১৯০৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাইটস ভ্রাতৃদ্বয় বিশ্বের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সফলভাবে বিমান করে আকাশে উড়িয়ে বিশ্বকে চমকে দিলেও যুদ্ধক্ষেত্রে বিশ্ব ইতিহাসে প্রথম বারের মতো যুদ্ধবিমান ব্যবহারের গৌরবটি অর্জন করে কিন্তু ইউরোপের দেশ ইতালী। আসলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে তুর্কী-ইতালী যুদ্ধ চলাকালে ১৯১১ সালের ১ নভেম্বর ইতালীয় বিমান বাহিনীর একটি ছোট্ট ইটরিচ তাওবে (Etrich Taube) বিমান থেকে লিবিয়ার আকাশ থেকে তুর্কী বাহিনীর সেনা ঘাঁটিতে বোমা হামলার মাধ্যমে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে যুদ্ধক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করে। অথচ আর আগে বিশ্ববাসী জানতই না যে যুদ্ধক্ষেত্রে বিমান ব্যবহার করা যায়।
কার্যত ইতালিয়ান বিমান বাহিনীর লেফটেনেন্ট পদবীর একজন পাইলটের নাম তার জুলিও গ্যাভোত্তি, তিনি লিবিয়ার ত্রিপোলির আকাশে বিমান উড়িয়ে তার সাথে থাকা একটি চামড়ার ব্যাগে করে ৪টি হ্যান্ড গ্রেনেড বহন করে নিয়ে যান এবং ত্রিপলীর আইন জারাতে অবস্থিত অটোমান সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে এই গ্রেনেডগুলো হাতে করে নিক্ষেপ করে যুদ্ধক্ষেত্রে বিমান হামলার এই নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করেন।
সেই বিমান হামলায় কোন সেনা আহত কিংবা নিহত হয়েছিল কিনা তা নিয়ে যথেষ্ঠ বিতর্ক থাকলেও ইতালীয় বৈমানিক জুলিও গ্যাভোত্তি হচ্ছেন বিশ্বের প্রথম কোন যুদ্ধবিমানের পাইলট। আবার আশ্চর্যের বিষয় যুদ্ধের ইতিহাসে প্রথম কোন যুদ্ধবিমান ধ্বংসের প্রথম রেকর্ডটিও সৃষ্টি হয়েছিল তুর্কী-ইতালী যুদ্ধ চলাকালেই।
ইতালীয় বাহিনীর বিমান হামলা কিংবা নজরদারীর সময় অটোমান সেনাবাহিনী ১৯১২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, তবরুক্বের আকাশে সরাসরি রাইফেলের গুলিতে প্রথম কোন যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে যুদ্ধবিমান ধ্বংসের আরেক নতুন ইতিহাস বা প্রথম রেকর্ড গড়ে। আর যা কিনা আধুনিক কালে সারফেস টু এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের সফল ব্যবহারের প্রথম যুগ বলা চলে।
সিরাজুর রহমান