প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ আফগানিস্তানে অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি দেখতে চায়, যেখানে আফগান জনগণ তাদের উন্নত জীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারে। সম্প্রতি আফগানিস্তানের উচ্চ শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানে আফগান নারীদের উপর আরোপিত বৈষম্যমূলক নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। আফগানিস্তান বিষয়ে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা- ওআইসির এক জরুরী সভায় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ওআইসিতে স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) আজ একথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী উন্নয়নে বাংলাদেশ অন্যতম চ্যাম্পিয়ন দেশ, যা আমাদের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। আমরা মনে করি আফগান কর্তৃপক্ষের এসব সিদ্ধান্ত আফগান নারীদের উন্নয়নের সুযোগ আরও সীমিত করবে এবং যা এই যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করবে। এছাড়া এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ইসলামের বিরুদ্ধে একটি ভুল বার্তা ছড়িয়ে দেবে এবং আফগান কর্তৃপক্ষের বিশ্বাসযোগ্যতাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, আফগানিস্তানে রাজনৈতিক সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে, বাংলাদেশ সরকার এ পর্যন্ত দুই শতাধিক আফগান মহিলা শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশে প্রবেশের সুবিধা দিয়েছে যাতে তারা বাংলাদেশে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে তাদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে এবং তাদের ভবিষ্যত কর্মজীবনের জন্য আরও ভাল সুযোগ পেতে পারে।
আরও পড়ুন…..
- Ishwardi also has the lowest temperature in the country at 7.8 degrees
- Bangladesh wants to see inclusive socio-economic progress in Afghanistan
- Russia says that there is no opportunity for other countries to interfere in Bangladesh in the name of democracy
- RAB will not be banned, Bangladesh will be able to appeal the lobbyist's cross-examination
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি এবং এই অঞ্চলে “অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন” এর দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করে, বাংলাদেশ ২০২২ সালে আফগানিস্তানের জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় (OCHA)-এর তহবিলে প্রায় এক লক্ষ বিশ হাজার মার্কিন ডলার দান করেছে। এছাড়াও আমরা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে করে গত বছর জুলাই মাসে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আফগানদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রেরণ করেছি।
সভার শুরুতে ওআইসি মহাসচিব বর্তমান আফগান পরিস্থিতি উন্নয়নে ওআইসি এর গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার উপর আলোকপাত করেন। পরে উন্মুক্ত আলোচনায় বাংলাদেশ ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, মালয়শিয়া, তুরস্ক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, ফিলিস্তিন ও অন্যান্য দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা আফগানিস্তান সম্পর্কে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেন। আলোচনা শেষে একটি যৌথ বিবৃতি গৃহীত হয়।
ওআইসি সভা শেষে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ওআইসি মহাসচিবের সাথে এক আলাদা বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে তিনি মহাসচিবের সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফরে নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি, আগামী মার্চে মৌরিতানিয়াতে অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৯তম সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের সংকট সমাধান ও তাঁদের জন্য আর্থিক সহয়তার বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাখার জন্য অনুরোধ জানান। এছাড়াও বাংলাদেশে অবস্থিত ইসলামি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়। মহাসচিব ওআইসি এর কর্মকান্ডে বাংলাদেশের গঠনমূলক অংশগ্রহনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।