শতাব্দীর ভয়াবহ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃত্যু থামছেই না। বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে। ভাইরাসটিতে ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় সাত লাখ। আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে ইতালি ও স্পেনের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। দেশ দুটিতে শত শত মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত পাওয়া খবরে এর আগের ২৪ ঘণ্টায় স্পেনে ৬৩৮ জন মারা গেছেন। ইতালিতে ৭৫৬ জন মারা গেছেন এবং মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭ হাজার ৬৮৯ জন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইরানসহ কয়েকটি দেশের অবস্থাও খারাপ। খবর বিবিসি, রয়টার্স, এনডিটিভি, আনন্দবাজার, ইন্ডিয়া টুডে, এপি, সিএনএন, গার্ডিয়ান ও আলজাজিরা।
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারস ডট ইনফো’র হিসাব অনুযায়ী- রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ৭ হাজার ৭৩৮ জন। এর মধ্যে ৩৩ হাজার ৫২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন এক লাখ ৫০ হাজার ৭৩২ জন। করোনাভাইরাসের ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় ওপরের সারির দেশগুলোর মধ্যে ইতালিতে ১০,৭৭৯, স্পেনে ৬,৬০৬ চীনে ৩,৩০০, যুক্তরাষ্ট্রে ২,৩৬৩, ইরানে ২,৬৪০ ও যুক্তরাজ্যে ১২২৮ জন মারা গেছেন।
ইতালিতে মৃতের সংখ্যা সাড়ে ১০ হাজার ছাড়াল : করোনাভাইরাসে ইতালিতে প্রাণহানির সংখ্যা ( রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত পাওয়া খবরে) ১০,৭৭৯ হাজার ছাড়িয়েছে। শনিবারের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে ২৪ ঘণ্টায় মৃতের তালিকায় যুক্ত হয়েছে ৮৮৯ জন। এর আগে শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ সংখ্যক ৯৭৯ জনের প্রাণহানি ঘটে।
রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত পাওয়া খবরে এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ইউরোপের আরেক দেশ স্পেনে মারা গেছে ৬২৪ জন। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬০৬ জনে।
ইতালিতে ৫১ চিকিৎসকের মৃত্যু : করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ভেঙে পড়েছে ইতালির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। ৯২ হাজারের বেশি করোনা আক্রান্তকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন দেশটির স্বাস্থ্যকর্মীরা। এর মধ্যে রোগীদের সুস্থ করে তোলার কাজে নিয়োজিত ছয় হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।
ভাইরাসটিতে চিকিৎসকদের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ জনে। ইতালির চিকিৎসক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ইতালিতে করোনাভাইরাসে চিকিৎসকদের মৃত্যুর তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। হঠাৎ করেই বেশ কয়েকজন চিকিৎসক মারা গেছেন। ইতালির স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুসারে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী চিকিৎসকদের প্রায় বেশির ভাগই ইতালির লম্বার্ডি অঞ্চলে কাজ করতেন। এছাড়া নেপলস, এমিলিয়া রোমাগনা ও মারচেতে এলাকায় কাজ করতেন।
করোনায় নিউজিল্যান্ডে প্রথম মৃত্যু : মহামারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিউজিল্যান্ডে প্রথম মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও নতুন করে আরও ৬৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫১৪। রোববার দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক অ্যাসলে ব্লুমফিল্ড জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৭০ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তার দেহে ইনফ্লুয়েঞ্জা ধরা পড়েছিল। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে ‘লকডাউন’ শুরু হয় নিউজিল্যান্ডে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ড আর্ডান দেশজুড়ে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেন।