কৃষি জমিতে বাংলাদেশের হিন্দু বিধবা নারীদের আইনগত অধিকার দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, দেশে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী স্বামীর রেখে যাওয়া কৃষি জমিতে তার বিধবা স্ত্রী অধিকারের দাবিদার।
বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীর একক হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় ঘোষণা করেছেন। খুলনার বটিয়াঘাটার জ্যোতিন্দ্র নাথ মন্ডলের করা আবদেন খারিজ করে এ ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালতে আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল জব্বার। বিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নাফিউল ইসলাম।
আদালতে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) হিসেবে অভিমত প্রদানকারী আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার উজ্জল ভৌমিক।
ব্যারিস্টার উজ্জল ভৌমিক বলেছেন, এটা একটি ঐতিহাসিক রায়। এই রায়ের ফলে বাংলাদেশের হিন্দু বিধবা নারীরা জীবদ্দশায় (জীবনস্বত্ব) তার স্বামীর রেখে যাওয়া কৃষি জমি ভোগদখল করতে পারবেন।
এতদিন বিধবা নারীরা শুধুমাত্র অকৃষি জমির অধিকারী ছিলেন। এখন স্বামীর সব সম্পতিতে বিধবা নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
খুলনার বটিয়াঘাটার হালিয়া গ্রামের অভিমন্য মন্ডল মারা যাবার পর তার রেখে যাওয়া কৃষি জমি তার বিধবা স্ত্রী গৌরী দাসীর নামে রেকর্ড হয়।
এই রেকর্ড সংশোধনের জন্য ১৯৯৬ সালে খুলনার সহকারি জজ আদালতে মামলা করেন গৌরী দাসীর দেবর জ্যোতিন্দ্র নাথ মন্ডল। আদালত ওই বছরের ৩০ মে তার আবেদন খারিজ করে দেয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে খুলনার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে আপিল করেন জ্যোতিন্দ্র নাথ মন্ডল। ওই আদালত ২০০৪ সালের ৭ মার্চ জ্যোতিন্দ্র নাথ মন্ডলের আবেদন খারিজ করে দেন।
হাইকোর্টে আবেদন করেন ২০০৪ সালেই। এই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বুধবার তা খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট। এই রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, দেশে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী স্বামীর রেখে যাওয়া কৃষি জমিতে তার বিধবা স্ত্রী অধিকারের দাবিদার।