উগ্রপন্থী ইসলামি বক্তা আলি হাসান উসামার নির্দেশে সংসদ ভবনে তলোয়ার নিয়ে হামলার পরিকল্পনা করেছিল আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য আল সাকিব। এই হামলার জন্য সাকিবকে মোট ৩১৩ জন সদস্যকে একত্রিত করার নির্দেশনা দেয় উসামা। বদর যুদ্ধের আদলে এই হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল সে। এজন্য ফেসবুকে গোপন একটি গ্রুপও খোলা হয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সাকিব কয়েকজন সহযোগীসহ সংসদ ভবন এলাকায়ও গিয়েছিল। তাদের সঙ্গে ছিল ধারালো অস্ত্র। উদ্দেশ্য ছিল সংসদ ভবনে ঢুকতে বাঁধাদানকারী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর প্রথমে হামলা করা হবে। যদি এতে তারা জয়লাভ করে, তাহলে সংসদ ভবনে প্রবেশ করবে।
কিন্তু গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে আগে থেকেই বিষয়টি জানতে পেরে আল সাকিবকে বুধবার (৫ মে) রাত ৮টার দিকে সংসদ ভবন এলাকার মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে ধারালো অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার সহযোগী কয়েকজন পালিয়ে যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাকিবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাতেই অভিযান চালিয়ে রাজবাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয় উগ্রবাদ ছড়ানো ইসলামি বক্তা আলি হাসান উসামাকে।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সূত্র জানায়, রাহমানী কারাগারে থাকায় তার নতুন কোনও ওয়াজ বা বক্তব্যের প্রচারণা বন্ধ হয়ে গেছে। গত কয়েক বছর ধরে আলি হাসান উসামাকে ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে মেনে আসছিল আনসার আল ইসলামের নেতাকর্মীরা। উসামাই বদর যুদ্ধের আদলে ৩১৩ জনকে নিয়ে সাবিকবে সংসদ ভবনে হামলার নির্দেশনা দেয়। ১৭তম রমজানে বদর যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। যেই যুদ্ধে ৩১৩ জন সাহাবি অংশ নিয়েছিলেন।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, তারা উসামা ও সাকিবের ভার্চুয়াল যোগাযোগের কিছু তথ্য পেয়েছেন। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করছেন তারা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আল সাকিবও উসামার নির্দেশনায় হামলায় অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে।
সংশ্লিস্ট সূত্র জানায়, সিলেটের বাসিন্দা আলি হাসান উসামা রাজবাড়ী জেলায় একটি মাদ্রাসা তৈরি করে সেখানেই বসবাস করে আসছিল। রাজবাড়ী থেকেই বিভিন্ন ওয়াজে কথিত জিহাদের ডাক দেওয়ার পাশাপাশি ইউটিউবে উগ্রবাদী মতাদর্শ ছড়াতো। উসামা যে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছে, সেই মাদ্রাসার উপদেষ্টা হলেন— মুফতি হারুন ইজহার ও মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুণভী। তাদের দু’জনের বিরুদ্ধেও জঙ্গিবাদে মদদ, সম্পৃক্ততা ও উগ্রবাদী প্রচারণা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি চট্টগ্রামে নিজ মাদ্রাসা থেকে হারুন ইজহারকে গ্রেফতার করে এলিট ফোর্স র্যাব।