তুরস্ক সাম্প্রতিক সময়ে তাদের নিজস্ব প্রযুক্তির এসওএম-বি২ সিরিজের ক্রুজ মিসাইলের প্রথম সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। অত্যন্ত শক্তিশালী এই নতুন প্রজন্মের এসওএম-বি২ ক্রুজ মিসাইল কংক্রিট ভেদ করে ব্যাংকার ধ্বংস করার বিশেষ উপযোগী করে ডিজাইন করা হয়েছে। ২৫০ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্রুজ মিসাইলটিতে যুক্ত রয়েছে দুই স্তরের ট্যামেণ্ড পদ্ধতির এক্সপ্লুসিভ ওয়ারহেড। তুরস্কের এসওএম-বি২ ক্রুজ মিসাইলটি আসলে একটি মাইক্রোটার্বো টিআরআই-৪০ ট্যার্বোজেট ইঞ্জিন চালিত এয়ার টু গ্রাউণ্ড স্টাইক ক্যাপবল এক নতুন প্রযুক্তির ক্রুজ মিসাইল। যা যুদ্ধক্ষেত্রে তুরস্ককে বিশেষ কিছু নতুন ধরণের সুবিধা দিবে এবং শত্রু পক্ষের ব্যাংকারে লুকিয়ে থাকাটা ব্যাপক মাত্রায় বিপদজনক করে তুলবে।
এসওএম-বি২ ক্রুজ মিসাইলটি তুরস্কের সায়ন্টিফিক এণ্ড ট্যাকনোলজিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের অধিনস্থ অঙ্গ প্রতিষ্ঠান রিসার্চ এণ্ড ডেভলপমেন্ট ইনিস্টিউট (এসএজিই) এবং রকেটসান ইনিস্টিউট যৌথভাবে ডিজাইন এবং তৈরি করেছে এবং খুব সম্ভবত সাম্প্রতিক সিরিয়ার ইবদিলে আসাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি এটিকে ব্যবহার করে থাকতে পারে বলে মনে করা হয়। ৬০০ কেজি ওজনের এসওএম-বি২ ক্রুজ মিসাইল ২৩০ কেজি ওজনের দুই স্তরের ট্যামেণদ পদ্ধতির ওয়ারহেড বহন করে এবং এটি প্রতি ঘন্টায় ০.৯৬ ম্যাক গতিতে তার নিদিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর দিকে ছুটে যায়। সাধারণ দৃষ্টিতে এটির গতি কম মনে হলেও অনেকটা স্টিলথ ক্যাটাগরি এবং জ্যামার সিস্টেম ইনস্টল থাকায় এটিকে প্রতিহত করাটা বেশ কঠিন বলেই জানিয়েছে তুর্কী রকেটসান কর্পোরেশন। তাছাড়া তুরস্ক ২০০৬ সালে এসওএম ক্রুজ মিসাইলের ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করে এবং ২০১১ সালে এসওএম সিরিজের এসওএম-এ ক্যাটাগরির ক্রুজ মিসাইলের সফল পরিক্ষা সম্পন্ন করা করে তুর্কী এয়ার ফোর্স।
এদিকে তুরস্ক তার নিজস্ব প্রযুক্তির এসওএম ক্রুজ মিসাইলটিকে তার বিমান বাহিনীতে থাকা আপগ্রডেড এফ-৪ই ২০০০, এফ-১৬ ব্লক ৪০ জেট ফাইটারে ইনস্টল সম্পন্ন করেছে। তাছাড়া ভবিষ্যতের এফ-৩৫ লাইটনিং ২ ক্যাটাগরির স্টিলথ জেট ফাইটারে ব্যাবহারের বিশেষ উপযোগী করে ডিজাইন করেছে। তুরস্কের এই সিরিজের ক্রুজ মিসাইলটিতে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস), ইনটারিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম (আইএনএস), টেরেন রেফারেন্সেড নেভিগেশন (টিআরএন), ইমেজ বেসড নেভিগেশন (আইবিএন), এবং অটোমেটিক টার্গেট রিকোগনাইজেশন (এটিআর) সেন্সরের মতো উচ্চ প্রযুক্তির সিস্টেম ব্যবহার করে নেভিগেট করা হয়েছে। যা ক্রুজ মিসাইলটিকে যুদ্ধক্ষেত্রে করে তুলেছে একেবারেই অপ্রতিরোধ্য।
তাছাড়া তুর্কী রকেটসান কিন্তু মার্কিন লকহীড মার্টিন কর্পোরেশনের সহায়তায় (এসওএম) ক্রুজ মিসাইলের এসওএম-এ, এসওএম-বি১, এসওএম-বি২ এবং এসওএম-জে সিরিজের ক্রুজ মিসাইল ডেভলপমেন্ট করেছে। আর এটি কিন্তু যে কোন প্রতিকূল আবহাওয়ায় এবং পরিবেশে দিবা-রাত্রী আকাশ থেকে ভূমিতে থাকা ব্যাংকার কিম্বা সাগরে থাকা সুনিদিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে এক রকম নিরবেই ব্যাপক মাত্রায় আঘাত হানতে সক্ষম।