নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কারখানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৫২ জনের লাশ। এর মধ্যে কারখানার চতুর্থ তলা থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে ৪৯টি মরদেহ।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, চতুর্থ তলাটি ছিল তালাবদ্ধ। যে কারণে সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা বের হতে পারেননি। আগুনে কেড়ে নিয়েছে তাদের প্রাণ।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার পর আগুন লাগে রূপগঞ্জের ওই কারখানায়। ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে শুক্রবার সকাল থেকেই কারখানাটিতে তল্লাশি চালাতে থাকে ফায়ার সার্ভিস। আর এ সময় চতুর্থ তলা থেকে ৪৯টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনাস্থলে কর্মরত ফায়ার সার্ভিসের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ছয় তলা কারখানাটির ছাদে ওঠার জন্য দুইটি সিঁড়ি রয়েছে। চতুর্থ তলা থেকে ছাদে যাওয়ার যে সিঁড়িটি, সেটি ছিল তালাবন্ধ ছিল। চতুর্থ তলা থেকে নামার সিঁড়ি খোলা থাকলেও নিচের ভয়াবহ আগুনের কারণে সেই সিঁড়ি দিয়ে নামার কোনো সুযোগ ছিল না। ওই সিঁড়ি দিয়ে নামার অর্থ আগুনে ঝাঁপ দেওয়া।
এ অবস্থায় শ্রমিকরা নিচে নামতে পারেননি। অন্যদিকে ওপরে ওঠার সিঁড়ি তালাবন্ধ থাকায় শ্রমিকরা ছাদেও যেতে পারেননি। আগুনের লেলিহান শিখার কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে তাদের। ছাদে ওঠার সিঁড়িটা খোলা থাকলে হয়তো তারা ছাদে গিয়ে আশ্রয় নিতে পারতেন। সেক্ষেত্রে ছাদ থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়তো সম্ভব হতো।
ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দেবাশিষ বর্ধন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা গাড়িতে মই লাগিয়ে কিন্তু ছাদ থেকে ২৫ জনকে উদ্ধার করেছি। অন্য শ্রমিকরাও ছাদে ওঠার সুযোগ পেলে আমরা তাদের ছাদ থেকে নামিয়ে আনতে পারতাম। কিন্তু চতুর্থ তলার শ্রমিকেরা সেই সুযোগটিই পাননি।
শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কর্ণগোপ এলাকায় সেজান জুস কারখানায় প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কাজ করে। সাত তলা ভবনে থাকা কারখানাটির নিচ তলার একটি ফ্লোরের কার্টন থেকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত হয়। মৃহূর্তের মধ্যে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কালো ধোঁয়ায় কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়।