ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও ‘কফিলের’ (নিয়োগকারী) অনুমতি না পাওয়ায় আটকে পড়া সৌদিপ্রবাসীদের অনেকেরই সে দেশে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদকে নিয়ে বুধবার দুপুরে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, ইরাক ও মালয়েশিয়ার মিশনপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, সৌদি আরবে গিয়ে কাজ করতে হলে চাকরিদাতাদের কাছ থেকে ছাড়পত্র লাগবে। তা না হলে কেউ কাজের উদ্দেশ্যে যেতে পারবেন না।
তিনি বলেন, চাকরিদাতা যদি চাকরি না দেন, তবে কর্মী যেতে পারবেন না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা বলেন আমরা কী করতে পারি? আপনি চাকরি দেবেন বলেছেন, কিন্তু দিলেন না। এ ক্ষেত্রে আমরা কী করতে পারি?
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আটকে পড়া প্রবাসী কর্মীদের রাস্তায় না নামার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যেহেতু তারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, তাদের নতুন চাকরি খুঁজতে হবে।
তাদের বেশি অসুবিধা হওয়ার কথা না। মালিক যদি চাকরি না দেন তবে কী করার আছে? সরকার তো কারো চাকরি দিতে পারে না।
এ পর্যন্ত ছয় হাজার লোক সৌদি আরব গেছেন এবং তাঁরা অনুমতি নিয়ে গেছেন।
বিষয়টি দুই দেশের সরকারের হাতেও নেই। করোনা মহামারির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা আগের মতো নেই। এ ছাড়া করোনার ঝুঁকিও আছে। ভারতসহ বেশ কিছু দেশ থেকে সৌদিতে ফ্লাইট যাওয়া বন্ধ আছে।
এমন পরিস্থিতিতে সৌদি সরকার বাংলাদেশিদের জন্য দরজা খোলা রেখেছে। বাংলাদেশিদের বেশির ভাগ কাজ করেন বেসরকারি খাতে। সে প্রতিষ্ঠানগুলো যদি বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রমিক নিতে না চায়, তাহলে কিছু করার নেই।
জানা গেছে, সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য প্রায় ২৫ হাজার বাংলাদেশির নামে ভিসা ইস্যু করা হয়েছিল। সেই ভিসার একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ ছিল। করোনার কারণে যাতায়াত বন্ধ থাকায় তাঁরা যেতে পারেননি।
অনেক ক্ষেত্রে ওই বাংলাদেশিদের কাজের চাহিদাও কমেছে। ফলে পরিস্থিতি অনুযায়ী চাহিদা সাপেক্ষে নতুন করে ভিসা ইস্যু করতে হবে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, গত মার্চ পর্যন্ত ২৫ হাজার বাংলাদেশিকে নতুন ভিসা ইস্যু করেছিল সৌদি আরব। ব্যবহার না করার কারণে সে ভিসাগুলো বাতিল হয়ে গেছে। এদের সবাইকে আবার নতুন করে ভিসা দেওয়া হবে।
১ অক্টোবর থেকে সৌদির সঙ্গে সপ্তাহে মোট ২০টি ফ্লাইট চালু হবে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওই ফ্লাইটগুলোর মধ্যে সৌদি এয়ারলাইনসের ১০টি, আর বিমানের ১০টি।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ‘আমাদের সমস্যা যা আছে, সেটি কূটনীতিকদের জানিয়েছি। এ কথাগুলো তাঁদের সরকারের কাছে যাবে।
তারপর জানা যাবে ফলাফল কী হবে। কিন্তু সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ আশাবাদী জানিয়ে তিনি বলেন, সব সময় বিকল্প চিন্তা করতে হয়। আমি আশা করলাম, কিন্তু হলো না, তখন বিকল্প কী—সেটি ভাবতে হবে।
আমরা যদি একটি নিয়ে বসে থাকি এবং সেটি যদি না হয় তবে আমরা কোনো দিন শান্তিতে থাকব না।