পাবনা পৌর এলাকায় চব্বিশ ঘন্টার ব্যববধানে দুইজন খুন হয়েছে। এর মধ্যে একজন কিশোর অপরজন শিশু। তবে এই দুটি হত্যাকান্ডেই বন্ধুর হাতে খুন হয়েছে বন্ধু।
হত্যাকান্ডের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত হত্যাকারীদের ইতিমধ্যে গ্রেফতার করছে পুলিশ।
প্রথম পর্যায়ে দুটি হত্যাকান্ডের ঘটনায় কারো নাম পরিচয় প্রথম দিকে নিশ্চিত করতে না পরলেও ফেসবুকে ছবি দেখে পরিবারের লোকজন নিশ্চিত করতে পারে এবং পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে মৃতদেহ সনাক্ত করেছে তারা।
এদিকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও কিশোর অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন সমাজ কর্মী ও রাজনীতিবিদরা।
প্রথম হত্যাকান্ডের শিকার হন পাবনা পৌর শহরের মন্ডলপাড়া এলাকার সুজন হোসেনের ছেলে কলেজ শিক্ষার্থী আকাশ হোসেন (২২) ও দ্বিতীয় হত্যাকান্ডের শিকার হন দক্ষিন রামচন্দ্রপুর এলাকার দিনমুজুর রিপন মিঞার ছেলে সোহান মিঞা (১৩)।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে হত্যাকান্ডের বিষয় জানা যায়, প্রথম হত্যাকান্ডটি শহরের মন্ডল পাড়ায় বন্ধুদের মধ্যে মোবাইল কেনা বেচাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত।
তিন বন্ধু একত্রিত হয়ে আকাশকে ধারালো অস্ত্রদিয়ে মাথায় আঘাত করে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আকাশের মৃত্যু হয়।
পুলিশ বলছে আকাশকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পরে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে একই এলাকার মিজান মন্ডলের ছেলে আকাশ মন্ডল (২২), আইনাল হোসেনের ছেলে বাপ্পি হোসেন (২০), আব্দুস সামাদের ছেলে হৃদয় আহম্মেদ (১৯) কে ঐ এলাকার নিজ নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ।
অপর দিকে শহরের কাঁচারিপাড়া মহল্লার জিসিআই স্কুলের মাঠে আম গাছের নিচ থেকে গতকাল সোহান মিঞা নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সোহান পাবনা পৌর এলাকার দক্ষিন রামচন্দ্রপুর এলাকার মাছ ব্যবসায়ী রিপন মিঞার ছেলে।
সংসারের অভাবের কারনে দিনমুজুর বাবা ছেলেটিকে বাজারে মাছের দোকানে কাজে লাগিয়ে দেয়।
সোমবার (১১ মে) কাজে না গিয়ে সকালে বাসা থেকে বের হয়ে বন্ধুদের সাথে পাশবর্তী জিসিআই স্কুলের মধ্যে আম খেতে প্রবেশ করে। চার বন্ধুর মধ্যে আম ভাগাভাগি নিয়ে ঝামেলা হলে আম কাটার ছুড়ি দিয়ে গলায় আঘাত করে এক বন্ধু।
শ্বাসনালী কেটে গেলে ঘটনা স্থলে মৃত্যু হয় শিশু সোহানের। অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে রেখে পালিয়ে যায় অপর তিনি বন্ধু। (অপরাধী এই তিন শিশুর নাম পরিচয় দেয়া হলো না)।
তবে এই দুটি ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত হত্যাকারীরা প্রাথমিক পর্যায়ে হত্যাকান্ডের ঘটনার কথা স্বীকার করেছে পুলিশের কাছে।
ঘটনার বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাসিম আহম্মেদ বলেন, দুটি ঘটনাকে আমরা খুব গুরত্ব সহকারে নিয়েছি। প্রথম পর্যায়ে দুটি হত্যাকান্ডের মৃত ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত করতে সমস্যা হয়েছে। এই ক্ষেত্রে সোশাল মিডিয়ার সহযোগিতা নিয়েছি।
পরে সিসিটিভির ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে উভয় খুনের সাথে সম্পৃক্ত হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতর কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (১২ মে) আইনগত পক্রিয়া শেষে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এই বিষয়ে পাবনা জেলা পুলিশের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, বিষটি কিশোর গ্যাং বা কিশোর অপরাধ বৃদ্ধি পাওয়ামত ঘটনা নয়।