সিরাজুর রহমান: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী নতুন করে ৮টি পঞ্চম প্রজন্মের এফ-৩৫এ স্টিলথ জেট ফাইটার পেতে যাচ্ছে। যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৬২ মিলিয়ন ডলার এবং যা কিনা প্রাথমিকভাবে তুরস্কের নিজস্ব চাহিদা মাফিক কাস্টমাইজড করে তৈরি করা হয়েছিল।
আর মার্কিন লকহীড মার্টিন কর্পোরেশন বছর খানেক আগেই তুরস্কের বেশ কিছু পাইলটের প্রশিক্ষণ শুরু করলেও রাশিয়া থেকে এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ক্রয়ের শাস্তি স্বরুপ ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশে পরবর্তীতে তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয় লকহীড মার্টিন কর্পোরেশন। ইউএস এয়ার ফোর্সকে এই নতুন ৮টি এফ-৩৫এ স্টিলথ জেট ফাইটারের জন্য লকহীড মার্টিনকে ৮৬২ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। অথচ এই যুদ্ধবিমানগুলো ২০১৯ সালের শেষের দিকে তুরস্কের বিমান বাহিনীর হাতে হস্তান্তর করার কথা ছিল এবং চুক্তি মোতাবেক ভবিষ্যতে তুরস্কের বিমান বাহিনী ১০০-১২০টি এই জাতীয় এফ-৩৫এ সিরিজের নতুন প্রজন্মের স্টিলথ জেট ফাইটার পাওয়ার কথা ছিল।
আর বিশ্বের সবচেয়ে ব্যাপক ব্যয়বহুল ১.৫৩ ট্রিলিয়ন ডলারের মাল্টি-নেশন জয়েন্ট স্টাইক এফ-৩৫ লাইটনিং-২ প্রজক্টের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হওয়ায় তুরস্ক ইতোমধ্যেই ২.০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ সম্পন্ন করে এবং এই প্রজেক্ট থেকে ভবিষ্যতে কমপক্ষে ১০০টি এফ-৩৫এ সিরিজের স্টিলথ জেট ফাইটার পর্যায়ক্রমে পাওয়ার কথা ছিল।
তবে এটা পরিস্কার যে, মার্কিন প্রশাসনের প্রবল বাধার মুখে রাশিয়ার এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ক্রয়ের বিরোধে জড়িয়ে আপাতত এফ-৩৫ প্রজেক্ট থেকে ছিটকে পড়ল তুরস্ক। এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি যে, তুরস্ককে হাতে এফ-৩৫ তুলে দিলে তার তার এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের মাধ্যমে এর গোপন প্রযুক্তি এবং তথ্য উপাত্ত রাশিয়ার হাতে চলে যেতে পারে। যদিও এখনো পর্যন্ত এফ-৩৫ এর ফিউসলেস, ল্যাণ্ডিং গিয়ার, ককপিট ডিসপ্লের বেশ কিছু উচ্চ প্রযুক্তির যন্ত্রাংশসহ প্রায় নয় শাতধিকের কাছাকাছি যন্ত্রাংশ এবং ডিভাইস তৈরি করে তুরস্কের এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাবগুলো। তাছাড়া এফ-৩৫ এর গুরুত্বপূর্ণ এসওএম-জে স্ট্যাণ্ড অফ ক্রুজ মিসাইল তৈরি করছে যৌথভাবে তুরস্কের রকেটসান এবং মার্কিন লকহীড মার্টিন কর্পোরেশন।
এদিকে, মার্কিন এফ-৩৫ স্টিলথ জেট ফাইটার অপারেট করার জন্য তুরস্ক ২টি লাইট এয়ার ক্রাফট ক্যারিয়ার তৈরি শুরু করে এবং একটি সম্পূর্ণভাবে তৈরি হয়ে এখন কমিশনিং এর অপেক্ষায় রয়েছে। যা হোক তুরস্ক রাশিয়ার এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ক্রয় করে কতটা লাভবান হলো তা কিন্তু বেশ প্রশ্ন সাপেক্ষ। বর্তমানে তুরস্কের হাতে থাকা এস- ৪০০ কোন এখনো পর্যন্ত কোন কাজে ব্যাবহার করা হয়নি কিংবা নিরবিচ্ছিন্নভাবে এক্টিভ সম্পন্ন করেছে কিনা সন্দেহ।
