উত্তর কোরিয়ার কিম বাহিনী আবারো জাপান সাগরে স্বল্প পাল্লার ব্যালেস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে। মুলত গত শনিবার সকালে উত্তর কোরিয়া পিয়ংইয়ং থেকে এই প্রজেক্টাইলগুলো জাপান সাগরে ছুঁড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী। আর যেখানে সারা বিশ্ব প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের মরণ থাবায় বিপর্যস্ত ঠিক সেই মুহুর্তে উত্তর কোরিয়ার কীম বাহিনীর ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষার যৌক্তিকতা কিন্তু বেশ প্রশ্ন সাপেক্ষ।
যা হোক এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষার মাধম্যে কীম আসলে নিজেকে এবং নিজের দেশকে বৈশ্বিক পর্যায়ে আলোচনার শীর্ষে রাখতে চাচ্ছেন এবং এমন অপপ্রচার, প্রপাগাণ্ডা কিম্বা কৌশল কীম জন উন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিরামহীনভাবে চলিয়ে আসছেন। তার পাশাপাশি তারা বুঝাতে চাচ্ছে যে, উত্তর কোরিয়া করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় অনেক সফল কিম্বা সে দেশে করোনা ভাইরাস কোন প্রভাবই বিস্তার করতে পারেনি। কিন্তু বাস্তবতা হলো যে, উত্তর কোরিয়ার শিশুদের ৮০% পর্যন্ত সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন কিম্বা কৃমিনাশক ওষুধ পায় না এবং তার পাশাপাশি সারা বছর ব্যাপী চরম মাত্রায় খাদ্য ঘাটতি এবং সরবরাহের বিষয়টি বিশ্ব সমাজের কাছে আর অজানা কোন বিষয় নয়। এমনকি সেখানে জ্বর, সর্দি, কাশির মতো অসুখে দেশের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা এবং পর্যাপ্ত ঔষধ পাওয়াটা কিছু শহর ব্যাতিত বেশ কঠিন একটি বিষয়। তাছাড়া সরকারিভাবে মিডিয়া নিয়ন্ত্রিত দেশটিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কোন সংবাদ মাধ্যম এবং দেশব্যাপী ইন্টারনেট সেবা না থাকায় উত্তর কোরিয়ায় বর্তমানে করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় কি পরিমাণ মানুষ আক্রান্ত কিম্বা মৃত্যুবরণ করেছেন সে বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য জানার সুযোগ আছে বলে মনে হয় না।
তবে উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর হাতে থাকা বিভিন্ন পাল্লার মিসাইলের তালিকা এবং রেঞ্জের বিষয়টি স্বল্প পরিসরে তুলে ধরলাম। উত্তর কোরিয়ার হাতে থাকা স্বল্প পাল্লার কেএন-২৩ মিসাইলের পাল্লা ৪৫০ কিলোমিটার, কেএন-১১ মিসাইলের পাল্লা ১,২০০ কিলোমিটার, নুডং মিসাইলের পাল্লা ১,৫০০ কিলোমিটার, সাবমেরিন লাউঞ্চ বেসড পুকুকসং-৩ ব্যালেস্টিক মিসাইলের পাল্লা ১,৯০০ কিলোমিটার, মাসুদান ব্যালেস্টিক মিসাইলের পাল্লা ৪,০০০ কিলোমিটার, হোয়াসং-১২ নিউক ক্যাপবল মিসাইলের পাল্লা ৪,৫০০ কিলোমিটার, নিউক ক্যাপবল হোয়াসং-১২ ব্যালেস্টিক মিসাইলের পাল্লা ১০,০০০ কিলোমিটার, কেএন-১৪ ব্যালেস্টিক মিসাইলের পাল্লা ১০,০০০ কিলোমিটার এবং হোয়াসং-১৫ লং রেঞ্জের নিউক ওয়ারহেড ক্যাপবল ব্যালেস্টিক মিসাইলের পাল্লা ১৩,০০০ কিলোমিটার। যা কিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখন্ডে সরাসরি আঘাত হানতে সক্ষম।
তাছাড়া খুব সম্ভবত উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র ভাণ্ডারে থাকা কেএন-১৪ এবং কেএন-৮ মিসাইলটিকে এখনো প্রকাশ্যে আনা হয় নি কিম্বা এর কোন পরীক্ষা করা হয়নি। তবে মনে করা হয়, প্রযুক্তিগত মান যাই হোক না কেন, এ মুহুর্তে উত্তর কোরিয়ার কীম বাহিনীর হাতে আনুমানিক ২০-৩০টি স্বল্প কিলোটন সক্ষমতার নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড থাকার পাশাপাশি এক হাজারের কাছাকাছি বিভিন্ন পাল্লার ব্যালেস্টিক এবং ক্রুজ মিসাইলের বিশাল মজতু গড়ে তুলেছে দেশটি।