সাম্প্রতিক শিরোনাম

রণাঙ্গনে ২৪ এপ্রিলঃ চট্টগ্রামের করেরহাটে পাকবাহিনীর সাথে সংঘর্ষ-মোহাম্মদ হাসান

মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে ২৪ এপ্রিল ১৯৭১ঃ এদিন থেকে বাগেরহাটে গণহত্যার সূচনা হয়েছিলো। ১৬ ডিসেম্বরের পূর্ব পর্যন্ত ছোট বড় অর্ধশতাধিক গণহত্যার ঘটনা ঘটে তৎকালীন বাগেরহাট মহকুমায়।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এর তথ্য মতে, ভারতের হিলিতে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাকবাহিনী আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অবস্থান ছেড়ে পিছিয়ে গিয়ে পুনরায় সংঘবদ্ধ হয়।
পাকহানাদার বাহিনী সড়কপথে মাদারীপুর শহরে প্রবেশ করে। শহরে ঢুকেই কালবিলম্ব না করে স্থানীয় দোসরদের সহযোগিতায় এম.পি আসমত আলী খান ও ফনীভূষণ মজুমদারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং বহু বাড়িসহ দোকানপাট লুট করে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাট, বাঙালিপুর, টিয়রপাড়া ও মধুপুরে ক্যাম্প স্থাপন করে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের প্রস্তুতি চলে। এ সমস্ত ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের ১ মাস ১৫ দিন মেয়াদে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ‘ফ্ল্যাগ মিটিং’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে পাকিস্তানিরা বারবার ইপিআর বাহিনীকে তাদের হাতে সমর্পণ করার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু ভারতীয বিএসএফ-এর মেজর ভেদী, ক্যাপ্টেন ঘোষ ইপিআর সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানান।

রাঙামাটি থেকে মহালছড়ির থেকে আগত পাকবাহিনীর দুই কোম্পানি সৈন্যের সাথে ক্যাপ্টেন আফতাব কাদের ও লে. মাহফুজের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের কুতুবছড়ি নামক স্থানে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে পাকবাহিনীর প্রচুর ক্ষতি হয়।
পাকবাহিনীর একদল সৈন্য চিংড়ি নদী দিয়ে নানিয়ারচর বাজার হয়ে মহালছড়ির দিকে অগ্রসর হয়।
মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বানে পুলিশ সুপার নূরুল মোমিন খান (মিহির) ফরিদপুর পুলিশ লাইনের অস্ত্রাগার খুলে দেন। ফরিদপুরে মুক্তিবাহিনীর জন্য এটাই প্রথম অস্ত্র লাভ।

ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে করেরহাট নামক স্থানে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সাথে পাকসেনাদের প্রতিহত করেন।

বৃটিশ পার্লামেন্ট শ্রমিকদলের সদস্য উড্রো ওয়াট বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপক হত্যার প্রতিবাদে আমরা সবাই এতো চুপচাপ কেন? পূর্ব পাকিস্তানে যেসব ঘটনা ঘটছে তা অত্যন্ত জঘন্য। হিটলার ও স্ট্যালিনের পর এ ধরনের হত্যাকান্ডের কথা আর কখনো শোনা যায়নি। আমরা এ বিষয়ে কি করছি? জেনারেল ইয়াহিয়াকে এখনও আমরা সাহায্য দিচ্ছি। সারাদেশ উজাড় করার বিষয়টি মোটেই ঘরোয়া ব্যাপার নয়।

ঢাকার মিরপুরে দেওয়ান ওয়ারেসাত হোসেন খানের সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় মো. সামীউদ্দিন খানকে আহ্বায়ক করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট ‘শান্তি কমিটি’ গঠিত হয়। এ সভায় উপস্থিত ছিলেন ‘কেন্দ্রীয় শান্তি’ কমিটির আবুল কাসেম, মাহমুদ আলী, আবদুল জব্বার খদ্দর, মেজর আফসারউদ্দিন প্রমুখ।
শান্তি কমিটির ১৮টি ইউনিট আহ্বায়কের নাম ঘোষনা করা হয়। আহ্বায়করা হচ্ছেন:
তেজগাঁও (পূর্ব) মো. ফজলুর রহমান,
ধানমন্ডি – এস.এম হাবিবুল হক,
নারায়ণগঞ্জ (শহর) – এএসআই সরদার,
দিলখুশা – মো. মনসুর আলী,
জোয়ার সাহারা – আলী আহসান,
শরাফতগঞ্জ – গিয়াসউদ্দিন আহমদ,
খিলগাঁও – ড. আইয়ুব আলী,
নবীনগর (কুমিল্লা) – মৌলবী সেকেন্দার আলী,
জয়দেবপুর – আবদুল মজিদ সরকার,
জয়দেবপুর (থানা) – মো. মস্তান খান,
রেকাবীবাজার – ইদ্রিস বেপারী,
মোহাম্মদপুর – দেওয়ান ওয়ারেসাত আলী,
দিলু রোড – জিআন,
নিউ ইস্কাটন – মজিবুর রহমান,
ধানমন্ডি (পূর্ব) – এম.এ খালেক,
মহাখালী – এ.কে.এম আবদুল্লাহ,
মিরপুর – মো. শফিউদ্দিন খান ও
শাজাহানপুর – এম.এ খালেক।
সরকারি এক হ্যান্ড আউটে ঢাকা শহরের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলা হয়, নিউমার্কেট, বায়তুল মোকাররমসহ সমস্ত জায়গায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। কোথাও কোনো অস্বাভাবিকতা নেই। প্রদেশের সর্বত্র সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যথারীতি কাজ চলছে। সব ব্যাপারেই জনগণসহায়তা করছে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকা থেকে দুষ্কৃতকারীদের উচ্ছেদ করে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করায় জনগণের মধ্যে পুরোমাত্রায় আস্থা ফিরে এসেছে।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
সম্পাদনাঃমোহাম্মদ হাসান, সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

সর্বশেষ

বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া সভাপতি ফারুকের প্রায় ১২০ কোটি টাকা ট্রান্সফার!

বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে বিশাল আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে! ক্রিকেট বোর্ডের প্রায় ১২০ কোটি টাকার ফান্ড আওয়ামী ঘরানার দুই ইয়েলো...

২০০৯ এর বিডিআর বিদ্রোহ এবং ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতি

"২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতীয় প্যারাশুট রেজিমেন্টের ৬ষ্ঠ ব্যাটালিয়নের মেজর কমলদীপ সিং সান্ধু সেদিন "স্পিয়ারহেড" বা অগ্রগামী বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি...

কি ঘটেছিলো বিডিআর বিদ্রোহে! নেপথ্য কাহিনি

আলোচিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কাহিনি আজও অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ বছরেও সেই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের সত্য কেউ জানতে পারেনি। কীভাবে কার স্বার্থে এবং...

পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে ছাত্রদলের যে পাঁচজনকে দেখা গেছে তারা হলেন- সাঈদ হোসেন...