সাম্প্রতিক শিরোনাম

বিশ্বের দ্রুততম মানব ক্যালকুলেটর

দৌড়ের ক্ষেত্রে উসেইন বোল্ট যেমন, অঙ্কের ব্যাপারে নীলকান্ত ভানু প্রকাশ ঠিক সেরকম। মাথার মধ্যে অঙ্ক কষার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানশিপে ভারতের হয়ে প্রথম স্বর্ণ পদক জয় করেছেন ২০ বছর বয়সী নীলকান্ত ভানু প্রকাশ।

তিনি বলছেন, অঙ্ক একটা বিশাল মানসিক স্পোর্ট এবং অঙ্ক নিয়ে মানুষের ভয় দূর করাই তার জীবনের মূল লক্ষ্য। সবাই তাকে ডাকে ভানু নামে।

সব সময় সংখ্যার কথা তার মাথায় ঘোরে এবং তিনি এখন বিশ্বের দ্রুততম মানব ক্যালকুলেটর। তিনি মনে মনে অঙ্ক করতে পারার বিষয়টিকে স্প্রিন্ট বা দৌড় প্রতিযোগিতার সাথে তুলনা করেন।

আপনি যদি খুব দ্রুত দৌড়তে পারেন কেউ আপনাকে কোনরকম প্রশ্ন করবে না, কিন্তু মনে মনে অঙ্ক করতে পারলে তা নিয়ে অনেকের মাথায় অনেক প্রশ্ন আসে।

আমরা উসেইন বোল্টের ক্ষমতা দেখে মুগ্ধ হই, যখন তিনি ৯.৮ সেকেন্ডে ১০০ মিটার দৌড়ান, তখন আমরা তা নিয়ে তাকে বাহবা দিই।

আমরা তখন কিন্তু বলি না, পৃথিবীতে তো গাড়ি আছে, বিমান আছে, অত দ্রুত দৌড়নোর কী দরকার!”

তিনি বলেন, ক্যালকুটের আছে বলে মাথা ব্যবহার করার দরকার নেই এর পেছনে তো কোনো যুক্তি থাকতে পারে না।

মানুষের দেহ যে অবিশ্বাস্য কিছু করতে পারে, এটা মানুষের জন্য একটা অনুপ্রেরণার ব্যাপার – দ্রুত অঙ্ক করতে পারা বা মাথা ব্যবহার করে হিসাব করতে পারাটাও একইভাবে দেখা উচিত।

ভানু অঙ্ক বিষয়ে অসাধারণ প্রতিভা নিয়ে জন্মেছে, কিন্তু তার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা মোটেও তেমন নয়। ভানুর যখন পাঁচ বছর বয়স তখন এক দুর্ঘটনায় মাথায় চোট পেয়ে এক বছর তাকে পুরো বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়। ওই সময়ই শুরু হয় মাথার ভেতর দ্রুত অঙ্ক করতে পারার ক্ষমতা তৈরিতে তার যাত্রা।

তিনি বলছেন, ভারতের এক মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে তিনি। কাজেই তার জীবনের লক্ষ্য হবার কথা পড়াশোনা করে একটা ভাল চাকরি জোগাড় করা, কিংবা একটা ব্যবসায় ঢোকা। শুধু অঙ্ক নিয়ে পড়ে থাকা তার মত পরিবারের ছেলের জন্য বিরল একটা অভিজ্ঞতা।

সংখ্যা নিয়ে তার আগ্রহ ও পারদর্শিতার কারণে ভানু এখন অঙ্ক নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি শেষ করতে যাচ্ছেন। 

এই প্রতিযোগিতায় জেতার জন্য বড় বড় প্রথম সারির প্রতিযোগীদের মত ভানু যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। তবে তিনি বলছেন, এটা টেবিলে বসে অনেক পড়াশোনা করে প্রস্তুতি নেবার মত সহজ নয়, তিনি মনে করেন এটা ”মস্তিষ্কের বড় একটা খেলা।

আমি প্রস্তুতির জন্য দ্রুত অঙ্ক করতে পারার বিষয়টা আয়ত্ত করার ওপর শুধু জোর দিইনি, আমি খুব দ্রুত সংখ্যা নিয়ে চিন্তার ক্ষমতা আয়ত্ত করেছি।

আমি খুব জোরে বাজনা ছেড়ে দিয়ে অঙ্ক অভ্যাস করি। অনেক সময় লোকের সাথে কথা বলার সময়, ক্রিকেট খেলতে খেলতে সংখ্যা নিয়ে ভাবি। কারণ মস্তিষ্কের গঠনই এমন যে সেটি একসাথে অনেকগুলো কাজ করতে সক্ষম।

আমি যখন কথা বলছি তখন একই সাথে আমার পাশ দিয়ে যতগুলো ট্যাক্সি চলে গেছে সবগুলোর নম্বর আমি বলে দিতে পারব। কিংবা ধরুন, আমি একজনের সাথে যখন কথা বলছি তখন কতবার তিনি চোখের পলক ফেলছেন সেটা আমি গুনতে থাকি। এভাবে মস্তিষ্ককে সবসময় খাটানো যায়।

যদিও রেকর্ড ভাঙতে তিনি ভালবাসেন, মজা পান। “দেখুন রেকর্ড ভাঙা বা রেকর্ড গড়া, কিংবা মাথার মধ্যে দ্রুত অঙ্ক করা এগুলো আসলে মানুষকে বোঝানোর একটা পথ যে পৃথিবীতে অঙ্কবিদদের প্রয়োজন আছে। তারা ফেলনা নয়। আর অঙ্কের মধ্যে কিন্তু একটা মজা আছে, সেই মজাটা যে ধরতে পারে সে অঙ্ক ভালোবাসে।

ভয়ের কারণেই অনেকে অঙ্ক পড়তে চায় না বলে তার মত। অনেকে মনে করে অঙ্ক পড়া ফ্যাশানেবল নয়।

আন্তর্জাতিক মঞ্চে এধরনের প্রতিযোগিতা কিন্তু অঙ্কের মজাকে তুলে ধরতে সাহায্য করে। চারটি বিশ্ব রেকর্ড করেছেন ভানু। অঙ্ক নিয়ে তার আরও অনেক অর্জন আছে। স্বভাবতই ভানুর পরিবার তাকে নিয়ে “রীতিমতো গর্বিত।

ভানু তার এই অর্জনের ব্যাপারে তাকে উৎসাহ দেবার জন্য পরিবারের প্রতি খুবই কৃতজ্ঞ।

প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা জেতার পর আমার কাকা বলেছিলেন চেষ্টা করো আরও দ্রুত হতে, জীবিত যে কাউকে হারিয়ে দেবার জন্য তৈরি হও।

সর্বশেষ

বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া সভাপতি ফারুকের প্রায় ১২০ কোটি টাকা ট্রান্সফার!

বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে বিশাল আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে! ক্রিকেট বোর্ডের প্রায় ১২০ কোটি টাকার ফান্ড আওয়ামী ঘরানার দুই ইয়েলো...

২০০৯ এর বিডিআর বিদ্রোহ এবং ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতি

"২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতীয় প্যারাশুট রেজিমেন্টের ৬ষ্ঠ ব্যাটালিয়নের মেজর কমলদীপ সিং সান্ধু সেদিন "স্পিয়ারহেড" বা অগ্রগামী বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি...

কি ঘটেছিলো বিডিআর বিদ্রোহে! নেপথ্য কাহিনি

আলোচিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কাহিনি আজও অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ বছরেও সেই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের সত্য কেউ জানতে পারেনি। কীভাবে কার স্বার্থে এবং...

পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে ছাত্রদলের যে পাঁচজনকে দেখা গেছে তারা হলেন- সাঈদ হোসেন...