মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী সেনা বিরোধী বিক্ষোভে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। এই নৃশংসতার মধ্যেও বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) দেশটির বিভিন্ন শহরে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে।
আর এই বিক্ষোভে সেনাবাহিনীর এলোপাতাড়ি গুলিতে আরও সাত বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। নিহতদের একজন ইয়াঙ্গুনের নর্থ ডাগন জেলার এবং বাকি ছয়জন সেন্ট্রাল টাউনের বলে ওই প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছে।
যখন মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে রণক্ষেত্রে অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশানাল, ঠিক তখনই এমন একটি ঘটনা ঘটলো দেশটিতে।
এতে বিক্ষোভকারীদের ওপর জান্তা সরকারের নৃশংসতা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
৩১ বছর বয়সী এক তরুণ নিহতদের মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে যেতে সাহায্য করেন। তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলাম।
বিশ্বাসই করতে পারছি না যে তারা এমনটা করতে পারে।দেশটির অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারর্স অ্যাডভোকেসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের এই হত্যাকাণ্ড ছাড়াও এর আগে আরও ৬০ জন নিহত হয়েছেন।
ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত আটক হয়েছেন দুই হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী।
মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
তবে চীন, রাশিয়া, ভারত ও ভিয়েতনামের ভেটোর কারণে পহেলা ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানকে ক্যু হিসেবে আখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়েছে পরিষদ।এর আগে গতকাল বুধবার (১০ মার্চ) রয়টার্সের প্রকাশিত ছবিতে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলির মুখে প্রাণ বাঁচাতে ছুটোছুটি করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
ইয়াঙ্গুনের নর্থ ডাগনে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ধর্মঘট পালনের সময় রেলকর্মীদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে সেনা মদদপুষ্ট নিরাপত্তা বাহিনী। ছত্রভঙ্গ করতে নির্বিচারে গুলি চালায় তারা।ম্যান্দালেতেও জান্তাবিরোধীদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ।
আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে দাওয়ে’ই শহরে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। সেনাবাহিনীর কঠোরতা সত্ত্বেও দমে যেতে রাজি নন আন্দোলনকারীরা। দিনদিন আরো ভয়াবহ হয়ে উঠছে ক্যু’বিরোধী বিক্ষোভ।জান্তাবিরোধীদের বিক্ষোভে দমনপীড়নের পাশাপাশি বিরোধী নেতাদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রেখেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
রয়টার্সের প্রকাশিত আরেকটি ভিডিওতে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি এনএলডির নেতা জার মারের বাসায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের রেইড দিতে দেখা যায়।
পরে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার রাজনৈতিক নেতাকর্মী আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করেছে সেনা সরকার।