বরগুনা থেকে ট্রাকযোগে মালামাল নিয়ে বগুড়া আসার পর আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে অপহরণের শিকার হয় চালক ইমরান ও মালিক রিমন ফরাজি। সেখানে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে একটি ছাত্রাবাসে আটকে রাখা অবস্থায় উপস্থিত বুদ্ধির জোরে বেঁচে যান তারা। মঙ্গলবার সকালে জরুরী সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পুলিশ দুজন চাঁদাবাজকে আটক ও অপহৃতদের উদ্ধার করে।
আটক হওয়া দুজনের মধ্যে শহরের হাড্ডিপট্টি এলাকার মজিবর রহমানের পুত্র সোহাগ সরকার (৩৮) ও দুপচাচিয়া উপজেলার নজরুল ইসলামের পুত্র শাহিনুর রহমান (৩৩)। বগুড়া শহরের জহুরুলনগর এলাকার বেলালের ছাত্রাবাস থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
বরগুনা থেকে একটি মিনি ট্রাকে করে মালামাল নিয়ে চালক ইমরান ও মালিক রিমন ফরাজি সোমবার সকালে বগুড়া শহরের চারমাথা এলাকায় আসে। সেখানে তারা মালামালগুলো বুঝিয়ে দেওয়ার পর রিমন তার আত্মীয় সবুজ নামের একজনকে ফোন দেয়। পরে সবুজ চারমাথা এসে ট্রাকসহ তাদেরকে নিয়ে পালশা এলাকায় তার বন্ধু সবুজের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তারা খাওয়া দাওয়া করার পর রেস্ট নিচ্ছিল। সন্ধ্যায় পালশা এলাকায় পারভেজের বাড়িতে পাওনা টাকা চাইতে আসে সেই এলাকার জিসান ও খলিল নামের দুই যুবক। তারা বাড়িতে বাইরের অতিথি দেখে ফন্দি আটে অপহরণ করে মোটা টাকা আদায়ের।
সোমবার সন্ধ্যায় রিমন, ইমরান ও সবুজকে অপহরণ করে শহরের জহুরুল নগর এলাকায় অবস্থিত বেলালের ছাত্রাবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এসে যোগ দেয় তুফান সরকারের বড় ভাই সোহাগ সরকার ও শাহিনুর রহমান। তারা বরগুনার ট্রাকচালক ও মালিককে মারপিট করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। একই সঙ্গে পালশা এলাকা থেকে তাদের মিনি ট্রাকটিও অন্য একটি গ্যারেজে আটক করে রাখে।
রাত গভীর হলে বাথরুমে যাওয়ারর কথা বলে ট্রাক মালিক রিমন ওই ছাত্রাবাস থেকে পালিয়ে পাশের একটি জঙ্গলের পাশে লুকিয়ে থাকে। এরপর মঙ্গলবার সকাল ৭টায় সে তার মোবাইল থেকে ৯৯৯-এর জরুরী সেবায় ফোন দিয়ে ঘটনাটি জানায়। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌঁছে রিমনকে সঙ্গে নিয়ে ওই ছাত্রবাসে অভিযান চালায়। সেখান থেকে অপহৃতদের উদ্ধার ও ২ জনকে আটক করে নিয়ে আসা হয়। অপহরণকারীদলের অন্য সদস্যরা পুলিশ দেখে পালিয়ে যায়।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, আটক দুজনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।