ন্যাটো জোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অংশীদার এবং জোটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সামরিক সক্ষমতা সম্পন্ন দেশ হওয়ার সুবাদে তুরস্কের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম অনেক আগে থেকেই যথেষ্ঠ শক্তিশালী এবং বিশ্ব মানের আধুনিক অবস্থায় রয়েছে বলা চলে। আবার তাদের নিজস্ব প্রযুক্তির এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এবং কমব্যাট এণ্ড নন-কমব্যাট ড্রোন (ইউএভি) ব্যাপকভাবে সিরিয়া ও লিবিয়ায় ব্যাবহার হওয়ায় তা কিন্তু বিশ্বের নজরে এসেছে। তাই হঠাৎ করেই রাশিয়ার এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ক্রয়ে তুরস্কের সিদ্ধান্তটি কতটা যৌক্তিক ছিল তা কিন্তু বেশ প্রশ্নবিদ্ধ একটি বিষয়।
এক্ষেত্রে তুরস্ক আগে তার বিমান বহরে ১০০-১২০টি মার্কিন এফ-৩৫এ/বি সিরিজের স্টিলথ জেট ফাইটার আগে ক্রয় করে পরবর্তীতে সুযোগ মতো রাশিয়ার এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ক্রয় কিংবা সংগ্রহে আগ্রসর হতে পারত। তুরস্ক নিজেই মার্কিন লাইসেন্সে এফ-১৬ ম্যানিফ্যাকচারিং করলেও এর অধিকাংশ যন্ত্রাংশ এবং ইঞ্জিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে।
আর নতুন করে ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে বিরোধে জড়িয়ে এফ-১৬ তৈরির পথ না আবার বন্ধ হয়ে যায়।
তবে খেয়াল করার মতো একটি বিষয় হলো যে, তুরস্কের বিমান বাহিনীতে ২৪৫টি এফ-১৬ জেট ফাইটার এবং সত্তরের দশকের ৪৮টি এফ-৪ (নতুন করে আপগ্রডেডকৃত) যুদ্ধবিমান ব্যাতিত আর কোন কমব্যাট এয়ার ক্রাফট নেই। তবে তুরস্কের কাছে বায়কার মাকিনার তৈরি ১০০টি বায়রাক্তার টিবি-২ কমব্যাট ড্রোন এবং তুর্কী এ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের তৈরি ৩০টি আনকা-এস কমব্যাট ড্রোনসহ ২০০টি এর কাছাকাছি ছোট বড় মিলিয়ে রিকর্নিয়েন্স এণ্ড স্পাই ড্রোন (ইউএভি) রয়েছে। আবার নিজস্ব প্রযুক্তির নতুন প্রজন্মের জেট ফাইটার সার্ভিসে আসতে ২০২৮-৩০ সাল পর্যন্ত তুরস্ককে অপেক্ষা করতে হতে পারে। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে যে, তুরস্ক ২০২২ সালের দিকে তাদের এফ-৩৫ প্রজেক্টে অংশ গ্রহণের সুযোগ পেতে পারে।
তুরস্ক তার নিজস্ব বিমান বাহিনীকে আগে যথেষ্ট আকারে আধুনিক এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক উন্নত মানের যুদ্ধবিমান সংগ্রহ না করেই রাশিয়ার এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ক্রয়ের ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বিরোধে জড়িয়ে দেশটি কার্যত নিজেকেই নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। বিশেষ করে সিরিয়া, লিবিয়া এবং আজারবাইজান-আর্মেনীয় যুদ্ধের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তুরস্কের মূল প্রতিপক্ষ কিন্তু রাশিয়া এবং এক্ষেত্রে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে পরোক্ষভাবে হলেও প্রতিহত করে যেতে হচ্ছে তুর্কী এরদোয়ান সরকার অ তার সামরিক বাহিনীকে। যা ভবিষ্যতে যে কোন মুহুর্তে রাশিয়ার সাথে তুরস্কের বড় ধরণের যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment