যে জন্য আজকে আমি এখানে উপস্থিত হলাম। আমরা যে ছুটি ঘোষণা করেছি বা কার্যক্রম স্থবির করেছি, যার জন্য আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে যারা দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষ, দরিদ্র, যেমন শ্রমিক শ্রেণী, এমনকি বিভিন্ন সম্প্রদায়, যেমন হিজড়া, বেদে, চা শ্রমিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক আছে।
প্রতিবন্ধী আছে, এ ধরনের বহুত লোক আছে, যারা জীবিকা নির্বাহ করতো তাদের সে পথ বন্ধ হয়ে গেছে বলতে গেলে। তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের কর্তব্য। তাদের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি, খাদ্যদ্রব্য পাঠিয়েছি, যেমন ১০ টাকা কেজি চাল, অথবা ভিজিএফ অতিরিক্ত আমরা দিচ্ছি।
সেখানে আমি সকলকে, জেলা প্রশাসকসহ যারা এ কাজের দায়িত্বে রয়েছেন, সবাইকে আমি বলবো যে, আমাদের যেটা নিয়মিত সামাজিক নিরাপত্তামূলক কাজ আছে সেই কাজগুলি সবাইকে যথাযথভাবে করতে হবে। কিন্তু তার বাইরে এই যে শ্রেণীটা আছে, তারা হয়তো দিনমজুর করে খেত বা দিন আনি দিন খাই। হয়তো সে ভ্যান চালক, রিকশা চালক, স্ক্রুটা চালক, চায়ের দোকানদার, ছোটখাটো কাজ যারা করে, দিনশেষে টাকা নিয়ে বাজার করে খেত, এই শ্রেণীর লোকজন এখন কাজ পাচ্ছে না বলে তারা ভুক্তভোগী।
সেই ক্ষেত্রে আমি বলব যে, তাদের কাছে আমাদের সাহায্য পৌঁছে দিতে হবে। খাদ্যদ্রব্য পৌছে দিতে হবে। যেন তাদের পরিবারকে নিয়ে তারা অভুক্ত না থাকে। সেখানে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে এবং তাদেরকেও জীবনযাত্রা সম্পর্কে সচেষ্ট করতে হবে। এবং তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা সেটা আমাদের করতে হবে।
কাজেই আমি এটুকু অনুরোধ করব, যেখানে আমাদের যেহেতু প্রশাসন থেকে শুরু করে আইন শৃঙ্খলা দিয়ে শুরু করে, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সদস্যসহ সকল বাহিনীর এবং সেইসাথে সকল শ্রেণীর এবং স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি সকলেই যারা আছেন, তারা একেবারে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত এই শ্রেণীর যারা, তারা যেন কষ্ট না পায়। তারা যেন অভুক্ত না থাকে। তার জন্য আপনাদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের বিত্তবানদের প্রতি আমি আহ্বান করেছিলাম যখন স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলাম।
তবে এটা অবশ্যই দেখতে হবে একজন যেন বারবার না পায়। কেউ যেন বাদ না পড়ে। সেই জন্য যথাযথ একটা তালিকা তৈরী করা উচিত। সেটা যদি আপনারা করে রাখেন তালিকা অনুযায়ী প্রত্যেকে যেন এই সহযোগিতা পায়, সেই বিষয়টা নিশ্চিত করতে হবে।এ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
এ দায়িত্ব আমাদের বিত্তশালী আছেন তাদেরকে যেমন পালন করতে হবে, আমাদের প্রশাসনে যারা তাদের কেও দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি যারা তাদের দায়িত্ব নিতে হবে, এটা সকলের দায়িত্ব, কাজেই এটা নিজের কর্তব্য হিসেবে আপনাদেরকে নিতে হবে।
আর এই জায়গাটায় কোনরকম যাতে দূর্নীতি-অনিয়ম না হয়, কোনরকম দূর্নীতি অনিয়ম হলে সেখানে কিন্তু ছাড় দেয়া যাবে না। কেননা মানুষের দুঃসময়ের সুযোগ নিয়ে কেউ অর্থশালী সম্পদশালী হয়ে যাবেন সেটা কিন্তু আমরা কখনো বরদাস্ত করব না। সে বিষয়টা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। আমি আগেই সতর্ক করে দিচ্ছি যে, এ ধরনের কোন অভিযোগ, কোন কিছু যদি পাই, সে যেই হোক না কেন আমি কিন্তু তাকে ছাড়বো না। এটা হল বড় কথা কাজেই এ ব্যাপারে সবাই ঠিক থাকবেন।
গত ৩১ মার্চ গণভবনে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেশের ৬৪ জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।