রাশিয়া মিশরকে ২৫ বিলিয়ন ডলার ঋন দিবে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট নির্মানের জন্য। দাবা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের উৎপাদন ক্ষমতা হবে চারটি ১২০০ মেগাওয়াট এর প্লান্ট অর্থাৎ ৪,৮০০ মেগাওয়াট।
উল্লেখ্য বাংলাদেশের রুপপুরের উৎপাদন ক্ষমতা ২৪০০ মেগাওয়াট এবং খরচ $১২ বিলিয়ন ডলার।
রাশিয়া নিজের খরচে এই প্লান্ট করে দিলেও মিশরকে এই টাকা শোধ করতে হবে কিস্তিতে যেখানে সুদ দিতে হবে ৩%। এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু যদি বার্ষিক কিস্তি দিতে মিশর ব্যার্থ হয় তবে ১০ দিনের মধ্যে এটা না দিতে পারলে ১৫০% করে প্রতিদিন সুদ কাউন্ট হতে থাকবে। চিন্তা করে দেখুন কতটা ভয়ঙ্কর।
বাংলাদেশের সাথে চুক্তিতে পেনাল্টি ইন্টারেস্ট এমন শর্ত আছে কিনা আমার জানা নেই। আপনাদের কারো জানা থাকলে জানাবেন।
নমিনাল জিডিপি হিসাবে বাংলাদেশ মিশরের থেকেও বড় অর্থনীতির দেশ। বাংলাদেশের জিডিপি যেখানে ৩৪৮ বিলিয়ন সেখানে মিশরের ৩১০ বিলিয়ন।
কিন্তু ঋনের হিসাবে মিশরের অবস্থা ভয়াবহ খারাপ। দেশটির ঋন দেশটির জিডিপির থেকেও বেশি। প্রায় ১০৩%। আর বৈদেশিক ঋনের আকার ১০৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বৈদেশিক ঋন জিডিপির ১২.৩% এবং মোট ঋন ৩৮% এর মত। সেই হিসাবে বাংলাদেশের ক্রেডিট ওর্থিনেস মিশর থেকে অনেক ভাল। সেই হিসাবে ঋনের কিস্তি দিতে বাংলাদেশকে অতিতেও বেগ পেতে হয়নি ভবিষ্যতেও হবার কথা না যদি বর্তমান হারে ঋন পরিশোধ চলতে থাকে।
কিন্তু মিশরের জন্য এটা ভয়ঙ্কর শর্ত। কারন মিশরের রপ্তানি যেখানে ২৩ বিলিয়ন এর বিপরীতে আমদানি প্রায় ৬০ বিলিয়ন। তাদের বিওপি মাইনাস ১৬ বিলিয়নের বেশি। এরকম মুহুর্তে তারা অতিরিক্ত ২৫ বিলিয়নের ঋন নিবে এভাবে সেটা যথেষ্ট হুমকি স্বরুপ।
কিন্তু কথা হল, মিশর ঋন শোধ করতে পারুক আর না পারুক আমদের মাথা ব্যাথা নেই। আপাতত আমাদের নিজেদের নিয়েই ভাবা উচিত। কিন্তু কথা হল চীন এবং রাশিয়ার সাথে বিলিয়ন ডলারের বড় বড় চুক্তি করা হচ্ছে সেখানে ঋনের কিস্তি বাংলাদেশ কিভাবে পরিশোধ করবে সেই সব শর্ত নিয়ে আমাদের জানা দরকার।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গ্রেস পিরিয়ড ১০ বছর সহ ৩-৩.৫% এ ঋন নেয়া হলেও পেনাল্টি ইন্টারেস্ট নিয়ে পরিস্কার কিছুই মিডিয়াতে আসছে না। আর এজন্যই চিন্তাটা বেশি।