জীবন বিনাশী বৈশ্বিক মহামারী করোভাইরাসে দুই শতাধিক দেশে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৭৭ হাজার ৪৫৯ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। মোট আক্রান্ত হয়েছে ২৫ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ৫ হাজার ৩৩৬ জন এবং নতুন আক্রান্ত ৭৩ হাজার ৯২৮ জন। সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৬ লাখ ৯০ হাজার ২১৯ জন।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার অন্যতম ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যে আজ ভোর পর্যন্ত এ চিত্র ফুটে উঠে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮৩ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা আট লাখ ১৬ হাজার ২৪০। মৃত্যু হয়েছে ৪৩ হাজার ৯২১ জনের। মৃতের হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইতালি। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ২৪ হাজার ৬৪৮। আর আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৮৩ হাজার ৯৫৭ জন।
মৃতের হিসাবে তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্পেন। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ২১ হাজার ২৮২। মোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ৪ হাজার ১৭৮।
ফ্রান্সে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়েছে। দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২০ হাজার ৮২৯ জনের। জার্মানিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৪৮ হাজার এবং মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ২৪ জনের। যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত ১ লাখ ৩০ হাজার ও মৃতের সংখ্যা ১৭ হাজার ৩৭৮।
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ হাজার ৯৮৫ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬৪৫ জনের। পাকিস্তানে আক্রান্ত ৯ হাজার ৫৬৫ এবং মৃত ২০১ জন।
এদিকে, করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দায় চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা মানুষের সংখ্যা এই বছর দ্বিগুণ বাড়তে পারে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, এই বছর ১৩ কোটি মানুষ নতুন করে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পড়তে পারে। ইতোমধ্যে এই সংকটে মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৩ কোটি ৫০ লাখ। পর্যটন রাজস্ব হারানো, প্রবাসীদের আয় পাঠানো কমে যাওয়া এবং ভ্রমণ ও মহামারি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিধিনিষেধের কারণে আয় কমে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
ডব্লিউএফপি বলছে, বর্তমানে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা মানুষগুলোর বেশিরভাগই নিম্ন এবং মধ্য আয়ের দেশগুলোর বাসিন্দা। খাদ্য সংকট বিষয়ক বৈশ্বিক রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৯ সালে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা সবচেয়ে বেশি মানুষ সংঘাত কবলিত দেশের। এদের সংখ্যা প্রায় সাত কোটি ৭০ লাখ। এর পরেই রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই সংকটে পড়া মানুষ। তাদের পরিমাণ তিন কোটি ৪০ লাখ। এছাড়া অর্থনৈতিক সংকটে পড়া আরও দুই কোটি ৪০ লাখ মানুষও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে।