দ্বিতীয় নিউক্লিয়ার প্লান্ট গড়ে ওঠতে পারে মহেশখালী/কুতুবদিয়াঃ ব্যবহৃত হতে পারে দেশীয় ইউরেনিয়াম।
দ্বিতীয় পরমাণু কেন্দ্র মহেশখালীতে বা কুতুবদিয়ার কোন অঞলে গড়ে ওঠতে যাচ্ছে। অন্তত পরমাণু কেন্দ্রের সাথে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা সেই সম্ভাবনার কথাই জানিয়েছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বরিশালের কোন দ্বীপাঞ্চলে দ্বিতীয় পরমাণু কেন্দ্র তৈরীর ব্যাপারে সার্ভে করার কথা জানিয়েছিলেন। দেশের প্রবীণ পরমাণু বিজ্ঞানী, পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক পরিচালক ডঃ মীর কাশেম জানিয়েছেন বাংলাদেশের ৫৫০ কিঃমি দীর্ঘ সমুদ্র উপকূলে ভারি খনিজ বালি অনুসন্ধানে চালানো ভূতাত্ত্বিক জরিপে ১৭টি বালির স্তুপের মধ্যে ৮টি অতি মূল্যবান খনিজ পদার্থ পাওয়া গিয়েছিল। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত,মহেশখালী, কুতুবদিয়া, ইনানী, শাহপরীরদ্বীপ, কুয়াকাটা দ্বীপের কোন অংশ এসব বালির স্তুপ রয়েছে।যদিও এক্সেক্ট লোকেশন প্রকাশ হয়নি। এছাড়া গত ৯ই জানুয়ারী বিখ্যাত জার্নাল সায়েন্সডাইরেক্ট ডট কমেের গবেষণা প্রতিবেদনে কক্সবাজারে ভূগর্ভস্থ মাটিতে থাকা জিরকন ও মোনাজাইটে উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম থাকার তথ্য আছে
পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক পরিচালক আশরাফ আলী সিদ্দিকও জানিয়েছেন কক্সবাজারের ভুগর্ভস্হ মাটি ও পানিতে পরীক্ষা করে অতি উচ্চমাত্রার পরমাণু চুল্লির জ্বালানী ইউরেনিয়ামের অস্তিত্ব রয়েছে।সৈকতের নির্দিষ্ট অংশের বালির মোনাজাইটে ১৬% পর্যন্ত ইউরেনিয়ামের অস্তিত্ব রয়েছে।আর কক্সবাজার সৈকতের মত মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার ভূবৈশিষ্ট একই হওয়ায় সেখানেও ব্যবহারযোগ্য ইউরেনিয়ামের অস্তিত্ব রয়েছে।এসব ইউরেনিয়াম সংগ্রহ করে ব্যবহার উপযোগী করতে পারলে দেশীয় ইউরেনিয়াম দিয়েই দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র খুব ভালভাবেই চালানো যাবে।
আরেক পরমাণু বিজ্ঞানী ডঃ অাশরাফ কক্সবাজারে ভূগর্ভস্থ পানি পরীক্ষা করে 10ppm মাত্রার ইউরেনিয়ামের অস্তিত্ব পেয়েছিলেন। যেটি WHO কর্তৃক অনুমোদিত সহনশীল মাত্রার চেয়ে প্রায় ৫ গুণ বেশী। WHO কর্তৃক অনুমোদিত সহনশীল মাত্রা 2ppm এর চেয়ে একটু বেশী। অর্থাৎ কক্সবাজারের জনগণ বর্তমানে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম ভূগর্ভস্থ পানির সাথে গ্রহণ করছে তা ভবিষ্যতে বেশ বড় স্বাস্হ্যঝুঁকি সৃষ্টি করতে চলেছে। অন্তত স্বাস্থ ঝুকিঁ কমানোর জন্যে হলেও ইউরেনিয়ামে মাত্রা সহনশীলতার পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য কাজ করা উচিত।
১৯৬৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার পরমানু বিজ্ঞানীরা কক্সবাজার সৈকতে একটি জরিপ চালান।জরিপে পাওয়া ওই ১৭টি বালির স্তুপের মোনাজাইটের পরিমাণ ধরা হয় ১৭ হাজার ৩৫২ মেট্রিকটন।এই মোনাজাইটের গড়ে ১০% হারে ইউরেনিয়ামের মজুত ধরা হলেও শুধু কক্সবাজারের সৈকতে ১ হাজার ৭৩৫ মেট্রিটন ইউরেনিয়ামের মজুত রয়েছে। তবে মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার ইউরেনিয়ামের মজুত সম্পর্কে এখনই বিজ্ঞানীরা কিছু জনসমক্ষে আনেননি। তবে দুঃখের বিষয় হল দেশের কোন সরকারই ইউরেনিয়াম সংগ্রহের উদ্যোগ না নেওয়া তা বিভিন্ন হোটেল এবং বসতবাড়ির নিচে ১৭টি খনির অনেকগুলোই খনিই বর্তমানে হারিয়ে গিয়েছে।যা ব্যাপক অনুসন্ধানে হয়ত পুনরায় পাওয়া যাবে।বর্তমানে যা অবশিষ্ট আছে সেগুলো ব্যবহার করলেও দেশে ১টি নিউক্লিয়ার প্লান্টের কাঁচামাল যোগান দেওয়া সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য ১কেজি কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় ৮ইউনিট আর ১কেজি ইউরেনিয়াম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় ২ কোটি ৪০ লক্ষ ইউনিট।