় প্রথম বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। সে সময় সাঁড়া এ অঞ্চলের ব্যস্ততম নদী বন্দর ছিল। নদী ভাঙনের বিষয়টি মাথায় রেখে এক বছর পরই ঈশ্বরদী শহরের প্রাণকেন্দ্রে ৮.১৯ একর জমির উপর বিদ্যালয় স্থানান্তর করা হয়। হিন্দু মাড়োয়ারী সম্প্রদায়ের হরি প্রসাদ ঝুনঝুনওয়ালা বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রথম প্রতিষ্ঠা সাঁড়া এবং প্রতিষ্ঠাতা মাড়োয়ারী হওয়ার কারণে সাঁড়া মাড়োয়ারী উচ্চ বিদ্যালয় নামকরণ করা হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষক ছিলেন সেই সময়ের গ্রাজুয়েট বিদ্যাধর দাসগুপ্ত। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে। এখানে ১৫০ ফিট-১৮০ ফিটের একটি বিশাল খেলার মাঠ রয়েছে।
এছাড়া সমৃদ্ধ লাইব্রেরী ও বিজ্ঞানাগার আদিকাল হতেই এখানে রয়েছে।ভাষা আন্দোলনের পর ১৯৬২’র ছাত্র আন্দোলন, ১৯৬৬’র ছয় দফার আন্দোলন, ১৯৬৯’র গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্ররা ছিল অগ্রগামী। বর্তমানে স্কুলটিকে স্কুল এন্ড কলেজে উত্তীর্ণ করা হয়েছে এবং জাতীয়করণ করা হয়েছে বর্তমানে স্কুলটি সরকারি সারা মারওয়ারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ নামে পরিচিত।