যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এখন অনেক বেশি রাজনীতিসচেতন। তারা কেবল দেয়া নয়, রাজনীতিতে সংক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণও করছেন।
বিভিন্ন স্টেটে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে বিজয়ী হওয়ার রেকর্ডও রয়েছে। তাদেরই একজন ড. নীনা আহমেদ। এর আগে তিনি ছিলেন পেন্সিলভেনিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর ও রাজধানী ফিলাডেলফিয়ার ডেপুটি মেয়র এবং প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা।
এবার তিনি পেন্সিলভেনিয়ার অডিটর জেনারেল পদে লড়ছেন। এরইমধ্যে প্রাইমারিতে তিনি দলীয় প্রার্থীকে বিপুল ব্যবধানে পরাজিত করে চূড়ান্ত নির্বাচনে লড়ছেন।
৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট নেয়া ছাড়াও সিনেট, হাউজসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। একই দিন নীনা আহমেদও ভোটে মুখোমুখি হচ্ছেন। সেই নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
তাঁর নির্বাচনী সিনিয়র উপদেষ্টা ড. ইবরুল চৌধুরী বলেন, দেখুন আপনারা হয়তো খেয়াল করেছেন, প্রাইমারিতে বড় ব্যবধানে তিনি জয়ী হয়েছেন।
সেই সাথে সব জাতি ধর্মের মানুষের মধ্যে তিনি এরইমধ্যে বিপুল সাড়া জাগিয়েছেন। স্থানীয় জরিপগুলোতেও বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। ফলে এবার অনেকটা নিশ্চিতও বলা যায় ড. নীনার জয়লাভের বিষয়টি।
ড. ইবরুল আরও বলেন, ড. নীনা আহমেদ যদি এই নির্বাচনে জয়ী হন, সেটা অবশ্যই বাংলাদেশি আমেরিকানদের জন্য বড় একটি অর্জন হবে।
নীনা আহমেদ ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে লড়ছেন। গত ২ জুন অনুষ্ঠিত প্রাইমারিতে এবার তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে ৮০ হাজার ১৩৭ ভোট বেশি পেয়েছিলেন।
তিনি পেয়েছিলেন ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫২৬ ভোট। সেই অর্থে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা সেখানে অত নয়, ফলে তিনি সব দেশের মানুষের মধ্যে সাড়া জাগাতে পেরেছেন বলে মনে করেন ড. ইবরুল।
বিজয়ী হলে স্টেটের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো অশ্বেতাঙ্গ মুসলিম নারী ওই পদে অধিষ্ঠিত হবেন।
ড. নীনা জয়ী হলে তিনিই হবে ওই স্টেটে প্রতিনিধিত্বকারী সর্বোচ্চ পদে থাকা কোনো বাংলাদেশি আমেরিকান। ফলে এ নিয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে আগ্রহ অনেক।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকে এই কোভিড ১৯ এর মধ্যেও দিনরাত তার জন্যে সেখানে কাজ করছেন।
ড. নীনা আহমেদ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি যদি বিবেচনা করেন আমরা জরিপগুলোকে অতটা গুরুত্ব দিচ্ছি না। এমনভাবে কাজ করছি যেন আমরা ১০ পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছি।
যদিও বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে আমি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে অনেকটা এগিয়ে। যেখানে আমি ৫১ শতাংশ, সেখানে তিনি ৪৪ শতাংশ। তবে শেষ মুহুর্তে অনেক কিছু বদলে যাওয়ার শংকা থাকে। ফলে এটি ধরে রাখার জন্যে কাজ করে যাচ্ছি।
তবে এটি বলতে পারি, এবার ডেমোক্রেটদের মধ্যে জোয়ার দেখা যাচ্ছে। এটা সারাদেশের ক্ষেত্রেই। ফলে আমি আমার নির্বাচনে যেমন আশাবাদী তেমন গোটা দেশে জো বাইডেন ও কামালা হ্যারিস জয়ী হবেন বলে আমার বিশ্বাস।
ড. নীনা আহমেদ ২১ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর ইউনিভার্সিটি অব পেন্সিলভেনিয়া থেকে পিএইচডি করেন রসায়ন শাস্ত্রে।
এরপর থমাস জেফারসন ইউনিভার্সিটি থেকে করেছেন ফেলোশিপ। এরপর থেকে তিনি মানুষের অধিকার আদায়সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়তে শুরু করেন।
স্টেটের রাজধানী ফিলাডেলফিয়ার মাউন্ট এরিয়াতে তিনি স্বামী আহসান নসরতউল্লাহ, দুই কন্যা প্রিয়া ও জয়াকে নিয়ে বসবাস করেন।