কথা হচ্ছে স্বাধীনতার ঠিক তিন বছরের মাথায় যদি বঙ্গবন্ধু ভুট্টোকে এইদেশে আমন্ত্রণ করে আনতে পারেন, তাহলে ৩০ লাখ শহীদের লাশের উপর দাঁড়িয়ে তারা পাকিস্তান সমর্থন করলে দোষ কোথায়?
খুবই সুন্দর ও খুবই উদ্ভট এই যুক্তি প্রায়ই শুনি, দেখে স্তম্ভিত হই মায়ের ধর্ষককের সাথে বুক মেলাবার জন্য কি নির্লজ্জভাবেই না যুক্তি দেখাচ্ছে কিছু মানুষ। ভুট্টো ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে এসেছিল, এদ্দুর জেনেই তারা বঙ্গবন্ধুকে গালি দিয়ে নিজেদের পাকিপ্রেম জায়েজ করতে চায়, অথচ কেন ভুট্টো এসেছিল, কিভাবে তাকে ঘাড়ে ধরে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল, সেই ইতিহাস জানার বিন্দুমাত্র আগ্রহ এদের ভেতর নেই। আজ সেই ইতিহাসটাই জানাবো আপনাদের!
১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ কমনওয়েলথের সদস্যপদের আবেদন করলে ভুট্টো বিরোধিতা করেন। তাঁর দাবি, বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ। ভুট্টোর এই আচরণে বঙ্গবন্ধু ক্ষুব্ধ হন। ১৫ জানুয়ারি লন্ডনের অবজারভার–এর গ্যাভিন ইয়ংকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ভুট্টো যদি বাংলাদেশের কমনওয়েলথ সদস্যপদ পেতে বাধা দেন বা চালাকি করেন, আমি পশ্চিম পাকিস্তানের দখল নেব এবং সেটিকেও বাংলাদেশের অংশ করব। আমিই পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা। আর তিনি সেনাবাহিনীর কৃপায় সেই দেশটির প্রেসিডেন্ট। গণতান্ত্রিকভাবে আমি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং সেখানকার প্রদেশগুলোতে আমি আমার লোকজনকে নিয়োগ দেব…।’
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ শেষে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর সামনে তখন একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, যার ৮০ ভাগের উপর রাস্তাঘাট, ব্রিজ যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত, ভাঙা, গৃহস্থের গোয়ালায় গরু নেই, পেটে ভাত নেই, ফসলের জমি পোড়া, ফসল নেই, নদীতে মাছ আছে কিন্তু নদীতে তার চেয়ে বেশি লাশ। মাছগুলো সেই লাশকেই তাদের আধার বানিয়েছে। যার ফলে জেলেরা সেই মাছ ধরেও না আবার মানুষ সেই মাছ খায়ও না। কোটি কোটি ক্ষুধার্থ মুখ, নিঃস্ব অর্থনীতি, শূন্য ব্যাংক।
অজস্র শহীদ স্বজনের চাপা আর্তনাদে ভারী বাংলাদেশ, ভারতে বন্দী ৯১০০০ যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানী সেনার বিচার করতে হবে। বিচার করতে হবে গণহত্যার সাথে জড়িত বিহারীদের, পাকিস্তানে ফেরত পাঠাতে হবে বাকি বিহারীদের। কিন্তু ওদিকে পাকিস্তানে মৃত্যুর অপেক্ষায় আটকে আছে সাড়ে তিন থেকে চার লাখ বাঙ্গালী, যদি এদিকে বাংলাদেশ পাকিস্তানীদের বিচার করে, তাহলে ওদিকে বাঙ্গালীদের জীবন বিপন্ন, বিহারীদেরও ফিরিয়ে নেবে না পাকিস্তান।
এমন কঠিন অবস্থায় বঙ্গবন্ধু সবার আগে দেশ গঠনে মনোযোগ দিলেন। সাহায্য চাইলেন আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠী থেকে শুরু করে সকল রাষ্ট্রের কাছে, এমনকি যে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তীব্র বিরোধিতা করেছিল, তাদের কাছেও দেশটা গড়ে তুলতে সাহায্য চাইলেন। কারণ ওচিত্যবোধের চেয়েও জাতির জনকের কাছে তখন তার দেশের মানুষের মুখে দুবেলা দুমুঠো খাবার তুলে দেওয়া বেশি জরুরী। মজার ব্যাপারটা হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় সামান্য সহায়তা না করলেও, ক্ষেত্রবিশেষে প্রবল বিরোধিতা করলেও স্বাধীন বাংলাদেশকে ঋণ দেয়ার সময় দাতাগোষ্ঠীরা বললো, পাকিস্তান আমলে নেওয়া ঋণের দায়ভার দিতে হবে বাংলাদেশকেই।
