নাটোরের নর্থবেঙ্গল চিনিকল সারা বছর চিনি পরিশোধনের কথা বলে সাত বছর আগে অনুমোদন করিয়ে নেওয়া একটি প্রকল্প মাঝপথে এসে বাতিল করে দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও ছলচাতুরির মধ্যে লোকসানি প্রতিষ্ঠানটি এখন পড়েছে গভীর সংকটে।
জানা গেছে, ঘটনার শুরু ২০১৪ সালে। দেশে বিদ্যুৎ ঘাটতির কথা উল্লেখ করে এবং সারা বছর চিনি পরিশোধনের পরিকল্পনা তুলে ধরে ১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত নর্থ বেঙ্গল চিনিকলের নামে বিএসএফআইসি একটি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়। প্রকল্পটি যাতে দ্রুত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) পাস হয়, সে জন্য কৌশলে যন্ত্রপাতির দাম ধরা হয় কম করে। আর যন্ত্রপাতি আমদানির সিদ্ধান্ত হয় ভারত ও চীন থেকে। ৭৩ কোটি টাকা খরচে ‘নর্থ বেঙ্গল চিনিকলে কো-জেনারেশন পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সুগার রিফাইনারি স্থাপন’ শিরোনামের প্রকল্পটি দুই বছরের মধ্যেই অর্থাৎ ২০১৬ সালে শেষ করার প্রতিশ্রুতি দেয় বিএসএফআইসি।
কিন্তু বার বার দরপত্র আহ্বান করতে করতেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তখন ইউরোপ থেকে যন্ত্রপাতি আমদানির কথা বলে প্রকল্পের ব্যয় ৭৩ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৩২৪ কোটি টাকায় উন্নীত করে আবার একনেক সভায় অনুমোদন করিয়ে নেওয়া হয়।
এইভাবে পাঁচবার আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেও যখন কোনো ঠিকাদার পাওয়া যায়নি, তখন বিএসএফআইসি তৃতীয় দফায় প্রকল্পের খরচ বাড়িয়ে ৩২৪ কোটি থেকে ৯২৭ কোটি টাকায় উন্নীত করে গত মাসে প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায়। এবারের প্রস্তাবে খরচ বেড়েছে ৬০৩ কোটি টাকা বা ১৮৫ শতাংশ। কিন্তু অস্বাভাবিক ব্যয় দেখে প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত রেখেই বাতিল করে দেয় পরিকল্পনা কমিশন। একই সঙ্গে নতুনভাবে বিস্তারিত সমীক্ষার ভিত্তিতে পুনরায় প্রকল্পটি তৈরির পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।