সাম্প্রতিক শিরোনাম

আজ মুক্তির পুণ্যময় রজনী ও দোয়া কবুলের রাত -মোহাম্মদ হাসান

আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র শবে বরাত। আজকের রাতটি মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি মহিমান্বিত রাত। মর্যাদাপূর্ণ এই রাতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বান্দাদের জন্য তার অশেষ রহমতের দরজা খুলে দেন।
ফারসি ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত ও ‘বরাত’ অর্থ সৌভাগ্য। এ দুটি শব্দ নিয়ে ‘শবেবরাত’ বা সৌভাগ্যের রাত। আরবিতে একে বলে ‘লাইলাতুল বরাত’। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ১৪ শাবান দিবাগত রাতটিই পবিত্র শবেবরাত হিসেবে উদযাপন করে থাকেন। এ রাতটি বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত। এ রাতে আল্লাহতায়ালা বান্দাদের জন্য তার অশেষ রহমতের দরজা খুলে দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এ রাত সম্পর্কে বলেন, ইসলামে শাবান মাসের এই রাতকে ‘লাইলাতুল মিসফ মিন শাবান’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর পক্ষ থেকে এই রজনীতে ইবাদত করার ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে এদিন বাড়াবাড়ি পর্যায়ের খাওয়া-দাওয়ার চেয়ে ইবাদত-বন্দেগির দিকে বেশি নজর দেয়া প্রয়োজন। এশা ও ফজরের নামাজ অবশ্যই জামাতে পড়ার চেষ্টা করা উচিত। এছাড়া নফল ইবাদত, কোরআন তেলাওয়াত ও তসবিহ পাঠ করা যেতে পারে। পটকাবাজি-আতশবাজি অবশ্যই করা যাবে না। এটি শবেবরাতের কোনো অংশ নয়।
ইসলাম বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সূর্যাস্তের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত আজকের রাত মহিমান্বিত ভাগ্য-রজনী; পাপ মোচনের পরম সৌভাগ্যের রাত। এ রাতেই পরবর্তী বছরের জন্য ভাগ্য নির্ধারিত হয়। নির্ধারিত হয় হায়াত-মউত, রিজিক-দৌলত ও আমল। বিশেষ পুণ্য লাভের উদ্দেশে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরা তাৎপর্যপূর্ণ এ রাতে ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আজকার, মিলাদ-মাহফিল, নফল নামাজ আদায় ও কোরআন তেলাওয়াতে মশগুল থাকবেন। মহিমান্বিত এ রজনীতে মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশ্বের মুসলমান সম্প্রদায় বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া করবেন। মুসলমানদের কাছে মাহে রমজানের বার্তাও বয়ে আনে শবেবরাত। এটি রমজানের প্রস্তুতিও বটে। শাবান মাসের পর আসে পবিত্র মাহে রমজান।
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে উদযাপিত হলেও শবেবরাত বাঙালি মুসলমানদের কাছে একই সঙ্গে ধর্মীয় উৎসবেরও রাত। এই দিনে প্রত্যেক মুসলমানের ঘরে সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী ভালো খাবার, নানা রকম মুখরোচক হালুয়া, রুটি ও পায়েস তৈরি হয়। ঘরে তৈরি এসব খাবার
আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে পাঠানো হয়, বিতরণ করা হয় গরিব-দুঃখীর মাঝে। মহিমান্বিত এ রাতে অনেকেই দান-খয়রাত করে থাকেন। অনেকেই সারারাত ইবাদাত বন্দেগীর পর ফজরের নামাজের পর তাদের স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরবেন।
শবে বরাত ভাগ্যবণ্টনের রাতঃ
শবে বরাতের অন্যতম একটা ফজিলত হচ্ছে, এই রাতে সৃষ্টিজগতের ভাগ্যবণ্টন করা হয়। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- নিশ্চয়ই আমি কুরআন নাজিল করেছি মুবারকময় রাতে। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী, এই রাতে হিকমতপূর্ণ সব বিষয় সিদ্ধান্ত করা হয়। [সূত্র: সুরা দুখান, আয়াত:২-৩]। এই রাতে হিকমতপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ের ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়। তাই এ রাতকে ভাগ্য রজনী বা মুবারক রাত বলা হয়। মুবারক রাতের ব্যপারে মুফাসসিরগণের নিকট দুইমত; কেউ বলেন যে, মুবারক রাত অর্থ শবে কদর। আবার কেউ বলেন, মুবারক রাত অর্থ শবে বরাত। এ বিষয়ে উপমহাদেশের বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন আল্লামা আশরাফ আলী থানভী (র.), যাকে হাকিমুল উম্মাত বলা হয়; তিনি বলেছেন, মূলত কুরআন দুইবার নাজিল হয়েছে। এক রাতে কুরআন নাজিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে, দ্বিতীয় রাতে সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন হয়েছে। অর্থাৎ শবে বরাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আর শবে কদরে সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন হয়েছে। [সূত্র: ওয়াজ ও তাবলীগ, পৃ: ৮]

মুফাসসিরদের সর্দার আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস (রাঃ)-এর এরকমই মত পাওয়া যায়। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা শবে বরাতে যাবতীয় সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত ফয়সালা করেন, আর শবে কদরে তা নির্দিষ্ট দায়িত্বশীলদের নিকট অর্পণ করেন।[সূত্র: লুবাব, খ-:১৭, পৃ: ৩১১; তাফসীরে রাজি, খ-: ২৭, পৃ: ২৩৯; তাফসীরে কুরতুবী, খ-:১৬, পৃ:১২৬]। উলি্লখিত ব্যাখ্যা দ্বারা বুঝা যায় যে, শবে বরাত ও শবে কদর উভয় রাতেই কুরআন নাজিল হয়েছে। তবে শবে বরাতের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে-এতে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভাগ্য বণ্টন করা হয়। তাই এর নাম মুবারক রাত বা ভাগ্যরজনী। [সূত্র: তাফসীরে কাশশাফ, খ-:৪, পৃ:২৬৪; রুহুল মাআনী, খ-: ৯ পৃ: ১১২]।

সর্বশেষ

বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া সভাপতি ফারুকের প্রায় ১২০ কোটি টাকা ট্রান্সফার!

বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে বিশাল আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে! ক্রিকেট বোর্ডের প্রায় ১২০ কোটি টাকার ফান্ড আওয়ামী ঘরানার দুই ইয়েলো...

২০০৯ এর বিডিআর বিদ্রোহ এবং ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতি

"২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতীয় প্যারাশুট রেজিমেন্টের ৬ষ্ঠ ব্যাটালিয়নের মেজর কমলদীপ সিং সান্ধু সেদিন "স্পিয়ারহেড" বা অগ্রগামী বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি...

কি ঘটেছিলো বিডিআর বিদ্রোহে! নেপথ্য কাহিনি

আলোচিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কাহিনি আজও অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ বছরেও সেই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের সত্য কেউ জানতে পারেনি। কীভাবে কার স্বার্থে এবং...

পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে ছাত্রদলের যে পাঁচজনকে দেখা গেছে তারা হলেন- সাঈদ হোসেন...