আপদ্মা সেতু নির্মাণ কাজের শুরু থেকেই নানা প্রতিকূলতা এসেছে সেতু তৈরিতে।সকল প্রতিকূলতা এড়িয়ে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক ছড়ানো করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও থেমে থাকেনি সেতুর নির্মাণযজ্ঞ। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও নির্মাণ শ্রমিকদের রাতদিন নিরলস পরিশ্রমে সময়ের সঙ্গে এগিয়ে চলছে সেতুর নির্মাণ কাজ। এরই ধারবাহিকতায় শনিবার জাজিরা প্রান্তের ২৭ ও ২৮নং পিলারে বসানো হলো সেতুর ২৭তম স্প্যান।
২৬তম স্প্যান বসানোর ১৮দিনের মাথায় সেতুর পিলারের উপর ২৭তম স্প্যানটি বসানো হলো। এই স্প্যান বসানোর পর ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটারের পদ্মা সেতুর চার হাজার ৫০ মিটার অংশ দৃশ্যমান হলো।২৭ তম স্প্যানটি সফলভাবে বসানোর পর আর বাকি থাকলো মাত্র ১৪টি স্প্যান।
পদ্মাসেতুর দায়িত্বশীল প্রকৌশলী সূত্র সংবাদ মাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা যায়, গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ‘তিয়ান-ই’ভাসমান ক্রেনে স্প্যানটি রওনা করে। বেলা ১০টার দিকে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ২৭ ও ২৮ নং পিলারে কাছে এসে পৌঁছে ক্রেন নোঙর করে রাখা হয়। আজ সকাল আটটা থেকে শুরু হয় স্প্যান বসানোর কার্যক্রম। এর মধ্যেই সেতুর ৪১টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে বাকি ২টি পিলারের কাজ শেষ হবে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ২৬টি স্প্যান। প্রতিটি স্পেনের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সবকটি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।