সাম্প্রতিক শিরোনাম

সব সময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরে মদতদাতারা

নানা কারণে বিতর্কিতরা গ্রেফতার হলেও তাদের গডফাদার বা মদতদাতারা সব সময় থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমনকি তাদের থেকে যারা সুবিধা নিয়েছেন তাদের নামও কখনো প্রকাশ হয় না। বিতর্কিত ব্যক্তিরা গ্রেফতারের পর জেলে যাচ্ছেন। ভিন্ন মামলায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিটও হচ্ছে। কারো সাজাও হয়েছে। কিন্তু ক্ষমতার প্রভাব বিস্তারের জন্য কারা সহযোগিতা করেছেন তাদের নাম কখনো প্রকাশ হচ্ছে না। এমনকি তদন্তকারীরাও তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন না।

এর আগে বিএনপির শাসনামলেও এমনটা দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব কারণে একজন সাহেদ বা সম্রাট ধরা পড়লেও কিছুদিন পর আরেকজন সাহেদ বা সম্রাট তৈরি হচ্ছে। যারা তাদের তৈরি করছে তাদের আইনের আওতায় আনতে পারলে এই ধরনের বিতর্কিতরা নতুন করে সৃষ্টি হতো না। কিন্তু সেই কাজটাই হচ্ছে না।

পেছনে থেকে যারা এদের সাহেদ বা পাপিয়া বানিয়েছে, তাদের কখনই ধরা হয় না বলেই আজ এদের বিস্তৃতি ঘটছে—এটা শতভাগ সত্যি। আসলে এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। ফলে একজন ধরা পড়লেও আরেকজন তৈরি হচ্ছে। তবে আশার কথা তরুণ সাংবাদিক বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরুণ সদস্যরাই কিন্তু এদের সামনে আনছেন। ফলে তরুণদের মধ্যে একধরনের উদ্যোগ আছে। শেষ কথা হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চয় এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা শুরু করেছেন, এটা এখন অব্যাহত থাকবে।’

যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তার চিঠিতে সাবেক স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলামের মৌখিক নির্দেশে সাহেদের সঙ্গে চুক্তির কথা বলেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো তদন্তেই আসাদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। বা কেন তিনি এমন একটি লাইসেন্সহীন প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে বলেছেন, সে ব্যাপারে কোনো ব্যাখা পাওয়া যায়নি। শুধু এই প্রতারণাই নয়, অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে সাহেদ কীভাবে করোনার সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহের অনুমতি পেলেন, কারা পেছন থেকে তাদের কাজ পেতে সহযোগিতা করেছেন, সে নামগুলো এখনো জানা যায়নি।

সর্বশেষ করোনা পরীক্ষার নামে প্রতারণা করে গ্রেফতার হয়েছেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম। এর মধ্যেই একই ধরনের প্রতারণা করে গ্রেফতার হন জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ ও তার স্বামী আরিফ চৌধুরী। সাহেদ-সাবরিনা গ্রেফতারের পরই প্রতারণার বিশাল কাহিনী সামনে চলে আসে। প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে এই দুই প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অনুমতি পেল। কারা তাদের কাজ পেতে সহযোগিতা করেছেন।

কিছুদিন আগে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির ঘটনায় গ্রেফতার হন যুবলীগের (দক্ষিণ) সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, যুবলীগ নেতা খালেদ ভূঁইয়া ও ঠিকাদার জি কে শামীম। এছাড়াও গ্রেফতার হন মোহামেডান ক্লাবের কর্ণধার লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। তাদের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো নিয়ে মামলা হলেও কাদের শেল্টারে তারা ক্যাসিনোর বিস্তার করেছিলেন তাদের নাম এখনো অজানা। জি কে শামীম গ্রেফতারের সময় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করছিলেন। কীভাবে, কাদের ম্যানেজ করে তিনি এই কাজ পেয়েছেন সে তথ্য অজানাই রয়ে গেছে।

এমনকি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ঢাকা শহরে গড়ে তুলেছিলেন বিশাল সাম্রাজ্য। তখন অভিযোগ উঠেছিল শীর্ষ ব্যক্তিদের ম্যানেজ করেই তিনি এই সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন। তার কাছ থেকে সুবিধাভোগীর সংখ্যাও অজস্র। তখন মিডিয়ায় এমন অনেকের নাম প্রকাশ হলেও তদন্তে কারো নাম আসেনি। ফলে গডফাদার বা মদতদাতাদের নাম এখনো জানা যায়নি। এমনকি সুবিধাভোগীদের নামও জানা যায়নি। এক সময় বিএনপি করা লোকমান হোসেন ভূঁইয়া গ্রেফতারের পর তার কিছু বন্ধুর নাম মিডিয়ায় প্রকাশ হয়। কিন্তু তাদের কেউ জিজ্ঞাসাবাদও করেননি। ফলে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ ছিল সেটা থেকে জামিনও পেয়ে যান তিনি।

