মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে ৯ এপ্রিল ১৯৭১ঃ ঢাকায় খাজা খয়েরউদ্দীনকে আহ্বায়ক করে ১৪০ সদস্য বিশিষ্ট নাগরিক শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। স্বাধীনতা বিরোধীদের কার্যক্রমের মধ্যে এটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ঘোষণায় বলা হয়, এই ১৪০ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির অধীনে বিভিন্ন শহরের শান্তি কমিটিগুলো কাজ করবে। এই কমিটিকে আরো কো-অপ্ট করার ক্ষমতা দেওয়া হয়।
‘৭১এর শান্তি কমিটির সদস্যদের নামের তালিকা
এর ২১ সদস্যের একটি কার্যকরী কমিটিতে যারা ছিল তারা হল জনাব সৈয়দ খাজা খায়েরুদ্দিন (পুরাতন ঢাকা )কাউন্সিল মুসলিম লীগ , জনাব এ কিউ এম শফিকুল ইসলাম(নবীনগর ব্রাহ্মমবারিয়া)কাউন্সিল মুসলিম লীগ, অধ্যাপক গোলাম আযম ইসলাম(নবীনগর ব্রাহ্মমবারিয়া)জামাত, জনাব মাহমুদ আলী(সুনামগঞ্জ)পিডিপি , জনাব আব্দুল জব্বার খদ্দর(নোয়াখালী)পিডিপি, মওলানা সিদ্দিক আহমদ(দক্ষিন চট্টগ্রাম) নেজামে ইসলাম, জনাব আবুল কাশেম (উলিপুর কুড়িগ্রাম) কাউন্সিল মুসলিম লীগ বিএনপি ও জাপা নেতা মাইদুল ইসলামের পিতা, জনাব মোহন মিয়া(ফরিদপুর)পিডিপি বিএনপি নেতা কামাল ইবনে ইউসুফ এর পিতা,, মওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ মাসুম, জনাব আব্দুল মতিন, অধ্যাপক গোলাম সারোয়ার(জামাত) , ব্যারিস্টার আফতাব উদ্দিন, পীর মোহসেন উদ্দিন(মাদারীপুর)জমিওতে উলামা ইসলাম , জনাব এএসএম সোলায়মান(সোনারগাঁ) কেএসপি, জনাব এ.কে রফিকুল হোসেন(পিডিপি), জনাব নুরুজ্জামান(ইসলামিক রিপাবলিকান পার্টি), জনাব আতাউল হক খান, জনাব তোয়াহা বিন হাবিব, মেজর (অবসর প্রাপ্ত) আফসার উদ্দিন(দক্ষিন বরিশাল পটুয়াখালী) ইসলামী গণতন্ত্রী দল , দেওয়ান ওয়ারাসাত আলী, এবং হাকিম ইরতেজাউর রহমান খান।
শান্তি কমিটির সমর্থক ও থিঙ্ক ট্যাংক
বিচারপতি জনাব এ কে এম বাকের(জামাত নোয়াখালী), মওলানা সাইয়েদ মুস্তফা মাহমুদ আলয়াখালি(জমিওত), মওলানা মুহম্মদ আবদুর রহীম(জামাত পিরোজপুর), পীর মোহসেন উদ্দীন, অধ্যাপক গোলাম আযম, জনাব এ কিউ এম শফিকুল ইসলাম, ড. হাসান জামান, ড: কাজী দীন মুহাম্মদ, ড. মফিজুল্লাহ কবীর, ড. মোহর আলী, ড. হাবিবুল্লাহ, অধ্য জালালুদ্দিন, ড. মুস্তাফিজুর রহমান, ব্যারিষ্টার আখতার উদ্দীন(বরিশাল মুস্লিম লীগ কনভেন্সন) , ব্যারিষ্টার কোরবান আলী, অধ্যাপক আবদুল গফুর, মওলানা ওবায়দুল্লাহ, মওলানা মোস্তাসির আহমদ রহমানী, অধ্য এ আর ফাতমী, অধ্য ইব্রাহিম খান, এডভোকেট এ. টি. সাদী, মেজর আফসার উদ্দীন, মওলানা সাইয়েদ মুহাম্মদ মাসুদ এবং ডা. গোলাম মোয়াজ্জেম।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এর তথ্য মতে,লে. জেনারেল টিক্কা খান পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হিসেবে শপথ নেন। জল্লাদ টিক্কা খানের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ঢাকা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বি.এ.সিদ্দিকী।
ঢাকায় খাজা খয়েরউদ্দীনকে আহবায়ক করে ১৪০ সদস্যবিশিষ্ট নাগরিক শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। স্বাধীনতা বিরোধীদের কার্যক্রমের মধ্যে এটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ঘোষণায় বলা হয়, এই ১৪০সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির অধীনে বিভিন্ন শহরের শান্তি কমিটিগুলো কাজ করবে। এই কমিটিকে আরো কো-অপ্ট করার ক্ষমতা দেওয়া হয়।
ঢাকায় সামরিক কর্তৃপক্ষ ঢাকাস্থ ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশন থেকে বেতার ট্রান্সমিটার অপসারণের নির্দেশ দেয়।
ময়মনসিংহের মধুপুরে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল যুদ্ধ সংগঠিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধারা নোয়াখালীর নথের পটুয়া স্টেশনের কাছে একটি ফরোয়ার্ড ডিফেন্স স্থাপন করে।
সকাল ৯টায় পাকসেনারা বিমান ও কামানের গোলার সমর্থনপুষ্ট হয়ে পাঁচদোনাতে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের উপর হামলা চালায়। এক ঘন্টা যুদ্ধের পর পাকসেনারা পিছু হটে গোপালদী বাজারে চলে যায়।
