হাজার বছর পরাধীন থাকা বাঙ্গালী জাতিকে স্বাধীনতার স্বাদ এনে দিয়েছিলেন টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেওয়া বিস্ময়মানব শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙ্গালীর হাজার বছরের অপূর্ন স্বাদকে স্বার্থক করতে নিজের জীবন যৌবনের অনেকগুলো দিন কাটিয়েছেন অন্ধকার কারাগারে। ভারত-পাকিস্তান বিভক্ত হওয়ার পর বাঙ্গালী একজন নেতার অভাব ছিলো। সেই অভাবেই বাংলা পাকিস্তানের সাথে সংযুত্ত হলেও ‘৪৮ এর পর থেকে বঙ্গবন্ধু শুরু করেন ওনার মহা কর্মপরিকল্পনা।
১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন থেকে যার শুরু, পাকিস্তান সরকার মনে করতো বঙ্গবন্ধুর মত নেতা কারাগারে থাকলেই ভালো। কিন্তু সাধারন জনগন ঠিকই জানতো মুক্তির পথিকৃৎ তো এই শেখ মুজিবই। তাই বারবার আন্দোলন করে কিছুদিন পর পর মুক্তি করে আনতো প্রিয় নেতাকে। ‘৬৯ এ গনবিষ্পোরনে বঙ্গবন্ধু অনেকটাই বুঝে গিয়েছিলেন এই জাতিকে দমায়ে রাখা যাবেনা। ওনার পরিকল্পনা অনেকটা সফল তাই একটি ৭’ই মার্চের জন্যই অপেক্ষা করেন তিনি। ২৫’শে মার্চের কালোরাতে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা তরংগ বার্তা দিলেও সেটার চেয়েও স্বাধীনতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিলো ৭’ই মার্চের ভাষন।
৭’ই মার্চেই বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দিয়েছিলেন জনতা তখনই প্রস্তুতি শুরু করে। ২৫ শে মার্চে পাকিস্তানিদের নির্মমতা অনেকটা পথকে প্রসূত করে। বাঙ্গালী বুঝে যায় এবার ঝাপিয়ে না পড়ে আর উপায় নেই। সেই বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই স্বাধীনতা আসে ও বাংলাদেশ নামক একটি দেশের নাগরিক হয় বাঙ্গালীরা।
শৈশবে স্কুল পড়ুয়া শেখ মুজিবুর রহমান ব্রিটিশ শাসনআমলেও ৭ দিন জেলহাজতে ছিলেন। জীবনের সর্বমোট ৪৬৮২ দিন জেলহাজতে থাকলেও বাকি সময় পুরাটা পাকিস্তান শাসনআমলে। বাংলা ও বাঙ্গালীর স্বাধিকার লড়াইয়ে একক নেতৃত্ব দেওয়া শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর বেঁচে ছিলেন মাত্র ১৩১৪ দিন।
বঙ্গবন্ধুকে ৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার সময় তার বয়স হয়েছিলো মাত্র ৫৫ বছর। ক্ষণজন্মা এই মহামানবটির এমন আত্মত্যাগ আমরা স্মরন করছি গভীর শ্রদ্ধাভরে। ঘৃণাভরে ধিক্কার জানাচ্ছি অভিশপ্ত ৭৫ সালের খলনায়কদের। ভালো থেকো মুজিব ভাই। পরপারে সুখে থেকো বাংলার বন্ধু, বাঙ্গালীর বন্ধু তথা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।