সাম্প্রতিক শিরোনাম

২৫ মার্চ ১৯৭২ঃ খালেদ মোশাররফের একাত্তরের স্মৃতিচারণ

২২ মার্চ আমি ঢাকা ছিলাম। হটাত আমাকে ৪ বেঙ্গল কুমিল্লায় বদলী করা হল। ২৪ মার্চ আমি যোগদান করলাম এবং আমার সিও লেঃ কর্নেল খিজির হায়াতের সাথে দেখা করলাম। তিনি আমাকে শমশের নগর যেতে বলেন। আমার তখনই কিছু একটা সন্দেহ হয়েছিল। তা ছাড়া একজন জুনিয়র বাঙ্গালী অফিসার আমাকে বুঝালেন এত সিনিয়র অফিসার সেখানে যাওয়ার দরকার কি জুনিয়র কেউ গেলেই তো পারে।

এ প্রশ্ন আমি খিজির হায়াতকেও করেছিলাম। সে আমার মুখের দিকে চেয়ে দেখল। আমি কিছু একটা হতে যাচ্ছে তা বুঝতে পারছিলাম কারন নতুন আসা পাকিস্তানী সৈন্যদের সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন এলাকায় পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছিল। গত বছর আমি বঙ্গবন্ধু এবং ওসমানীর সাথে দেখা করেছিলাম। তখন অনেক কথা হয়েছিল। কিন্তু তারা এত বড় ধরনের আক্রমন করবে তা কখনও ভাবিনি। খিজির হায়াতের কম্পমান গলা থেকে বিষয়টি কিছু আচ করেছিলাম। তিনি জানান সেখানে একটা বাহিনী রাখা আছে। আমি তার কাছে একজন জুনিয়র অফিসার চাইলাম। তিনি আ মঞ্জুর করেন। শমশের নগর রওয়ানা হওয়ার আগে আমি সেখানকার সব বাঙ্গালী অফিসারের সাথে কথা বলেছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এর আগে আরেকটা কোম্পানি পাঠানো হয় অনুশীলনের নাম করে। সে কোম্পানির অধিনায়ক ছিলেন সাফায়েত জামিল।

যাত্রা পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে স্থানীয় লোক আমাদের বাধা দেয়। তারা আমাদের প্রশ্ন করে আমরা কেন এখনও বসে আছি। আমি তাদের বলি সময়মত তোমরা আমাদের তোমাদের পাশে দেখবে। আমি সাফায়েতকে সাবধান করে দিয়ে শমশের নগর রওয়ানা হয়ে যাই। ২৫ তারিখ আমরা শমশেরনগর পৌঁছে অবস্থান নেই। সেদিন কিছু ঘটেনি। আমি ২৬ তারিখ কলকাতা বেতারের খবর শুনে জানতে পারি তাদের আক্রমনের কথা। আমি কুমিল্লায় ওয়ারলেস করি কিন্তু কাউকে পেলাম না। বিকেলে একজন খবর নিয়ে আসে এখানে ইপিআর এর কোন পোস্ট নেই আছে পাঞ্জাব রেজিমেন্ট এর। তাদের একটি গাড়ী বাজারে দেখেছে আমার লোক তাদের আমার সাথে দেখা করার জন্য সংবাদ পাঠালাম। সে ইউনিটের অধিনায়ক ছিলেন এক পাঞ্জাবী ক্যাপ্টেন। সেই ক্যাপ্টেন আমার সাথে দেখা করতে আসলো তার হাতে স্টেনগান। তার সাথে কথা অলে জানলাম তারা আছে মৌলভীবাজারের কাছে।

আমাদের শমশের নগর আসতে মৌলভীবাজার হয়ে আসার নির্দেশ ছিল এবং আমরা তা না করে কাচা রাস্তায় শমশের নগর চলে আসি। আমরা যদি মৌলভীবাজার হয়ে আসতাম তবে আমাদের পথেই হামলা করে তারা শেষ করে দিত। তারা চলে যাওয়ার পর বসলাম ওয়ারলেস সেটের সামনে। ওয়ারলেসে সাফায়েতকে পেলাম তাকে আবারো সতর্ক করে দিলাম। তাকে জানাই আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফিরে আসছি। এর মধ্যেই ৪ বেঙ্গলের বাকী সৈন্য নিয়ে খিজির হায়াত ব্রাহ্মণবাড়িয়া চলে এসেছে। আমি আর অপেক্ষা করতে পারলাম না ক্যাপ্টেন মাহবুবের সাথে এ বিষয়ে অনেক আলাপ করলাম। আমি ব্রাহ্মনবাড়িয়া রওয়ানা হলাম। আমি সাফায়েতকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বললাম। আসার পথে অসংখ্য ব্যারিকেড পড়েছে সে গুলি সরিয়ে আসতে আমাদের দেরী হচ্ছিল।

এর মধ্যেই সাফায়েতের সাথে বার বার যোগাযোগ করছিলাম। সাফায়েত ভোরে জানালো সকাল ১০ টায় খিজির হায়াত মিটিং ডেকেছে। আমি কাছাকাছি আসতেই সাফায়েতকে আক্রমনের আদেশ দেই। সকাল নয়টায় সাফায়েত সাফল্য এর সহিত খিজির হায়াত এবং অপর দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করে ফেলে। এর পর সাফায়েত বাংলাদেশের পতাকা উরিয়ে দেয়। আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌছি দুপুরে। সেখানে পৌঁছে আমি ৪ বেঙ্গলের কমান্ড গ্রহন করি এবং স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়ে দেই।

সর্বশেষ

বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া সভাপতি ফারুকের প্রায় ১২০ কোটি টাকা ট্রান্সফার!

বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে বিশাল আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে! ক্রিকেট বোর্ডের প্রায় ১২০ কোটি টাকার ফান্ড আওয়ামী ঘরানার দুই ইয়েলো...

২০০৯ এর বিডিআর বিদ্রোহ এবং ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতি

"২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতীয় প্যারাশুট রেজিমেন্টের ৬ষ্ঠ ব্যাটালিয়নের মেজর কমলদীপ সিং সান্ধু সেদিন "স্পিয়ারহেড" বা অগ্রগামী বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি...

কি ঘটেছিলো বিডিআর বিদ্রোহে! নেপথ্য কাহিনি

আলোচিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কাহিনি আজও অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ বছরেও সেই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের সত্য কেউ জানতে পারেনি। কীভাবে কার স্বার্থে এবং...

পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে ছাত্রদলের যে পাঁচজনকে দেখা গেছে তারা হলেন- সাঈদ হোসেন...