ভারতীয় সেনাবাহিনীর অন্যতম শক্তির মূল উৎস রাশিয়ার টি-৯০ মেইন ব্যাটল ট্যাংক হলেও ভারত তার নিজস্ব প্রযুক্তি এবং ডিজাইনের অর্জুন মার্ক-১ মেইন ব্যাটল ট্যাংক সার্ভিসে এনেছে। বর্তমানে ভারতের সেনাবাহিনী ১২৪টি অর্জুন মার্ক-১ মেইন ব্যাটল ট্যাংক ব্যবহার করে।
সেনাবাহিনীর তরফে এই অর্জুন মার্ক-১ এমবিটি নিয়ে বেশকিছু সুনিদিষ্ট অভিযোগ আমলে নিয়ে ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) অর্জুন মার্ক-১ এর উপর ব্যাপক গবেষণা চালিয়ে আরো উন্নত এবং আপগ্রেডেড ভার্সন অর্জুন মার্ক-১এ সিরিজের মেইন ব্যাটল ট্যাংক সামনে এনেছে। নতুন প্রজন্মের অর্জুন মার্ক-১এ সিরিজের মেইন ব্যাটল ট্যাংকের ওজন অনেকটাই কমিয়ে এনে এবং এর প্রযুক্তির ব্যাপক রদবদল ঘটাতে ডিআরডিও সাথে যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে চেন্নাই ভিত্তিক কমব্যাট ভেহিকলস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এসট্যাবলিশমেন্ট (সিভিআরডিই)।
অর্জুন মার্ক-১এ মেইন ব্যাটল ট্যাংকের মূল ডিজাইনের পরিবর্তন এনে এবং নতুন বেশ কিছু প্রযুক্তি ইনস্টল করে একে যুদ্ধক্ষেত্রে আরো ভয়ঙ্কর এবং আক্রমণাত্মক করে তোলা হয়েছে। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের প্রতিরক্ষা বিভাগ সেনাবাহিনীর জন্য এরুপ আপগ্রেডেড ভার্সনের ১১৮টি অর্জুন মার্ক-১এ সিরিজের মেইন ব্যাটল ট্যাংক তৈরির জন্য ডিআরডিও-কে নির্দেশ দিয়েছে। যা হোক অনেকটা বিলম্ব হলেও ভারতের সেনাবাহিনী নতুন প্রজন্মের ১১৮টি অর্জুন মার্ক-১এ মেইন ব্যাটল ট্যাংক সার্ভিসে আনতে যাচ্ছে।
ডিআরডিও এর ভাষ্য মতে, হান্টার কিলার খ্যাত অর্জুন মার্ক-১এ সিরিজের মেইন ব্যাটল যে কোন প্রতিকূল আবহাওয়ায় এবং পরিবেশে কার্যকরভাবে ব্যাবহার করা সম্ভব এবং এর ফায়ার পাওয়ার ক্যাপাবিলিটিকে আরো শক্তিশালী করে এটিকে ডিজাইন করা হয়েছে। আসলে ৬৮ টন ওজনের অর্জুন মার্ক-১এ মেইন ব্যাটল ট্যাংকের আনুমানিক উৎপাদন খরচ ধরা হয়েছে ৮.০০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি এবং এর প্রধান অস্ত্র হিসেবে থাকছে একটি শক্তিশালী ১২০ এমএম মেইন গান। অর্জুন মার্ক-১এ মেইন ব্যাটল ট্যাংক যুদ্ধক্ষেত্রে চলমানরত অবস্থায় না থেমেই একেবারে নিখুঁতভাবে শত্রু পক্ষের উপর সেল ফায়ার করতে সক্ষম।
তাছাড়া ডিআরডিও অর্জুন মার্ক-১এ মেইন ব্যাটল ট্যাংকের ট্রান্সমিশন সিস্টেমেও পরিবর্তন এনেছে। এর অটোমেটিক টার্গেটিং সিস্টেমটি আরো আপগ্রেডেড করা হয়েছে এবং এখন এই ট্যাংকের ক্রুরা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই টার্গেট শনাক্ত করতে পারবে ও এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রে এটি যখন চলতে থাকবে, তখনো শতভাগ হামলায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারবে। এর গোলাবর্ষণ সিস্টেমটিকে একেবারে কম্পিটারাইজড করা হয়েছে। ফলে এই ট্যাংকটি দিনেরে পাশাপাশি রাতের বেলায় শত্রু পক্ষের উপর নিখুঁতভাবে গোলাবর্ষণ ও অপারেশন পরিচালনা করতে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছে ডিআরডিও।
ভারতের সেনাবাহিনীর করা পূর্বের অর্জুন মার্ক-১ এর সুনিদিষ্ট ১৪টি সমস্যা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে এর ব্যাপক রদবদল ঘটিয়ে উন্নত এবং আধুনিক প্রযুক্তি ইনস্টল করার মাধম্যে এটিকে যুদ্ধক্ষেত্রে আরো আক্রমনাত্বক করে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিআরডিও। যদিও সেনাবাহিনীর চাহিদা মাফিক এই নতুন সিরিজের মার্ক-১এ মেইন ব্যাটল ট্যাংকের প্রথম ইউনিটটি ৩০ মাসের মধ্যে হস্তান্তর করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।