মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে ২৬ এপ্রিল ১৯৭১ঃ সকালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর অতর্কিত বিমান হামলায় পটুয়াখালীতে নিহত হয় হাজারো নিরীহ মানুষ। নির্বিচারে চলে লুন্ঠন ও ধ্বংসযজ্ঞ। কিন্তু আজো শহীদদের গণকবরসহ যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো রয়েছে অরক্ষিত। কোন সহায়তাও পায়নি শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
১৯৭১সালের ২৬ এপ্রিল সকালে পটুয়াখালীর আকাশে হানা দেয় দুটি পাকিস্তানী জঙ্গি বিমান। নির্বিচারে শেলিং করে গুড়িয়ে দেয় টিএন্ডটি টাওয়ারসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। নিহত হয় অসংখ্য মানুষ।
বিটাইপ এলাকায় ৬ জন আনসার ও একজন তথ্য অফিসারকে গুলি করে হত্যা করে তারা। শহরের পুরানবাজার এলাকায় লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। শহর পরিণত হয় ধ্বংসস্তুপে।
পশু হাসপাতালের মাঠে দুটি হেলিকপ্টার থেকে নেমে আসে ছত্রীসেনা। তাদের প্রথম আক্রমণের শিকার হয় মাতবর বাড়ির নারী ও শিশুসহ ১৯ জন।
সকাল ১১টায় জয়পুরহাট শহর থেকে আট কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে কড়ই কাদিরপুর গ্রামের মানুষেরা হঠাৎ চুমকে উঠে গ্রামের পশ্চিম পাশের ঘড় বাড়িতে আগুন আর গুলির শব্দে । গুলির শব্দে আর আগুন দেখে আতঙ্কিত মানুষ প্রান ভয়ে দৌড়ে বাড়ির বাহিরে বের হয়ে দেখে ছোট্ট গ্রামটিতে ততক্ষনে মৌলবী আব্দুল মান্নান ও হাফিজ বিহারীর নেত্রীত্ত্বে পাকিস্তানী সেনাবাহীনি ও তাদের দোসর রাজাকার আলবদররা ঘিরে ফেলেছে ।
বৈশাখের তপ্ত দিনে আগুনের লেলিহান শিখা দাউ দাউ করে ছড়িয়ে পড়েছে পুরো গ্রামটিতে। রাইফেলের মুখে পাকিস্তানী হায়নারা গ্রামের সকল বয়সের পুরুষ মানুষকে এনে একত্রে জড়ো করে এই গ্রামের রাস্তা সংলগ্ন একদম পুকুরের পাড়ে । নির্বিচারে নিরিহ গ্রামবাসীর উপর গুলি চালাই পিছাচ পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ।
তৎকালীন স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের প্ররোচনায় কোনরকম উস্কানী ছাড়াই পাক সেনারা ৩৭১ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করে ।
তথ্যসূত্রঃ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিবেদন।
সম্পাদনাঃ মোহাম্মদ হাসান, সাংবাদিক ও কলামিস্ট।