কিন্তু বাংলাদেশ বরাবরই বলে এসেছে, একাত্তর-পূর্ববর্তী সব দায়দেনা পাকিস্তানকেই মেটাতে হবে। দাতাগোষ্ঠী পাকিস্তানের প্রতি ছিল সহানুভূতিশীল। তারা বেশ কয়েকবার দেনা পরিশোধের সময়সীমা পরিমার্জন করেছিল। অন্যদিকে দেনার একটা অংশ যাতে বাংলাদেশ বহন করে, সে জন্য আন্তর্জাতিক চাপ ছিল। ওই সময় বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের ঋণের দায় নেবার চাপ দিলে বঙ্গবন্ধু দৃঢ়তার সঙ্গে এই দায় নিতে অস্বীকার করেছিলেন।
এই চাপটাও ঠিক তখন এসেছে, যখন আমরা পাকিস্তানের কাছ থেকে আমাদের প্রাপ্য সম্পদের ভাগ চাচ্ছি। ১৯৭৪ সালে করা এক হিসাবে দেখা যায়, পাকিস্তানের সম্পদে বাংলাদেশের দাবির আর্থিক মূল্য প্রায় ৪০০ কোটি ডলার। এর সঙ্গে যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির আনুমানিক দাম ধরা হয়েছিল আরও ১০০ থেকে ১৫০ কোটি ডলার। ১৯৭১-৭২ সালের মূল্যমান অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট প্রাপ্য হিসাব করা হয়েছিল ৫০০ থেকে ৫৫০ কোটি ডলার।
যদিও পরবর্তীতে কানাডার ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এ চৌধুরী ও এস এ বাশার বিস্তারিত এক গবেষণায় দেখিয়েছিলেন যে আমাদের মোট প্রাপ্যের পরিমাণ ২৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি, কিন্তু তখনকার সময়ে এই সাড়ে পাঁচশো কোটি ডলারই পাকিস্তানের কাছ থেকে আদায় করা বিশাল চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ নির্লজ্জ পাকিস্তানীদের সাথে যোগ দিয়েছিল গণহত্যার পক্ষে থাকা বিশ্বমোড়লেরা। সবচেয়ে মজার ব্যাপারটা ছিল, পাকিস্তানের যে ঋণের দায়ভার আমাদের উপর চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল, সেটাও মওকুফযোগ্য হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল দাতারা, যদি আমরা বন্দী পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচার বাতিল করি।
তার মানে কি দাঁড়ালো বুঝতে পারছেন? পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দীদের বিচার বাতিল করো, তাদের ফিরিয়ে দাও, প্রাপ্য টাকা চেয়ো না, পাকিস্তানের কোন অপরাধের বিচার চেয়ো না, ব্যাস, আমরা বাংলাদেশকে সব ধরণের সহায়তা করতে রাজি আছি। ঠিক এটাই ছিল তৎকালীন বিশ্বমোড়লদের প্রস্তাব। জাতিসংঘের সদস্যপদ পাচ্ছি না আমরা কারণ পাকিস্তানের পেয়ারে দিওয়ানা চীন ভেটো দিয়ে যাচ্ছে বারবার, বলছে পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দীদের বিচার বাতিল করো, আমরা স্বীকৃতি দিচ্ছি, জাতিসংঘেও সদস্যপদ পাবে।
তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, “”After resolution of the war trials issue, Peking will recognise Dacca, and the way will be open for Bangladesh to be admitted to the United Nations” বাংলাদেশকে এভাবে আন্তর্জাতিকভাবে চাপে রেখে সিমলায় ইন্দিরা গান্ধীর সাথে ভুট্টো বসলো দুই দেশের বৈরিভাব দূর করে যুদ্ধবন্দীদের মুক্ত করতে। কিন্তু ইন্দিরা গান্ধী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ভারতের কাছে যারা যুদ্ধবন্দী তারাই আবার বাংলাদেশের কাছে যুদ্ধাপরাধী। সুতরাং দুই পক্ষের বৈঠকে এ মীমাংসা হবার নয়।
এখানে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হতে হবে। সেখানে নির্লজ্জ বেইমান ভুট্টো ইন্দিরা গান্ধীকে এর জবাবে বললো, “যদি বাংলাদেশ একজন সেনা সদস্যের বিচারও শুরু করে তাহলে পাকিস্তানও পাকিস্তানে থাকা বাঙ্গালিদের রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বিচার করবে”। ভুট্টোর ইকুয়েশনটা বুঝতে পেরেছেন?
ওদিকে ১৯৭২ সাল থেকেই বাংলাদেশি পাসপোর্টে হজ্জে যাওয়া বন্ধ। কেন জানেন? পুরো একাত্তরের সময়টায় পাকিস্তানকে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে লাখো বাঙ্গালী ভাইদের পৈশাচিক হত্যাকান্ডে সমর্থন দেবার জন্য দুঃখ প্রকাশ কিংবা ক্ষমা চাওয়া তো বহু দূরে থাক, সৌদি আরব ১৯৭২ সাল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের পাসপোর্টে মুসলমানদের হজে যাওয়া বন্ধ করেছিল কারণ বাংলাদেশ গণহত্যার অপরাধে ১৯৫ জন পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধী সেনা কর্মকর্তার বিচারের দাবীতে অটল ছিল। শুধু সৌদি আরব নয়, মধ্যপ্রাচ্যের বাকি মুসলিম রাষ্ট্রগুলোও বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিয়ে ঠিক এই দাবীই জানিয়েছিল যে, পাকিস্তানের দাবী মেনে নাও, বিচার বাতিল কর।
খুব জানতে ইচ্ছা করে মাঝে মাঝে, এমন ভয়ংকর এক সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুকে গালাগালি দেওয়া আমাদের অনলাইন বিপ্লবীরা কি করতেন? কিভাবে প্রবল চাপের মুখে দাঁড়িয়েও নিজের দেশের, জনগণের স্বার্থটা বের করে নিয়ে আসতেন? বঙ্গবন্ধু কিন্তু একবারও পিছু হটেননি। এমন কোণঠাসা বাংলাদেশকে নিয়ে গেলেন ন্যামে। নন এলাইড মুভমেন্ট নামে ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া একটা অর্গানাইজেশন।
যেখানে রয়েছে মার্কিন-সোভিয়েত প্রভাবমুক্ত ২৫টি উন্নয়নশীল দেশ। বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন যে তাকে সোভিয়েত-আমেরিকার প্রভাবের বাইরে থাকা রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে এগোতে হবে, আউট অফ বক্স কিছু করতে হবে। সে চিন্তা থেকেই ন্যাম সম্মেলনে দুর্দান্ত কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে মিশর, লিবিয়াকে সাথে নিয়ে আরেকবার মধ্যপ্রাচ্যের সাথে সম্পর্ক করার প্রচেষ্টা নিলেন। মিশরের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত সত্যিকারের বন্ধুর মত বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে প্রথমে সৌদি আরবকে রাজি করালেন, তারপর সৌদি বাদশাহ ফয়সাল, আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বুমেডিয়েনসহ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর প্রধানদের নিয়ে নতুন করে অচলাবস্থা নিরসনের উদ্যোগ নিলেন। এই উদ্যোগের প্রাথমিক সাফল্য এলো আন্তর্জাতিক আদালতে যখন ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের মামলা প্রত্যাহার করলো। পাঠক নিশ্চয়ই একটু অবাক হয়ে ভাবছেন, পাকিস্তান আবার ভারতের বিরুদ্ধে কবে মামলা করলো?
