মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে ১০ এপ্রিল ১৯৭১ঃএইদিনে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়। রচিত হয় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। মহান মুক্তিযুদ্ধকে আরো বেগবান করা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে নেতৃত্ব দেয় এই সরকার।
মুক্তির নেশায় তখন রণাঙ্গনে সশস্ত্র সংগ্রামে বীর বাঙ্গালী। তবে মুক্তিযুদ্ধকে আরো সুসংগঠিত করা এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার গঠন করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু করাগারে বন্দী, আর তাই আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের প্রচেষ্টায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তাদের সহায়তার আশ্বাস পাওয়া যায়। এরপরই ১০ই এপ্রিল কারাবন্দী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, তার অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও তাজউদ্দীন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী করে গঠিত হয় গণপ্রজতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। পরদিন ১১ এপ্রিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে জানানো হয় ওই সরকার গঠনের খবর।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলার সংগ্রামকে বিশ্ব পরিমন্ডলে স্বীকৃতি আদায় করতে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রও রচিত হয় ১০ এপ্রিল।
যুুদ্ধপরবর্তী সময়ে স্বাধীনতার ঘোষনা নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছাড়ানো হলেও ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল রচিত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়টি স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে।
পরবর্তীতে ১৭ই এপ্রিল মুজিবনগর সরকার আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়।
সংগ্রামের নোটবুক মতে,১০ এপ্রিল,১৯৭১ সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ঘোষণার দিন
বাংলাদেশের গণপরিষদের ক্ষমতা বলে এবং যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি হিসেবে এ সংক্রান্ত ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক ইউসুফ আলী।
ঘোষণাপত্রে ‘জাতির পিতা’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ২৬ মার্চ ঘোষিত স্বাধীনতা দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়।
৭১’এর ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারের প্রতিষ্ঠা এবং স্বাধীনতার আদেশ ২৬ মার্চ থেকে কার্যকর ঘোষণাকে অন্যতম রাজনৈতিক অগ্রগতি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
ঘোষণাপত্রে দৃঢ়ভাবে ঘোষণা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বলা হয়, ‘সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রজাতন্ত্রের উপ রাষ্ট্রপতি থাকবেন।’
এতে আরো বলা হয়, ‘বাংলাদেশের জনগণকে একটি নিয়মতান্ত্রিক ও ন্যায়ানুগ সরকার প্রদানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অন্য সব কার্য করিতে পারিবেন।’
‘আমরা বাংলাদেশের জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ আরো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, কোনো কারণে রাষ্ট্রপতি না থাকা বা রাষ্ট্রপতি তাহার কার্যভার প্রয়োগ করিতে অসমর্থ হওয়া বা তাহার ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে অসমর্থ হওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ওপর এতদ্বারা অর্পিত সমুদয় ক্ষমতা, কর্তব্য ও দায়িত্ব উপ-রাষ্ট্রপতির থাকিবে এবং তিনি উহা প্রয়োগ ও পালন করিবেন।’
ঘোষণাপত্রের শেষে বলা হয়, ‘আমরা আরো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, স্বাধীনতার এই ঘোষণাপত্র ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তারিখে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।’
‘আমরা আরো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, এই দলিল কার্যকর করার লক্ষ্যে এবং রাষ্ট্রপতি ও উপ-রাষ্ট্রপতির শপথ পরিচালনার জন্য আমরা অধ্যাপক ইউসুফ আলীকে আমাদের যথাযথ ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি নিয়োগ করিলাম।’
ইতোমধ্যে ১০ এপ্রিল, বাংলাদেশ সময় রাত দশটায় শিলিগুড়ির জঙ্গলে অবস্থিত গোপন বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সুদীর্ঘ দিকনির্দেশনামূলক ঐতিহাসিক ভাষণটি প্রচারিত হয়। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনির বর্বরতার বিরুদ্ধে বীর ম
ুক্তিযোদ্ধাদের অকুতোভয় সংগ্রাম এবং বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার গঠনের কথা।
তথ্যসূত্রঃসংগ্রামের নোটবুক ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রতিবেদন।
সম্পাদনাঃমোহাম্মদ হাসান,সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment