‘টিপ’ এই উপমহাদেশে বাংলাদেশ, ভারত, নেপালসহ শ্রীলংকা, মৌরিতানিয়া, থাইল্যান্ডেও প্রচলিত। অনেক দেশে টিপকে বলা হয় বিন্দি- আক্ষরিকভাবে এর অর্থ দাঁড়ায় ফোঁটা । ঋগ্বেদে টিপের উল্লেখ আছে, যা থেকে বোঝা যায় যে টিপের প্রচলন প্রায় ৫০০০ বছর ধরে!
টিপ আমাদের বাঙালি সংস্কৃতিরও আদি ও অবিচ্ছেদ্য অংশ। গর্বিত বাঙালি হিসেবে আপনি নিশ্চয়ই আপনার সংস্কৃতির অপমান চাইবেন না। আপনার ঐতিহ্যকে নিশ্চয়ই আপনি প্রোমোট করবেন। নয়তো আপনি কিসের বাঙালি? মুখে বড় বড় বুলি আর বেশি নম্বর পেতে পরীক্ষার খাতায় লিখে আসলেই আপনি নিজ সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক হয়ে উঠবেন না। এর জন্য চাই সংস্কৃতি চর্চা, চর্চার সুযোগ করে দেয়া এবং তাকে সমর্থন করা।
আমাদের আর্টিফ্যাক্টস, নলেজ ও বিহেভিয়ার আমাদের সংস্কৃতি। আমাদের ব্যবহৃত প্রতীকও আমাদের সংস্কৃতি। ভাষা যখন ছাড়েননি, পহেলা বৈশাখে আয়োজন করে ইলিশ মাছ খাওয়া যখন ছাড়েননি, টিপ পড়া ছাড়বেন কিসের জন্য? শুধু কি গান, নাচ, কবিতা ইত্যাদির মাধ্যমে আপনি সংস্কৃতিসচেতন হয়ে ওঠেন? মোটেই না। আপনার সংস্কৃতি আপনার চালচলন, ব্যবহার, পোশাক, সাজসজ্জা, দৃষ্টিভঙ্গিতেই প্রকাশ পায় সবচেয়ে বেশি।
অতএব, সাহসী, তেজস্বী বাঙালির ন্যায় প্রতিবাদ করুন। হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা বন্ধ করুন। আপনার মত আরো হাজারের গুটিয়ে যাওয়া আমাদের বাঙালি ঐতিহ্যের অসম্মানকেই ইঙ্গিত করে। এমতাবস্থায়, আপনি যেই ধর্ম-পেশা-লিঙ্গের অধিকারীই হন না কেন, আপনি আপনার সবগুলো আইডেন্টিটির এথিকস অমান্য করছেন অবিরামভাবে।
অতএব, টিপ পরিধান করায় তেজগাঁ কলেজের শিক্ষক ড. লতা সমাদ্দারকে ফার্মগেইট এলাকায় ২ এপ্রিল সকালে পুলিশের গালিগালাজ ও তার গায়ের ওপর বাইক চালিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে আপনি নিজে বড় টিপ পরিহিত ছবি পোস্ট করে প্রতিবাদ করুন। আপনার পরিচিতদের এ মেসেজটি জানান। রুখে দাঁড়ান।
(লেখকঃ- শমিত জামান সাংবাদিক কলামিস্ট)