ক্রুজ, ব্যালেস্টিক কিম্বা ইন্টারকন্টিন্যাটাল ব্যালেস্টিক মিসাইলের ওয়ারহেড কার্যত একটি উচ্চ মাত্রায় ধ্বংস ক্ষমতা সম্পন্ন এক্সপ্লুসিভ অর টক্সিন নির্ভর একটি বিষাক্ত ডিভাইস। যা সুনিদিষ্টভাবে একটি ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট কিম্বা টর্পেডোতে ব্যবহারের উপযোগী করে বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়ে থাকে।
এখানে প্রকাশ যোগ্য যে, ওয়ারহেড শুধুমাত্র কনভেনশনাল বা প্রচলিত এক্সপ্লুসিভ এজেন্ট ব্যবহার করে তৈরি হবে বিষয়টি তা কিন্তু নয়। বরং মিসাইল ওয়ারহেড যুদ্ধে তার ধ্বংস বা প্রয়োগের মাত্রা অনুযায়ী কনভেনশনাল ওয়ারহেড এবং জটিল প্রযুক্তির নিউক্লিয়ার এণ্ড থার্মোনিউক্লিয়ার ওপেন্সের উপযোগী করে ওয়ারহেড ডিজাইন করা হয়ে থাকে।
সাধারণত সর্ট রেঞ্জের মিসাইল কিম্বা জেট ইঞ্জিন চালিত ক্রুজ মিসাইলে সিঙ্গেল ওয়ারহেড এবং ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জেস ব্যালেস্টিক মিসাইলে একটি থেকে তিনটি কনভেনশনাল কিংবা নিউক ওয়ারহেড ইন্সটল করার উপযোগী করে ডিজাইন করা হয়ে থাকে।
তবে বর্তমান সময়ে সলিড এণ্ড লিকুইড ফুয়েল চালিত দূর পাল্লার হেভী ইন্টারকন্টিন্যানটাল ব্যালেস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম) এ তিন থেকে দশটি পর্যন্ত মাল্টিপল ইন্ডিপেন্ডেন্টলী টার্গেটেবল রি-এন্ট্রি ভেহিকলস (এমআইআরভি) প্রযুক্তির নিউক্লিয়ার এণ্ড থার্মো নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড ইন্সটল করা থাকে। আর এসব ইন্টারকন্টিন্যানট্যাল ব্যালেস্টিক মিসাইল বা (আইসিবিএম) এ ব্যবহৃত ওয়ারহেডগুলো অতি উচ্চ মাত্রায় ১০ থেকে ৪৫০ কিলোটন কিম্বা প্রতিটি নিউক ওয়ারহেড ১ থেকে ৫ মেগাটন ধ্বংস ক্ষমতা সম্পন্ন করে ডিজাইন করা হয়ে থাকতে পারে।
যদিও ইন্টারকন্টিন্যানট্যাল ব্যালেস্টিক মিসাইল ডিজাইন এবং উৎপাদনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১০ হাজার কিলোমিটার পাল্লার মিনিটম্যান-২/৩ অর সাবমেরিন বেসড ট্রাইডান্ট-৫ এর মতো বিশাল আকারের এবং অতি ভয়ঙ্কর ব্যালেস্টিক মিসাইল তৈরিতে প্রযুক্তিগতভাবে ব্যাপক অগ্রগতি লাভ করলেও বাস্তবে সারা বিশ্বের মধ্যে পুতিনের দেশ রাশিয়া ব্যালেস্টিক মিসাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এণ্ড ডেভলপমেন্টে সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে এবং তাদের আরএস-২৮ (আইসিবিএম) এবং হাইপারসনিক এভেনগার্ড মিসাইল সিস্টেমের টার্মিনাল ফেজে প্রায় ২০-২২ ম্যাক গতি নিয়ে শত্রুর সুনিদিষ্ট্য লক্ষ্যবস্তুকে হীট করতে সক্ষম বলে জানিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বিশেষজ্ঞরা।
আসলে সভিয়েত যুগের সাইলো বেসড ১০টি ওয়ারহেড সমৃদ্ধ এবং ১৩ হাজার কিলোমিটার পাল্লার রাশিয়ার আরএস-৩৬কে কোল্ড ওয়ার চলাকালীন সময়ে মার্কিন ও তার ন্যাটো জোট জমের মতো ভয় করত। তাছাড়া ১০টি নতুন প্রজন্মের মাল্টিপল ইন্ডিপেন্ডেন্টলী টার্গেটেবল রি-এন্ট্রি ভিকলস প্রযুক্তির নিউক্লিয়ার এণ্ড থার্মো নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড সমৃদ্ধ আরএস-২৮ সারমাত কে এ মুহুর্তে বিশ্বের প্রথম সারির আইসিবিএম বলে বিবেচনা করা হয়।
তাছাড়া চীনের রয়েছে মোবাইল লাউঞ্চ বেসড ১৬ হাজার কিলোমিটার পাল্লার ডিএফ-৪১ আইসিবিএম। তাছাড়া চীনের কাউন্টার হিসেবে ভারত তাদের নিজস্ব প্রযুক্তির ৫৫০০-৮০০০ কিলোমিটার পাল্লার নতুন প্রজন্মের মাল্টিপল ইন্ডিপেন্ডেন্টলী টার্গেটেবল রি-এন্ট্রি ভিকলস (এমআইআরভি) প্রযুক্তির নিউক্লিয়ার এণ্ড থার্মো নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড সমৃদ্ধ অগ্নি-৫/৬ ব্যালেস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম) ডেভলপমেন্টে এণ্ড ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্ট নিয়ে ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।