নতুন করে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটায় চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলের রাজধানী উরুমকিতে ‘যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন করে ১৭ জন রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সেখানকার মানুষজনের চলাচলে কড়া বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছে।
জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, চীনে ৮৫ হাজারের কিছু বেশি কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়ে ৪,৬০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
অল্পসংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলেও বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে চীন। বাস্তবে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকে দেশটির অন্যান্য এলাকায় খুব কমসংখ্যক করোনাভাইরাসের রোগী পাওয়া গেছে। সংক্রমণ বা মৃত্যুর তালিকায় প্রথম ২০টি দেশ বা অঞ্চলের মধ্যেও নেই চীন।
এ পর্যন্ত মোট ১৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
স্বায়ত্তশাসিত জিনজিয়াং এলাকার মোট বাসিন্দা প্রায় ৩৫ লাখ। বেশ কয়েক মাস পর গত বুধবার থেকে সর্বশেষ সংক্রমণগুলো শনাক্ত করা শুরু হয়। এর পরেই ওই শহর থেকে সব বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। শহরটির সাবওয়ে চলাচলও স্থগিত করা হয়েছে।
পুরো শহরটিতে এখন থেকে ‘যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি’ থাকবে এবং দলগত সব ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে।”
নতুন লকডাউন আরোপ করা হয়েছে এবং যেসব বাড়িতে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, সেখানে ব্যাপকভাবে স্ক্রিনিং করা, যা পরবর্তী সময়ে শহরজুড়ে চলবে।
নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, একজনের বাড়ি থেকে আরেকজনের বাড়িতে যাতায়াত চলবে না, দলবদ্ধভাবে কিছু করা যাবে না।
এ ছাড়া অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ শহরের বাইরে বের হতে পারবে না। কেউ বের হতে চাইলে তাঁর প্রয়োজনের বিষয়টি যাচাই করে দেখা হবে।
জিনজিয়াংয়ে এই সপ্তাহে আরো ২৩ জনের শরীরে উপসর্গ দেখা গেছে বলে জানানো হয়েছে এবং ২৬৯ জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে চীন বেশ কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া, ব্যাপক হারে পরীক্ষা করার মতো যখন যেটি দরকার হয়েছে, চীন দ্রুত সেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
চীনে করোনাভাইরাসের বেশির ভাগ সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে উহান শহরে গত বছরের শেষে। এরপর বড় ধরনের সংক্রমণ দেখা গেছে বেইজিংয়ের একটি এলাকায় গত জুন মাসে। সেখানে ৩৩০ জন আক্রান্ত হলেও রোগটি ছড়িয়ে পড়ার আগেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
চীনের মূল ভূখণ্ডে শুক্রবার পর্যন্ত নতুন করে মাত্র ২২ জনের নতুন শনাক্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে ১৬ জনই উরুমকির বাসিন্দা। অপর দিকে ফ্লোরিডায় শনিবার ১০ হাজারের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।