আমার আবার জন্মোৎসব কীরে?

সাম্প্রতিক সংবাদ
মুনতাহা মিহীর
Sponsored

জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ ও সেই সময়কার ছাত্রনেতারা। সবাই বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘায়ু ও কল্যাণ কামনায় প্রার্থনা করেন। বঙ্গবন্ধুও মোনাজাতে শরিক হন। সেদিন বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শুভেচ্ছা কার্ড করেছিল আর সংবাদপত্রগুলো তাদের প্রভাতী দৈনিকে বিশেষ সংখ্যা বের করেছিল।

বাংলার মানুষ যখন বেঁচে থাকার লড়াই করছিল, স্বাধীন হওয়ার স্বপ্ন দেখছিল, স্বাধীন হয়ে পুনর্গঠনের সংগ্রামে নেমেছিল— তখন মানুষের ভাবনাতেই কাটতো বঙ্গবন্ধুর দিনক্ষণ। জন্মদিন নিয়ে ভাবার সময় কোথায়! ওই সময়কার প্রতিবেদনের বলা হচ্ছে, এ যেন নেহায়েত কোনও ব্যক্তির আমন্ত্রণ নয়। যেন ছিল এক মহাসাগরের আহ্বান। এসময় উপস্থিত সবাই বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দেয় ফুল আর গলায় পরিয়ে দেয় মালা।

আপামর জনগণের শুভেচ্ছা নেওয়ার সময় বঙ্গবন্ধুর পরনে ছিল লুঙ্গি আর সাদা পাঞ্জাবি। সার্থক বাংলার সার্থক প্রতিচ্ছবি যেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালে জন্মদিনগুলোর পত্রিকায় প্রকাশিত ছবিতে সেসব স্পষ্ট ফুটে ওঠে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ৫৩তম জন্মবার্ষিকীতে তৎকালীন পিজি হাসপাতালে অসুস্থ পিতাকে দেখতে যান।

তখন বঙ্গবন্ধুর বাবা ৯৩ বছর বয়সী শেখ লুৎফর রহমান পিজি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ছেলেকে কাছে পেয়ে তাঁর জন্য দোয়া করতে থাকলেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর কাছে এই দোয়া কামনা করেন যে, বাংলার মানুষকে তিনি যেন সুখি দেখে মরতে পারেন।

আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর নেতারা বঙ্গবন্ধুকে অভিবাদন জানায় তাদের পক্ষ থেকে প্রিয় নেতাকে মালা পরিয়ে। মালা পরান প্রধান গণপরিষদ সদস্য আবদুর রাজ্জাক ও শহর আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রশ্ন ফজলুর রহমান। তারা জাতির জনককে একটি রৌপ্যনির্মিত নৌকাও উপহার দেন। বাংলাদেশ যুব সংঘ জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশিত একটি পুস্তিকা বঙ্গবন্ধুকে উপহার দেন। এ সময় দোতলার রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন শেখ রাসেল, বেগম ফজিলাতুন নেছা, ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

আরও পড়ুন….

বঙ্গবন্ধু তার পরিবারে যেটুকু সময় দিতে পারতেন সেই সময়টি তিনি কখনও সন্তান, কখনও পিতা, কখনও প্রিয়তম স্বামী। জন্মদিনগুলোতে পুরো দেশের মানুষ যেমন উচ্ছ্বাস নিয়ে তাকে অভিনন্দন জানাতে আসতো তেমনি পরিবারের সদস্যরাও সারাদিন অপেক্ষা করতো কখন শেখ মুজিব বাসায় সময় দিতে পারবেন।

শেখ লুৎফর রহমান ছেলের ঐকান্তিক বাসনার জবাবে বলেন, তুমি যাতে বাংলার মানুষের সেবা করতে পারো সেই দোয়া চিরদিন করেছি। তিনি ছেলের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলেন, পাকিস্তানের কারাগারে বছরের পর বছর কাটিয়ে তোমার মাথার চুল সাদা হয়ে গেছে। প্রত্যুত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমার বয়স তো ৫৩।’

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাঁর প্রথম জন্মদিনে আগত শত শত অনুরাগী দেখে উদ্বেলিত হয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার আবার জন্মোৎসব কীরে? আয় আয় তোরা আমার কাছে আয়।’

Sponsored
Leave a Comment

সর্বশেষ

রাওয়ালপিন্ডিতে বৈঠক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা

ঢাকা, ২৪ আগস্ট ২০২৫: পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. ফাইজুর…

August 24, 2025

বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া সভাপতি ফারুকের প্রায় ১২০ কোটি টাকা ট্রান্সফার!

বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে বিশাল আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে! ক্রিকেট বোর্ডের…

April 24, 2025

২০০৯ এর বিডিআর বিদ্রোহ এবং ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতি

"২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। ভারতীয় প্যারাশুট রেজিমেন্টের ৬ষ্ঠ ব্যাটালিয়নের মেজর কমলদীপ সিং সান্ধু সেদিন "স্পিয়ারহেড"…

February 26, 2025

কি ঘটেছিলো বিডিআর বিদ্রোহে! নেপথ্য কাহিনি

আলোচিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কাহিনি আজও অনুদ্ঘাটিত রয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৫ বছরেও সেই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের…

December 29, 2024

পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…

September 21, 2024

২০২৩ এর সফল ফ্রিল্যান্সার অ্যাওয়ার্ড পেলেন সাইমন সাদিক

সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…

March 4, 2024
Sponsored