গত ফেব্রুয়ারিতে গ্রেফতারের পর আলোচনায় আসেন যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া। বিদেশ যাওয়ার সময় র‌্যাব তাকে গ্রেফতার করে। এরপর বেড়িয়ে আসে হোটেল ওয়েস্টিনে পাপিয়ার রঙ্গমঞ্চের নানান তথ্য। ঐ রঙ্গমঞ্চে আসা-যাওয়া করতেন এমন তালিকায় রাজনীতিবিদসহ সরকারি অনেক কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী ছিলেন। মিডিয়ায় বহু মানুষের নামও উঠে আসে। কিন্তু তদন্তে এখনো কারো নামই জানা যায়নি।

নরসিংদীর এই নারী নেত্রী কীভাবে এত প্রভাব বিস্তার করলেন, কারা তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন তা নিয়ে মিডিয়ায় আলোচনা হলেও তদন্তকারীরা কাউকে আইনের আওতায় আনেননি। এমনকি সুবিধাভোগীদের কাউকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। ফলে কিছুদিন পরই থেমে গেছে আলোচনা। ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছেন মদতদাতারা। অনেকেই বলছেন, এই কারণেই নতুন করে সাহেদদের জন্ম হচ্ছে।

এছাড়াও বেসিক ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে যারা টাকা লুটে নিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কিছু ব্যবস্থা হলেও পেছনে থেকে যারা কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই প্রবণতা শুধু যে এখন তা নয়। এর আগে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালে পূর্বাণী হোটেলের মালিক মাহবুবুর রহমান জয়নাল ও তার সঙ্গে জান্নাতুল ফেরদৌস নিকিতা গ্রেফতার হন। তাদের কাছ থেকে ইয়াবাসহ নানা ধরনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। কাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে জয়নাল এসব কর্মকাণ্ড চালিয়েছে তাদের নাম কখনো জানা যায়নি। এমনকি ইয়াবা সম্রাট খ্যাত আমিন হুদা গ্রেফতারের পর বেশ আয়েশেই হাসপাতালে দিন কাটিয়েছেন। গ্রেফতারের পর তিনি কীভাবে কাদের সুপারিশে দীর্ঘসময় হাসপাতালে থেকেছেন সে তথ্য জানা যায়নি। নানা রোগে ভোগা আমিন হুদা কারাবন্দি থাকা অবস্থায় মারা গেছেন।

এর আগে বিএনপির শাসনামলেও ছিল একই অবস্থা। অঘোষিত ডন হয়েছিলেন গিয়াসউদ্দিন আল মামুন। এছাড়া হারিছ চৌধুরী, এম এ এইচ সেলিমসহ (সিলভার সেলিম) অনেকেই সরকারি প্রভাব খাটিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। যদিও বিএনপির শাসনামলে তাদের কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। মামুন গ্রেফতার হলেও হারিছ চৌধুরী পালিয়ে যান। তিনি এখন কোথায় আছেন কেউ জানেন না। শুধু নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু এমপি থাকা অবস্থায় একবার গ্রেফতার হন। এছাড়া বিএনপির সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তেমন কাউকেই গ্রেফতার করেনি। একের পর এক বিচারহীনতার সংস্কৃতি তাদের দানব বানিয়েছিল।

আমাদের দেশে রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক কোনো প্রতিষ্ঠানই গড়ে উঠেনি। ফলে যারা যখন ক্ষমতায় থাকেন তারা কিছু সাহেদ-পাপিয়া তৈরি করেন। একটা ঘটনা ধরা পড়ার পর আলোচনা শুরু হয়। এরপর সব থেমে যায়। এই অবস্থা আসলে শুরু হয়েছে সামরিক শাসনামল থেকে। এখন শুধু গডফাদারদের বিচার করলেই হবে না, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ব্রিটেনে একজন পুলিশ অফিসার যে কোনো তদন্তের প্রয়োজনে যেখানে দরকার সেখানে যেতে পারেন। কিন্তু আমাদের দেশে একজন পুলিশ অফিসার চাইলেই সব কিছুর তদন্ত করতে পারেন না। ফলে যতদিন না প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে ততদিন এগুলো চলতেই থাকবে।’

সর্বশেষ

প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন

পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক পত্রে পুতিন বলেন ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বের...

আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব উদযাপন করলো রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন

রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, আল খারজ বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ও আল কাসিম বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন...

পর্যবেক্ষণে গিয়ে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড ও সুইস পর্যবেক্ষকরা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের ও সুইস পর্যবেক্ষক দল।দুপুর একটার দিকে উপজেলার কয়েকটি ভোট...

ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে ট্রেনে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি নেতারা

নির্বাচনের আগে দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশি সংস্থা, মিডিয়া ও বিভিন্ন দেশের মনোযোগ নেয়ার উদ্দেশ্যই ট্রেনে আগুন দেয়া হয় বলে জানায় ডিবি। বিএনপি...