১৯২৪ সাল কোনো গোরা অফিসারের সাজানো শহর পাকশীতে সদ্য রেলওয়ের চাকরি নিয়ে এসেছেন যোগীন্দ্র চন্দ্র দাসগুপ্ত। লোকটা সম্ভবত এ অঞ্চলকে ভালোবেসেছিলেন। শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক এই কর্মকর্তা দেখলেন, সবকিছু থাকলেও শিক্ষাদীক্ষায় অগ্রগতির অভাব এখানে।
প্রতিষ্ঠা করলেন ‘পাকশী মিডল হাই ইংলিশ স্কুল’। এই স্কুলই পরবর্তীতে ‘চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠ’ নাম ধারণ করে শিক্ষার আলো ছড়িয়েছে বাংলায়, আজও স্বমহিমায় উজ্জ্বল।
এই স্কুলের সর্বপ্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন মনীন্দ্র চন্দ্র ঘোষ, যিনি ছিলেন প্রখ্যাত ভাষাবিদ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের ছাত্র। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ‘চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠ’ ভারতবর্ষের সেরা ৩৭ টি স্কুলের তালিকায় জায়গা করে নেয়।
চন্দ্রপ্রভার ছাত্ররা ছড়িয়ে আছেন দেশে-বিদেশে। তাঁরা কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, উচ্চপদস্থ আমলা, স্থপতি, ক্রীড়াবিদ হিসেবে সমগ্র ভারতবর্ষে পরিচিত।
পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক শঙ্খ ঘোষ, কলকাতা কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র প্রশান্ত কুমার চট্টোপাধ্যায়, পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়ের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল গফুর এবং দেশ-বিদেশের অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ এখানকার ছাত্র। পাকিস্তান গেমসেও এই স্কুলের ছাত্ররা ছিল পরিচিত মুখ। বাংলাদেশের প্রায় সকল সরকারি অফিসেই এখানকার ছাত্র পাওয়া যায়।
ঐতিহ্যের চন্দ্রপ্রভা এখন ভগ্নপ্রায়। ঈশ্বরদীর নতুন প্রজন্ম এই স্কুল সম্বন্ধে জানে খুব কম। কিন্তু চন্দ্রপ্রভার অর্জনের সামনে অধুনা ঈশ্বরদীর স্কুলগুলোর অর্জন কিছুই না, একদমই সামান্য।