সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও ভারতের মধ্যকার লাদাখ ও সিকিম সামরিক উত্তেজনা দেখা দেয়। উভয় দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর পর দুই দেশই সীমান্তে সেনা সমাবেশ করে। এমনকি চীন যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে বলে স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা যায়। এ নিয়ে সীমান্তে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়ারও নির্দেশ দেন।
china and indian security forces
হিমালয় সীমান্তে চীন ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী
পরিস্থিতি এতদূর গড়ায় যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা করার প্রস্তাব দেন। তবে সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, চীন আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানা গেছে।
কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী এই দুটি দেশের কার সামরিক শক্তি কতখানি? সামরিক শক্তিতে কোন দেশই বা এগিয়ে? গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ডটকম অবলম্বনে দুই দেশের সামরিক অবস্থানের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরা হলো-
চীনা সেনাবাহিনী
পিআরডব্লিউ ব়্যাঙ্কিং
সামরিক শক্তির এই ব়্যাঙ্কিংয়ে ভারতের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে আছে চীন৷ র্যাঙ্কিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার ঠিক পরই রয়েছে চীনের নাম। আর তার পর অর্থাৎ চার নম্বরে রয়েছে ভারতের নাম।
সক্রিয় সেনাসদস্য
সেনা সদস্যের সংখ্যার দিক থেকে ১৩৮টি দেশের পিআরডব্লিউ ইনডেক্সে তৃতীয় স্থানে আছে চীন। সেখানে দেশটির সক্রিয় সেনা সদস্য ২১ লক্ষ ২৩ হাজার বল উল্লেখ করা হয়েছে। আর ভারতের সেনা সদস্যের সংখ্যা বলা হয়েছে ১৪ লক্ষ ৪৪ হাজার। তবে রিজার্ভ সৈন্যের সংখ্যার দিক থেকে চীনের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে ভারত। অর্থাৎ ভারতের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২১ লাখ৷ বিপরীতে চীনের রয়েছে ৫ লাখ ১০ হাজার রিজার্ভ সৈন্য।
ভারতীয় সেনাবাহিনী
প্রতিরক্ষা বাজেট
তবে প্রতিরক্ষা খাতের বাজেটে ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে চীন। অর্থাৎ চীনের প্রতিরক্ষা বাজেট ২৩৭০ কোটি ডলার, আর ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট ৬১০ কোটি ডলারের৷
এয়ারক্রাফট
এক্ষেত্রেও ভারতের চেয়ে এগিয়ে আছে চীন। ভারতের রয়েছে ২১২৩টি এয়ারক্রাফট। আর চীনের রয়েছে ৩২১০টি এয়ারক্রাফট।
যুদ্ধজাহাজ
চীনের যুদ্ধজাহাজ রয়েছে ৭৭৭টি। আর ভারতের রয়েছে ২৮৫টি যুদ্ধজাহাজ৷
যুদ্ধবিমান
চীনের যে যুদ্ধবিমান রয়েছে তা ভারতের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি৷ অর্থাৎ চীনের ১২৩২টি যুদ্ধবিমানের বিপরীতে ভারতের রয়েছে ৫৩৮টি যুদ্ধবিমান৷
হেলিকপ্টার
চীনের হেলিকপ্টার আছে ৯১১টি, আর ভারতের রয়েছে ৭২২টি৷
ট্যাঙ্ক
ট্যাঙ্কের সংখ্যার দিক থেকে চীনের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে ভারত। দেশটির ট্যাঙ্কের সংখ্যা ৪২৯২টি। আর চীনের ট্যাঙ্ক রয়েছে ৩৫০০টি।
স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি
এক্ষেত্রে চীন ও ভারতের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য। কারণ চীনের যেখানে স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি আছে ৩৮০০। সেখানে ভারতের রয়েছে মাত্র ২৩৫টি৷
ফিল্ড আর্টিলারি
এদিক থেকে ভারত খানিকটা এগিয়ে রয়েছে। অর্থাৎ চীনের ৩৮০০ ফিল্ড আর্টিলারির বিপরীতে ভারতের রয়েছে ৪০৬০টি।
রকেট প্রজেক্টর
এক্ষেত্রে চীন ভারতের চেয়ে প্রায় দশগুণ এগিয়ে রয়েছে। অর্থাৎ চীনের ২৬৫০টি রকেট প্রজেক্টরের বিপরীতে ভারতের রয়েছে ২৬৬টি৷
সাবমেরিন
সাবমেরিনের সংখ্যার দিক থেকেও চীন থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে ভারত। চীনের সাবমেরিন রয়েছে ৭৪টি। বিপরীতে ভারতের আছে ১৬টি।
বিমানবাহী জাহাজ
এক্ষেত্রেও চীন এগিয়ে। অর্থাৎ চীনের দুটি বিমানবাহী জাহাজের বিপরীতে ভারতের আছে একটি৷
ডেস্ট্রয়ার
চীনের ডেস্ট্রয়ার আছে ৩৬টি। বিপরীতে ভারতের আছে ১০টি৷
ফ্রিগেট
চীনের ফ্রিগেটের তুলনায় ভারতের রয়েছে চার ভাগের এক ভাগ। অর্থাৎ চীনের ফ্রিগেট রয়েছে ৫২টি। আর ভারতের আছে ১৩টি৷
রণতরী
এক্ষেত্রেও চীন ভারতের চেয়ে অনেক এগিয়ে। চীনের রণতরীর সংখ্যা ৫০টি, আর ভারতের আছে ১৯টি৷
উপকূলীয় টহল
এক্ষেত্রে চীন ভারতের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ এগিয়ে রয়েছে। অর্থাৎ চীনের উপকূলীয় টহল রয়েছে ২২০টি। আর ভারতের রয়েছে ১৩৯টি৷
বিমানবন্দর
চীনের বিমানবন্দর আছে মোট ৫০৭টি। আর ভারতের রয়েছে ৩৪৭টি৷
নৌবন্দর ও টার্মিনাল
এক্ষেত্রেও এগিয়ে রয়েছে চীন। দেশটির ২২টি নৌবন্দর ও টার্মিনাল রয়েছে। বিপরীতে ভারতের রয়েছে মোট ১৩টি বন্দর ও টার্মিনাল৷