জ্বি, ভুট্টো আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধী হস্তান্তর করবার জন্য। ভারত নাকি অন্যায়ভাবে এই ১৯৫ জনকে আটকে রেখেছে, তাই এই যুদ্ধাপরাধীদের হস্তান্তরে বাধ্য করার জন্যই পাকিস্তান আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করতে চাচ্ছিল! যাক, মামলার সকল কাগজপত্র জমা দেবার তারিখ ১৫ই ডিসেম্বর ১৯৭৩ থেকে ১৭ই মে ১৯৭৪ পর্যন্ত বর্ধিত করা হলেও মিশর ও আরব লীগের নেতৃবৃন্দ অচলাবস্থা কাটাবার উদ্যোগ নেওয়ায় শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ১৯৭৩ সালের ১৪ই ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক আদালতের রেজিষ্টারের কাছে একটি চিঠিতে মামলাটি আর না চালাবার সিদ্ধান্ত জানায় এবং মামলাটি আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারাধীন মামলার তালিকা থেকে বাদ দেবার জন্য অনুরোধ জানায় ।
এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাষ্টিস ১৫ ই ডিসেম্বর ১৯৭৩ এক আদেশের মাধ্যমে, আদেশ নং – ৩৯৩, এই মামলাটি বাতিল ঘোষনা করে এবং তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আন্তর্জাতিক আদালত থেকে পাকিস্তানের মামলাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আরবলীগ নেতৃবৃন্দের একটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য বলে বিবেচিত হয়। তাই তারা এই ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার বিদ্যমান সমস্যা ভারতের মধ্যস্থতা ব্যতীত সরাসরি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা শুরু করে। বাধ্য হয়েই বঙ্গবন্ধুকে সেই প্রস্তাব মেনে নিতে হয়, কারণ পাকিস্তানের বিপক্ষে কূটনীতিতে জিততে আরব লীগের সমর্থন দরকার বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের কাছ থেকে এই সম্মতি পেয়ে আরব লীগ নেতৃবৃন্দ এবার পাকিস্তানের উপর চাপ প্রয়োগ শুরু করে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দান করার জন্য। কারণ এর মাধ্যমে পাকিস্তান বাধ্য হবে একটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের দাবীগুলো নিয়ে কথা বলতে, আলোচনার টেবিলে বসতে। এই চেষ্টার জবাবে জুলফিকার আলী ভূট্টো কি বলেছিল জানেন? বাংলাদেশ ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রত্যাহার করলেই কেবলমাত্র পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেবে।
সেই পুরান ক্যাচাল! আমাদের নানামুন্না নিষ্পাপ বাচ্চাগুলোকে ছেড়ে দাও, আমরা সব দাবী মেনে নিচ্ছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু এতো চাপের মুখেও একটাবারের জন্যও পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী থেকে একচুল সরেননি। কিন্তু পাকিস্তান ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে গেছে তাদের নরপিশাচ গণহত্যাকারীদের বাঁচানোর। ১৯৭৪ সালের ২২-২৪ শে ফেব্রুয়ারী পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আরব লীগের নেতৃবৃন্দ জোর তৎপরতা শুরু করে। কারণ বাংলাদেশ তখনো ওআইসির সদস্য নয়। যদি বাংলাদেশকে ওআইসির সদস্য করে সম্মেলনে দাবীগুলো নিয়ে আলোচনা চালানো যায়, সেই চেষ্টা চলতে থাকে। কিন্তু সম্মেলন শুরুর আগে প্রায় সকল সদস্য রাষ্ট্রের সম্মতি থাকা সত্বেও (ইরান, তুরস্ক ও পাকিস্তান ব্যতীত) সেই পাকিস্তানের আপত্তির কারণে বাংলাদেশের ওআইসির সদস্যপদ আবারো অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে।
শেষ পর্যন্ত উপায়ান্তর না দেখে মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত, সৌদি রাজা ফয়সাল এবং জর্ডানের রাজা হুসেইন এর উদ্যোগে সাতটি মুসলিম দেশের প্রতিনিধি ঢাকা সফর করে ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের উদ্যোগ থেকে সরে আসার জন্য বঙ্গবন্ধুকে রাজী করাতে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু এই শর্তসাপেক্ষে পাকিস্তানের স্বীকৃতি গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান এবং এই বিষয়ে আরো আলোচনা প্রয়োজন বলে অভিমত দেন।
স্রেফ একবার ভাবেন তো, কতটা প্রজ্ঞা আর দৃঢ়তা থাকলে এতগুলো নেতৃস্থানীয় মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের চাপ উপেক্ষা করে নিজের দেশের স্বার্থে অটল থাকা যায়!
বঙ্গবন্ধু বরং উল্টো জানিয়ে দেন যে তিনি ওআইসির সম্মেলনেই এই ব্যাপারে আলোচনা করতে চান। বঙ্গবন্ধুর দৃঢ়তা দেখে এই প্রতিনিধিদল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভূট্টোর সাথে সাক্ষাৎ করে এবং সেখানে তারা বঙ্গবন্ধুর স্পষ্ট ও দৃঢ় অবস্থান জানায়। একইসাথে তারা যুদ্ধাপরাধী সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশের ওআইসি সম্মেলনে অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরে।
জুলফিকার আলী ভূট্টো, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ভুট্টোর ছবি নিয়ে মিথ্যাচার, ভুট্টোর সফর, পাকিস্তান, বাংলাদেশ। কিন্তু গোঁয়ার ভুট্টো বারবারই বেঁকে বসছিল, তার একটাই দাবী, আগে বাংলাদেশ পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী প্রত্যাহার করবে, তারপরে তারা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেবে ও আলোচনায় বসবে। ফলে আরব লীগ বঙ্গবন্ধুকে চাপ দেওয়া অব্যাহত রাখে, এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর পক্ষ থেকে কাতার বাংলাদেশকে এও বলে যে “চলমান অচল অবস্থা কাটাতে বাংলাদেশ ইচ্ছুক সেটা প্রমাণে বাংলাদেশের সামনে এই সম্মেলনই শেষ সুযোগ”। কিন্তু জাতির জনক কোন চাপেই বিনুমাত্র কর্ণপাত না করে তার দাবীতে অটল থাকেন এবং পাকিস্তান স্বীকৃতি না দিলে ওআইসি সম্মেলনে যোগ না দেবার নীতিগত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ পুনরায় জানিয়ে দেয়।
এই প্রবল অচলাবস্থায় শেষ পর্যন্ত পরাজয় ঘটে ভুট্টোর। আরব লীগ নেতৃবৃন্দের প্রবল চাপে অনেকটা নাটকীয়ভাবে ১৯৭৪ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারী পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করতে বাধ্য হয়। একই দিন ইরান এবং তুরস্কও বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করে। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশ কূটনৈতিক বিজয় ছিনিয়ে আনে জন্মশত্রু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে! আর এর পুরো কৃতিত্বই বঙ্গবন্ধুর। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই আসে এই জয়। তবে এই অনমনীয় দৃঢ়তা ঠিক দেড় বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের প্রথম বীজ বপন করে। যার বাহ্যিক ইঙ্গিত ছিল চীন ও সৌদি আরবের স্বীকৃতি না দেওয়া।
পাকিস্তান স্বীকৃতি দিলেও যুদ্ধাপরাধী সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানে অস্বীকৃতি জানায়। এর মাধ্যমে পাকিস্তান আরব লীগ নেতৃবৃন্দের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় কৌশলগত কারনে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েও চীনের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া থেকে সরে না আসা পর্যন্ত জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করার ব্যাপারটি আটকে রাখে।
২২ শে ফেব্রুয়ারী পাকিস্তানের স্বীকৃতি লাভ করার পর বাংলাদেশের একই দিন থেকে লাহোরে অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেয়াতে আর কোন বাধা থাকেনা। জাতিসংঘের স্বীকৃতি আটকে গেলেও বঙ্গবন্ধুর এক প্রকার একলা প্রচেষ্টায় এই যে ওআইসিতে যোগ দিলো বাংলাদেশ, এটা আরেকবার আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বঙ্গবন্ধুর সাফল্য প্রমাণ করে। এই অবস্থায় ২২শে ফ্রেব্রুয়ারী সকালে কুয়েতের আমীরের ভাই কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে মুসলিম দেশগুলির একটি প্রতিনিধিদল একটি বিশেষ বিমানে করে ঢাকা আসেন এবং বঙ্গবন্ধুকে এসকর্ট করে লাহোরে নিয়ে যান ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবার জন্য ।
