ঈশাত জামান মুন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার সোহেলের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পরেন সুইটি (ছদ্মনাম)। এরপর তাকে কৌশলেই ভারতীয় পাচারকারীর হাতে তুলে দেন সোহেল। ভারতে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাকে একাধিকবার পাচারদলের সদস্যরা ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেছেন ওই নারী।
এ ঘটনায় পাটগ্রাম থানা পুলিশ শনিবার (২১) দিনভর অভিযান চালিয়ে পাচারকারীদলের সদস্য আশরাফুল ইসলাম, মোকছেদুল ইসলাম , চম্পা বেগম নামে এক নারী সহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছেন।
রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেন পাটগ্রাম থানার ওসি ওমর ফারুক। তিনি বলেন, এ ঘটনার মুল হোতা সোহেল মিয়া হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়ার পুত্র। তাকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ৩ বছরে পূর্বে টিকটক করতে গিয়ে পরিচয় ও প্রেম হয় তাদের। তারপর প্রেমিক সোহেল ও সুইটি (ছদ্মনাম) অবৈধ ভাবে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। সেখানে প্রেমিকা সুইটিকে দিয়ে জোর পূর্বক দেহ ব্যবসা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সুইটি বিষয়টি বুঝতে পেয়ে সোহেলের সাথে ঝগড়া করেন। পরে ৮/৯ মাস পর ভারতের কলকাতা থেকে কৌশলে একই পথে দেশে পালিয়ে আসে প্রেমিকা সুইটি । কিছুদিন পর দেশে আসেন সোহেল। অনেক বুঝিয়ে সুইটিকে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ আদালতে বিয়ে করেন সোহেল। কিছুদিন পর ওই নারী গর্ভবতী হন।
তবে আবারও প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করেন সোহেল। তাকে পাচারের জন্য আবারও পাচারকারীদের সাথে যোগাযোগ করে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে পাঠিয়ে দেয় স্বামী সোহেল।
গত ১৩ মে ভোরে পাচারকারীরা তাকে ওই উপজেলার দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে দেয়। এ সময় সুইটিকে ধর্ষণ করেন ওই পাচারচক্র দলের সদস্য মোকছেদুল। সুইটি ভারতে প্রবেশের পর বুঝতে পারেন তার স্বামী তাকে পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।
১৫ মে রাতে আবারও কৌশলে দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরে আসেন সুইটি। দেশে ফেরার পর এবার আশরাফুল ইসলাম নামে অপর এক পাচারকারী দলের সদস্য তাকে ধর্ষণ করেন।
এরপর টাকার জন্য ওই নারীকে ১৫ মে থেকে আটকিয়ে রাখেন পাচারচক্রের সদস্যরা। সেখান থেকে কোনরকমে পালিয়ে পাটগ্রাম থানায় আশ্রয় গ্রহণ করেন সুইটি।