সিলেট বিমানবন্দর ও লাক্কাতুরা চা বাগান এলাকা ব্যতীত পুরো সিলেট মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে চলে আসে। পাকবাহিনী অবস্থানরত এ দুটি এলাকা দখলের পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধাদের দুটি কোম্পানি বিমানবন্দর আক্রমণ করে।
পাকবাহিনী নড়াইল মহকুমা শহরে বিমান হামলা চালায় এবং যুগপৎ দাইতলা থেকে অভিযান চালিয়ে পাকসেনারা নড়াইল দখল করে নেয়।
ব্রিগেডিয়ার আব্দুল্লাহ খান মালেক-এর নেতৃত্বে পাকবাহিনী বদরগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের ডিফেন্সের উপর আক্রমণ করে। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ যুদ্ধ চলে। মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের ব্যাপক আক্রমণের মুখে পিছু হটে খোলাহাটিতে চলে যায়।
মেজর শওকত হাবিলদার তাহেরসহ ১০ জন সৈনিক নিয়ে সকাল ৮টা৩০ মিনিটে কালুরঘাট থেকে এক মাইল উত্তরে পাকবাহিনীর ঘাঁটি কৃষি ভবন আক্রমণ করেন। উভয় পক্ষের তুমুল সংঘর্ষে পাকিস্তানিদের একজন ক্যাপ্টেন ও একজন সুবেদারসহ ২০ জন নিহত হয়। অবশিষ্ট পাকিস্তানিরা কৃষিভবন ছেড়ে শহরে চলে যেতে বাধ্য হয়।
পাকসেনারা কালুরঘাট ও মদুনাঘাট দখলের চেষ্টা চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে তাদের সকল চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
সামরিক কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে, পাকিস্তানের বৃহত্তর বন্দর চট্টগ্রাম থেকে সমাজবিরোধীদের উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রদ্রোহীদের নির্মূলে সর্বতোভাবে সহায়তা করেছে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক নেতারা ও পাকিস্তান প্রিয় জনগণ।
বেনাপোল সীমান্তে মুক্তিবাহিনী ও পাকসেনাদের মধ্যে সারাদিন ধরে সংঘর্ষ চলে।
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ৭৮নং সামরিক আদেশ জারি করেন। এই আদেশ বলে সন্দেহজনক ব্যক্তিদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ এবং দেশের জন্য ক্ষতিকর কার্যকলাপ রোধের অজুহাতে যে কোন ব্যক্তিকে দেশ থেকে বহিষ্কার করার ক্ষমতা লাভ করে সামরিক কর্তৃপক্ষ।
ইসলামিক রিপাবলিক পার্টির সভাপতি মাওলানা নুরুজ্জামান ঢাকার ঘরে ঘরে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের জন্য প্রদেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
গোলাম আজম রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্র থেকে এক ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি জনগণকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ভারত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সাহায্যের নামে তাদের অশুভ উদ্দেশ্য হাসিল করছে। আসলে ভারত পাকিস্তানকে ধ্বংস করে দিতে চায়। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে প্রতিটি পাকিস্তানি মুসলমান জীবন দেবে, কোনক্রমেই পাকিস্তানের অখন্ডতা বিনষ্ট হতে দেবে না।
তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও সংগ্রামের নোটবুক।
সম্পাদনাঃমোহাম্মদ হাসান,সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজে ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা গেছে। ভিডিওতে…
সাইমন সাদিক, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা শুরু করেন ২০১৮ সাল থেকে। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং বাইরে সফলতার সাথে…
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরো একটি নতুন কন্টিনজেন্ট ‘বাংলাদেশ আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ এর ১ম দল গণতান্ত্রিক কঙ্গো…
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর…
রিয়াদ প্রতিনিধি- ১০জানুয়ারী বুধবার স্হানীয় সময় রাত সাড়ে ১০ঘটিকায় হোটেল ডি-প্যালেসে রিয়াদ মহানগর বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন,…
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের কয়েকটি ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও আয়ারল্যান্ডের…
Leave a Comment