১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর সদর থানার বাগোয়ান ইউনিয়ন বৈদ্যনাথতলা গ্রামের ঐতিহাসিক আম্রকাননে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। আর এই কারণেই এই দিনে মুজিবনগর দিবস পালন করা হয়। আর এই মুজিবনগর সরকার স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মাইল ফলক।
মেহেরপুর সেসময় ছিল মুক্ত এলাকা। এর আগে ১০ এপ্রিল ১৯৭০-এর নির্বাচনে বিজয়ী এমএনএ ও এমপিদের কুষ্টিয়া জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অনুষ্ঠিত অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা ও পাক হানাদার বাহিনীকে স্বদেশ থেকে বিতাড়িত করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত এবং নির্দেশিত পথে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জনের জন্য এই অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়। এটি ছিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামকে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী অর্থমন্ত্রী এবং এইচএম কামরুজ্জামানকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। কর্নেল এম এ জি ওসমানীকে মুক্তিযুদ্ধের ও অস্থায়ী সরকারের প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরান তেলাওয়াতের পর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও নবগঠিত সরকারকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় এবং শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান সেনাপতি ভাষণ দেন। এমনিভাবেই মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য জনগণকর্তৃক নির্বাচিত সংসদের নেতৃত্বে একটি সাংবিধানিক সরকারের বিশ্ববাসীর সামনে আত্মপ্রকাশ করে। সারা বিশ্বের গণমাধ্যম এই সংবাদ গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করে।
বাংলাদেশের প্রথম এই সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জনের অদম্য আকাঙ্খায় বিপুল সংখ্যক জনসাধারণ, মুক্তিযোদ্ধা ও দেশি-বিদেশি সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার এর শপথ গ্রহণের স্থান হিসেবে মুজিবনগর ঐতিহাসিকভাবে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। শপথ গ্রহণের স্মৃতিকে অম্লান করে ধরে রাখার উদ্দেশ্যে শপথগ্রহণের স্থানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে।
ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ স্থানের আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলার লক্ষ্যে উক্ত কমপ্লেক্সে একটি মানচিত্রের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সেক্টরকে দেখানো হয়েছে। এই কমপ্লেক্স মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলীর স্মারক ম্যূরাল স্থাপন করা হয়েছে। সার্বিকভাবে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স, ঐতিহাসিক আম্রকানন, ঐতিহাসিক ছয় দফার রূপক উপস্থাপনকারী ছয় ধাপের গোলাপ বাগান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এক জীবন্ত প্রদর্শন হিসাবে বিবেচিত হবার দাবী রাখে।
মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্সের ভিতরের অংশে মুক্তিযুদ্ধকালীন কিছু ঐতিহাসিক ঘটনার ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। স্মৃতি কমপ্লেক্সের বাইরের অংশে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ, মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ এবং পাকিস্থানি বাহিনীর আত্নসমর্পণ এর দৃশ্যসহ আরও ঐতিহাসিক ঘটনার ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত উক্ত ভাস্কর্যগুলি যেকোন বিদগ্ধ পর্যটককে আকর্ষণ করবে। মুক্তিযুদ্ধকালীন বিভিন্ন সেক্টরের অবস্থান বাংলাদেশের মানচিত্রে প্রদর্শন করে মানচিত্রটি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরস্থ মূল আঙ্গিনায় স্থাপন করা হয়েছে। সুদৃশ্য এ মানচিত্রটি মুক্তযুদ্ধকালীন বিভিন্ন সেক্টরের অবস্থান ও উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলী সম্পর্কিত এক প্রমাণ্যচিত্র।
লেখকঃ মোহাম্মদ হাসান, সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment