লাকসাম উপজেলার কনকশ্রী গ্রামের সাকেরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ড মাথায় নিয়ে সাড়ে ১৪ বছর ধরে কনডেম সেলে থাকা হুমায়ুন কবির নামের এক আসামিকে খালাস দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ মঙ্গলবার এক রায়ে মামলার একমাত্র আসামিকে খালাস দেন। আসামিপক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এবিএম বায়েজিদ। রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
অ্যাডভোকেট এবিএম বায়েজিদ সাংবাদিকদের জানান, নিহত শিশুটির ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির মিল নেই। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুটির মাথার খুলি ভাঙা ছিল।
আর আসামির দেওয়া জবানবন্দিতে বলা হয়েছে, শিশুটির মুখ চেপে ধরে স্বাশরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া এ মামলায় শিশুটির পিতাসহ ১২ জনের দেওয়া সাক্ষ্যে গরমিল থাকায় আদালত আসামিকে খালাস দিয়েছেন।
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার কনকশ্রী গ্রামের সাকেরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ২০০৪ সালের ৩০ জুন বিদ্যালয়ে যাবার পথে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় শিশুটির চাচা মো. জসিমউদ্দিন লাকসাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এরপর ওই বছরের ২ জুলাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়। দুইদিন পর ৪ জুলাই ট্রাক চালক হুমায়ুন কবিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওইদিনই একই গ্রামের মাস্টার বাড়ির কালবার্ডের পাশে জঙ্গল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
হুমায়ুন কবিরকে একমাত্র আসামি দেখিয়ে পুলিশ ওইবছরের ২৯ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র দাখিল করে।
চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল হুমায়ুন কবিরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ২০০৬ সালের ৫ এপ্রিল রায় দেয়। এ রায় অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। একইসঙ্গে কারাবন্দি হুমায়ুন কবির এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন।
উভয় আবেদনের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০১২ সালের ২২ ফেব্র“য়ারি রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে জেল আপিল করেন হুমায়ুন কবির। এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গতকাল তাকে খালাস দিয়ে রায় দেন আপিল বিভাগ।