রাজশাহীর পুঠিয়ার শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্তকারী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
মামলার যাবতীয় নথিসহ আগামী ১৫ এপ্রিল তাকে হাইকোর্টে সশরীরে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই মামলার আসামি আবুল কালাম আবুকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ নির্দেশ দেন। নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার আসামি আবুল কালাম আবুর জামিন আবেদনের ওপর শুনানিকালে আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
গতবছর ১৪ ডিসেম্বর আবুল কালাম আবুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি বিচারিক আদালত তার জামিন আবেদন খারিজ করলে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
পুঠিয়া সড়ক পরিবহণ মটর শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে বিরোধের জের ধরে খুন হন শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম। ২০১৯ সালের ১১ জুন সকালে পুঠিয়ার কাঁঠালবাড়িয়া এলাকার এসএস ব্রিক ফিল্ড’ নামক ইটভাটা থেকে নুরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে নিগার সুলতানা থানায় এজাহার দাখিল করেন।
কিন্তু তার এজাহার গ্রহন না করে তার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এরপর কয়েকদিন থানা থেকে কোনো তৎপরতা না দেখে নিহতের স্ত্রী সাজেদা বেগম পুঠিয়া উপজেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে নালিশী মামলা করেন। এই মামলায় শুনানিকালে পুঠিয়া থানা থেকে নিগার সুলতানার স্বাক্ষর করা একটি এজাহার হাজির করে থানা পুলিশ।
তাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি দেখানো হয়। ওই এজাহারে সন্দেহজনক হিসেবে ৫ জনের নাম বলা হয়। এই এজাহারের বিষয়ে তখনই নিগার সুলতানা ও তার মা সাজেদা বেগম আপত্তি জানিয়ে বলেন, এই এজাহার তাদের নয়।
পরবর্তীতে নিহত নুরুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই আইজি, রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি ও রাজশাহীর এসপির কাছে এজাহার বদলে ফেলার অভিযোগ দাখিল করে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। এ অবস্থায় হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।
এ রিট আবেদনে হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশে অভিযোগ তদন্ত করে ওসি সাকিলসহ ৫ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন রাজশাহীর মূখ্য মহানগর হাকিম মো. মেহেদী হাসান তালুকদার।
এই প্রতিবেদন ওইবছরের ৬ নভেম্বর হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এই প্রতিবেদনের ওপর ২০১৯ সালের পহেলা ডিসেম্বর শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্ট।
পরবর্তীতে পুটিয়ার সাবেক সাকিলের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।