জরজেজ মিয়া রংপুর শহরের মুন্সীপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯২৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা এ.কে.এম মোতাহের আলী, মাতা-আতিকা বেগম এবং পত্নী সুফিয়া খাতুন ওরফে হোসেনী বেগম (রানু)। দুই ভাই বোনের মধ্যে জররেজ মিয়া প্রথম। অল্পবয়সে পিতৃহীন হন তিনি। অভিভাবক হিসেবে পাশে দাঁড়ান পিতৃব্য আজহার আলী। পড়ালেখা শুরু করে পরবর্তীতে উচ্চতর বি.এ. ডিগ্রী লাভ করেন তিনি। গতানুগতিক লেখাড়ার গন্ডীতে মেধা ও মননকে আবদ্ধ না রেখে স্বাধীনচেতা মনোভাবের পরিচয় দেন আইনপড়ার মাধ্যমে। তিনি ১৯৪৫ সালের দিকে আইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আইন পেশায় যুক্ত হন। তবে ছাত্রাবস্থায় তিনি ছাত্র রাজনীতির একজন নামকরা কর্মী ছিলেন। ২৫শে মার্চ বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসের এক কালো দিবস।
পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর জিঘাংসা চরিতার্থ করতে প্রথম শিকার হন রংপুরের প্রাণপ্রিয় মানুষ জররেজ মিয়া। ২৭শে মার্চ সকাল ১১টায় মুন্সীপাড়ার বাসা থেকে হানাদার মিলিটারীরা ধরে নিয়ে যায় জররেজ মিয়াকে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে। সেখানে তিন চার দিন ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। অতঃপর ৩রা এপ্রিল মধ্যরাতে আরো দশজনের সাথে দখিগঞ্জ শ্মশানে গুলি করে হত্যা করা হয় জররেজ মিয়াকে। তাজা রক্তে রঞ্জিত হয় শ্মশানের মাটি। মাত্র ৪৭ বছর বয়সে হানাদারবাহিনী নিষ্ঠুরভাবে খুন করলো রংপুরের একজন দেশপ্রেমিক জররেজ মিয়াকে।
৪ঠা এপ্রিল লাশ আনা হয়। কেরামতিয়া মসজিদ চত্বরে জানাজা শেষে তাঁকে ঐ মসজিদের পাশেই সমাধিস্থ করা হয়। চিরতরে নির্বাপিত হলো একটি নক্ষত্র। অমরত্মে শ্রদ্ধা শহীদ জররেজ মিয়ার স্মৃতির উদ্দেশ্যে। জরজেজ মিয়ার মত অনেকের মহান ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। তাঁর মহান আত্মত্যাগ ও অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ রংপুর পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আফজাল (১৯৮৬) সালে ও পৌর পরিষদ রংপুরের প্রধান একটি সড়কের একাংশ (ডিসির বাসভবন থেকে রামমোহন ক্লাব পর্যন্ত) তাঁর নামে নামকরণ করেন। তাছাড়াও তাঁর নামে একটি মার্কেটের নাম রাখা হয়েছে। মুন্সিপাড়ায় তার পৈতিক জায়গায় শহীদ জরজেজ ব্যায়ামাগার আজো আছে। তাঁর কথা রংপুরের মানুষের মুখে মুখে উচ্চারিত হয় আজো। তাঁর স্মৃতি চীর স্বরণীয় হয়ে থাকবে অনন্তকাল। কেরামতিয়া জামে মসজিদের পাশে চীর নিদ্রায়শায়িত আছেন ইয়াকুব মাহফুজ আলী জরজেজ মিয়া। মসজিদের জায়গার সামনের বিশাল অংশ ওয়াকফ করে দেয়া তাদেরই। উল্লেখ্য এ ওয়াই মাহফুজ আলী জরজেজ মিয়া নবিউল্লাহ পান্নার ভগ্নীপতি ছিলেন।
সে রাতে দখিগঞ্জ শ্মশানে সৈন্যদের হাতে যারা শহীদ হন তারা হলেন –
১) শহীদ এ্যাডঃ ইয়াকুব মাহফুজ আলী (জররেজ) সকলের প্রিয় জররেজ ভাই, ২) মোহাম্মদ মহরম, ৩) শ্রী গোপাল চন্দ্র, ৪) উত্তম কুমার অধিকারী, ৫)দুলাল মিয়া, ৬) রফিক আলী, ৭) সতীশ হাওলাদার, ৮) দুর্গা দাস অধিকারী ও আরো দু’জন যাদের নাম পাওয়া যায়নি।
ঐ দিন অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি হচ্ছেন রংপুরের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব প্রয়াত এ্যাডঃ রথীশ চন্দ্র ভোমিক বাবু সোনা ও সাংবাদিক সুশান্ত ভৌমিক দাদার পিতা তাজহাটের দীনেশ চন্দ্র ভৌমিক। যিনি এলাকায় মন্টু ডাক্তার নামে পরিচিত ছিলেন।
জরজেজ মিয়ার ছবিটি মরহুম এ.কে.এম নাতেক চাচার সন্তান তারেক বাপ্পী ভাইয়ের সংগ্রহশালা থেকে নেয়া। রাজা রামমোহন মার্কেটের রাজা রামমোহনের ছবিটিও চাচার দেয়া। ফলকে আজও শোভা পাচ্ছে তার নাম।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment