৫৯ সালেই শেখ মুজিব ছাত্রলীগ পর্যায়ে আন্ডার গ্রাউন্ড রাজনীতি শুরুর নির্দেশ দেন শেখ মনিকে। মনি তখন পরবর্তী মনোনীত(৬০এর জুনে) ছাত্রলীগ সভাপতি। কিন্তু সামরিক শাসনের কারনে রাজনীতি নিষিদ্ধ। এই গোপন বা আন্ডার গ্রাউন্ড রাজনীতি শুরু করেন মনি – মোয়াজ্জেমরাই। পরের কমিটি ওবায়দুর – সিরাজুল আলম খানের কমিটি কাজ শুরু করে যখন আইউব খান সামরিক শাসন প্রত্যাহার করে বেসামরিক শাসন চালু করেন। তখন মুক্ত রাজনীতি চালু ছিল। মনি – মোয়াজ্জেম কমিটির ৩বছরের মধ্যে আড়াই বছর ছিল প্রকাশ্য রাজনীতি নিষিদ্ধ। আর এ সময় রাজনীতিতে ছাত্র ইউনিয়ন অনেক এগিয়ে গিয়েছিল। তাই দলকে শক্তিশালী করতে গোপন রাজনীতির বিকল্প ছিলনা। প্রথম কাজ ছিল ছাত্রলীগ পুনরিজ্জিবিত করা।
ছাত্রলীগ পুনরিজ্জিবিত হয় ভিন্ন নামে শিল্প সংঘ সাহিত্য সংঘের আড়ালে। মনি তার বাহিনীকে তখন ছাত্রলীগ কর্মী আখ্যায়িত করতেন যাকে পরে সিরাজুল রাজ্জাকরা নিউক্লিয়াস নাম দিয়েছিলেন। নিউক্লিয়াস ছিল ৫ বা ১০ জনের বিশেষ কর্মী দল যারা পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা কাম্য করে। সঙ্গত কারনে প্রায় সকল ছাত্রলীগ কর্মীরাই এ মনোভাব প্রকাশ করত। মনি বলেছেন তারা তাদেরই ছাত্রলীগে নিতেন যারা শেখ মুজিব এর নেতৃত্ব এবং দেশের স্বাধীনতা কাম্য করত। মনির দলের বিস্তৃতি ছিল সিরাজুলদের ছিল শর্ট লিস্ট। মনির মতে তাদের এ কর্মীরাই ৭০ সালের নির্বাচনে জনগনের কানে স্বাধীনতার বানী পৌঁছে দিয়েছিল। ৭০ এর মাঝামাঝি এই সেলের লোকরাই সংগঠিত হয় যে কোন পরিস্থিতির মোকাবেলায়। মনি অবশ্য এই সংগঠিত হওয়ার কাঠামোর নাম উল্লেখ করেননি।
এই সংগঠিত হওয়াটাই ছিল আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী যারা ৭ জুন ১৯৭০ সালে তাদের শক্তিমত্তা প্রদর্শন করে। মনি বলেন ২৫ মার্চের পর আমরা সকল প্রস্তুতি সত্ত্বেও বেশিদিন টিকতে পারিনি। আমরা ভারতে চলে যাই সেখানে সংগঠিত হই প্রশিক্ষন নেই। আমরা তখন আমাদের বাহিনীর নাম দেই মুজিব বাহিনী। জেনারেল উবান তার বইয়ে দাবী করেন নামটি তিনি দিয়েছিলেন কিন্তু ভারত সরকার এ নামে আপত্তি জানিয়েছিল। উবান বলেন তিনি জোর জবরদস্তী করে নামটি বহাল রাখতে সমর্থ হয়েছিলেন।