১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় যে বঙ্গবন্ধুর কারাগারের পাশে কবর খোঁড়া হত তাকে দেখিয়ে, সেই পাকিস্তানে এবার স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে পা রাখেন তিনি। সেই পাকিস্তানীরাই তাকে সাদর অভিবাদন জানাতে বাধ্য হয়। স্রেফ পাকিস্তানীদের মত নির্লজ্জ গোঁয়ারদের জন্য লজ্জারই না, বরং সদ্য স্বাধীন একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও এটা ছিল অনেক বড় এক অর্জন! আর এর পথে ধরেই এসেছিল জাতিসংঘের ১৩৬তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সদস্যপদ প্রাপ্তি। যেহেতু পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে, সুতরাং বাধ্য হয়েই চীন তাদের ভেটো তুলে নেয় এবং বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পায়। প্রথমে কমনওয়েলথ, তারপর ওআইসি, তারপর ইরান, তুরস্ক এবং প্রধান শত্রু পাকিস্তানের স্বীকৃতি এবং শেষে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ- কূটনৈতিকভাবে এটা বাংলাদেশের জন্য বিশাল একগুচ্ছ সাফল্য হলেও এর জন্য ঘরে-বাইরে সবচেয়ে বড় মাশুল দিতে হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকেই।
অনেকেই ইসলামী সম্মেলনে যোগ দেওয়াকে ভাবছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ নীতির সাথে আপোষ করা, বিচ্যুত হওয়া। কিন্তু যে সমাধানটা কেউ দিতে পারেননি সেটা হচ্ছে, আরব-আফ্রিকার নেতৃবৃন্দ যথা মিশরের আনোয়ার সাদাত, আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ারি বুমেদিন, লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফি, প্যালেস্টাইনের প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত ও ইরানের শাহ-এর দূতিয়ালিতে যদি বঙ্গবন্ধু ওআইসিতে গিয়ে পাকিস্তানের উপর চাপ প্রয়োগের সুযোগটা না গ্রহণ করতেন, তাহলে আর কারা আমাদের দাবী পূরণে এগিয়ে আসতো?
এক ভারত আর সোভিয়েত রাশিয়া ছাড়া তো বাকি সবাইই আমাদের বিপক্ষে ছিল, বিরুদ্ধে ছিল, আমাদের দাবীগুলো আদায় হত কিভাবে? এই যে ধাপে ধাপে বিশ্বমোড়লদের বিপক্ষে একলা দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু একেবারেই অসম্ভব একটা কূটনৈতিক যুদ্ধ চালালেন এবং আমাদের দাবী নিয়ে অন্তত আলোচনার স্থান ও পরিধি ক্রমেই বাড়াতে সক্ষম হলেন (এরপর জাতিসংঘে গিয়েও বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী তুলেছিলেন), তার জন্য যে তাকে নিজের জীবন দিয়ে মুল্য চুকাতে হয়েছিল, এই ঘটনাপ্রবাহ কি একবারও আমরা ভেবে দেখতে চেয়েছি?
এখন ভুট্টো আশা করেছিল যে বঙ্গবন্ধুকে লাহোরে ওআইসির এই সম্মেলনে এনে আরব দেশগুলোকে দিয়ে চাপ দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ওআইসিতে এমন শক্ত অবস্থান নিলেন যে পাকিস্তানের পক্ষে সরাসরি কোন সিদ্ধান্ত আসলো না। ওদিকে যেহেতু বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান সফরে গেছেন, স্বাভাবিক কূটনৈতিক শিষ্টাচার রক্ষা করতে বাংলাদেশে ভুট্টোকে আসতে হবে। পাকিস্তানের সব সম্পদ ও দায়দেনা উভয় দেশ সমান ভাগ করে নেবে; ভাগ-বাঁটোয়ারার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটা যৌথ কমিশন গঠন করা হবে; এবং পাকিস্তান সৌজন্য দেখিয়ে প্রতীকী অর্থে ২০ থেকে ৩০ কোটি ডলার দেবে দুই মাসের মধ্যে এই তিনটি দাবী সামনে রেখে মূলত ভুট্টোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালেও বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনা ছিল আরো বিস্তৃত।
আরো যে গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়িত হয়েছিল ভুট্টো ঢাকায় আসার পর, সেগুলো হচ্ছেঃ
১। আটকে পড়া বাঙ্গালীদের প্রত্যাবাসনঃ তখনো সামরিক, বেসামরিক কর্মকর্তা ছাড়াও তাদের পরিবারসহ দুই লাখ বাঙ্গালীকে পাকিস্তানে আটকে রেখেছিল ভুট্টোর সরকার। যেসব বাঙ্গালী পাকিস্তানের পক্ষে ছিল, তাদের কোন সমস্যা না হলেও যারা বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন, তাদের ভোগ করতে হয়েছিল অবর্নণীয় অত্যাচার। আটকে রেখে ক্রমাগত নির্যাতন করা হত তাদের, না পারতেন পালাতে, না পারতেন মরতে। বঙ্গবন্ধু শেষ পর্যন্ত তাদের স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন, বিনিময়ে পাকিস্তানের ৯১০০০ সেনাকে ফিরিয়ে দিতে হয়েছিল। মজার ব্যাপারটা হচ্ছে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে এই যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানী সেনাদের বিচার করার চুক্তি করেছিল পাকিস্তান, আজ পর্যন্ত তাদের কেশাগ্রও উৎপাটিত হয়নি।
২। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নতি দেখিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ আন্তর্জাতিকভাবে ভালো একটা ইমেজ গড়ে তোলা এবং বিভিন্ন দেশের সমর্থন আদায় এবং দেশ গঠনের জন্য সাহায্য-সহযোগিতা প্রাপ্তি ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য। কারণ সেই একাত্তর থেকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাকফুটে ছিলাম আমরা, সোভিয়েত রাশিয়া আর ভারত ছাড়া আমেরিকা, চীন, সৌদি আরবসহ সকল মুসলিম দেশসহ প্রায় কোন দেশই সরাসরি আমাদের পক্ষে দাঁড়ায়নি, একাত্তরের পর আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে আমাদের অবস্থা আরো বাজে হয়ে পড়ে। কারণ পরাজিত নির্লজ্জ পাকিস্তান দুনিয়াজুড়ে আমাদের ব্যাপারে বিষ ছড়িয়ে যাচ্ছিল, মুসলিম দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানদের বলা হচ্ছিল যে, বাংলাদেশ ভারত দখল করে নিয়েছে, সেখানে মুসলমানদের উপর অত্যাচার চলছে।
এই পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু অসাধারণ কূটনৈতিক দক্ষতায় একের পর এক মুসলিম রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন, ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়ার নানা দেশ সফরের মাধ্যমে সেসব দেশের সাথে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার পথ প্রশস্ত করেন এবং পাকিস্তানের শোষণ ও গণহত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসটা বলিষ্ঠভাবে তুলে ধরেন। ফলে আস্তে আস্তে আমাদের দেশের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মনোভাব পাল্টাতে থাকে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে তার অন্যতম একটি পদক্ষেপ ছিল ভুট্টোকে ঢাকায় আনা, যেন যুদ্ধবিধ্বস্ত একটা দেশ হয়েও ইতিবাচকভাবে নিজেদের একটা শক্তিশালী ইমেজ গড়ে তোলা যায় এবং এই ইমেজ কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানের মাথার উপরে থাকা আমেরিকা এবং চীনের উপর চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে নিজেদের দাবীগুলো আদায়ের ব্যবস্থা করা যায়। এই দাবীগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল সম্পদ বন্টন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। বঙ্গবন্ধু জানতেন যে পাকিস্তান যতই চুক্তি করুক না কেন, তাদের সেনা কর্মকর্তা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে না, তারা কোন না কোন ভাবে পাশ কাটাতে চেষ্টা করবে, তাই তিনি তার এই দাবী কখনোই ছাড়েননি।
৩। জাতিসংঘের সদস্যপদ প্রাপ্তি। যেহেতু পাকিস্তান বাংলাদেশকে সমর্থন দিতে বাধ্য হয়েছে, সুতরাং চীন তাদের ভেটো তুলে নেওয়ায় বাংলাদেশ লাভ করে জাতিসংঘের সদস্যপদ। আর সে বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ১৯৭৪ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর বাংলায় ভাষণের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু। খুবই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টটা হচ্ছে সেই ভাষণেও বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী তুলেছিলেন, তুলেছিলেন পাকিস্তানের কাছে আমাদের প্রাপ্য সম্পদের দাবী। ১৯৭৫ সালের এপ্রিলে লন্ডনে কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে বিষয়টি আবারও তোলা হয়। এবং ততদিনে আন্তর্জাতিকভাবে বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের একটা ইতিবাচক ভাবমুর্তি তৈরি হওয়ায় পাকিস্তান এবং তার মিত্রদের জন্য এই দাবীগুলো ভয়ংকর অসস্তির সৃষ্টি করেছিল।
লেখকঃ তানভীর হাসান
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ সাম্প্রতিক সংবাদ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment