সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়া নোভেল করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ গোটা বিশ্বকে এমন এক দূর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দিতে পারে, যা সাম্প্রতিক অতীতে কেউই দেখননি। বর্তমান পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে, সারাবিশ্বকে ভেদাভেদ ভুলে, এক হয়ে কাজ করার অনুরোধ জানান জাতিসংঘের মহাসচিব।
মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদফতর থেকে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের আর্থ-সামাজিক প্রভাব নিয়ে জাতিসংঘের একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন অ্যান্তনি। সেখানেই করোনা সংক্রমণ নিয়ে তাঁর উদ্বিগ্ন হওয়ার চিত্র ফুটে উঠে।
গুতেরেসের বরাতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানান, বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃতের সংখ্যা চিনের চেয়ে বেশি। মঙ্গলবারই আমেরিকায় মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়। শুধু মঙ্গলবারই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৮০০ জন মারা গেছেন। সারাইউরোপে মৃতের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে।
করোনায় আক্রান্তের নিরিখে আমেরিকাই এখনও পর্যন্ত শীর্ষে। বুধবার রাত পর্যন্ত আমেরিকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ৩ হাজার ৮৪৮। মৃত্যু হয়েছে ৪৪৮২ জনের। যেখানে চিনে করোনায় মারা গেছে ৩ হাজার ৩০৫ জন।
জাতিসংঘের মহাসচিব এদিন বলেন, ইউনাইটেডট নেশনস গঠিত হওয়ার পর থেকে কোভিড-১৯ আমাদের সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মুখে ফেলেছে। নোভেল করোনা ভাইরাস ধনেপ্রাণে মারছে। প্রাণের সঙ্গেই কেড়ে নিচ্ছে মানুষের জীবন-জীবিকা।
এখনও পর্যন্ত করোনার প্রভাব সবথেকে বেশি পড়েছে ইতালি ও স্পেনের উপর। গোটা ইউরোপে যেখানে ২৫ হাজার মৃত্যু হয়েছে, সেখানে একা ইতালিতেই মারা গিয়েছেন ১৩,১৫৫ জন। তার পরেই রয়েছে স্পেন। মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারের দিকে এগোচ্ছে। বুধবার রাত পর্যন্ত স্পেনে করোনার বলি ৯ হাজার ৫৩ জন।
জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৯ লক্ষ ১০ হাজার ৩৫২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লক্ষ ৯০ হাজারের অধিক মানুষ। বুধবার রাত পর্যন্ত মারা গেছেন ৪৫ হাজার ৪৯৮ জন।