পদ্মাসেতু দৃশ্যমান হওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক শ্রেণির লোক প্রশ্ন তুলেছেন- নিজস্ব অর্থায়নে বানানো সেতুতেও কেন টোল দিতে হবে?
আসুন একবার দেখে নিই, নিজস্ব অর্থায়ন হলেও কেন টোল দিতে হয়। ধরুন, গাইবান্ধার বাসিন্দা মতি মিয়া নিজ জেলায় ব্যবসা করেন।
বিগত ২০ বছরে তিনি একবারও দক্ষিনবঙ্গে যাননি। আগামি দিনেও তিনি পদ্মাসেতু ব্যবহার করে সেখানে যাবেন এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। অথচ পদ্মাসেতুর জন্য তিনি ট্যাক্স দিয়েছেন।
এদিকে বরিশালের বাসিন্দা মকবুল ঢাকায় ব্যবসা করেন। তিনিও পদ্মাসেতুর জন্য ট্যাক্স দিয়েছেন। তিনি প্রতিমাসে তিনি বরিশাল যান। পদ্মাসেতু হওয়ার পর তিনি হয়তো প্রতি সপ্তাহে বরিশাল যাবেন।
এখন পদ্মাসেতুতে যদি টোল নেয়া না হয় তাহলে মতি মিয়ার চেয়ে বেশি লাভবান হবেন মকবুল। কারণ যে প্রতিদিন যাবে সে বেশি লাভবান হবে, আর যে বছরে একবার যাবে সে একবার লাভবান হবে।
অথচ দুজনই পদ্মাসেতুর জন্য সমান ট্যাক্স দিয়েছেন। ফলে পদ্মাসেতুতে টোল না নিলে কিছু ব্যাক্তি বেশি সুবিধা পাবেন কিছু ব্যাক্তি কম সুবিধা পাবেন। এতে রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈষম্য সৃষ্টি হবে।
এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র সবসময় নিরপেক্ষ আচরণ করে। পদ্মাসেতুর জন্য সরকার যে অর্থ ব্যয় করেছিলো সেই অর্থ টোলের মাধ্যমে উঠিয়ে আনা হয়।
দেশের সব নাগরিক যেই ট্যাক্স দিয়েছিলো সেটা আবার সরকারের কাছে ফেরত আসে। যে টাকা পরবর্তীতে অন্য কোন কাজে ব্যায় করা হয়। প্রবাসী, কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী এবং আপনার আমার সব ট্যাক্সের টাকা মূলত বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে থাকে।
সরকার এই ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করে। সরকার যখন বাংলাদেশ ব্যাংককে এই টাকা ফেরত দেয় তখন আপনার আমার টাকাই আবার ফেরত আসে।
পৃথিবীর সব দেশের সরকার এভাবেই কাজ করে। যার জন্য বিশ্বের সব দেশেই সেতু ব্যবহারে টোল নির্ধারণ করা হয়। আপনার আমার সবার টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য এই কারণেই পদ্মাসেতুতে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে।