পাকিস্তান নামের রাহু’র গ্রাসে আমাদের জন্মভূমি। মানবতার চূড়ান্ত অবমাননার কালে ‘শনির দশা’ হিসেবে সাতচল্লিশ বছর আগে এদিন অবরুদ্ধ বাংলাদেশে আবির্ভূত হয়েছিল ‘রাজাকার’ নামের কুখ্যাত ঘাতক বাহিনী।
জামায়াতে ইসলামের পূর্ব পাকিস্তান শাখার সহকারী আমির মাওলানা আবুল কালাম মোহাম্মদ ইউসুফ (এ.কে.এম. ইউসুফ নামে কুখ্যাত) খুলনার খানজাহান আলী রোডে একটি আনসার ক্যাম্পে ৯৬ টি অমানুষের সমন্বয়ে প্রথম রাজাকার বাহিনী গঠন করে।
রাজাকার বাহিনী গঠনের ১৬ দিনের মাথায় ১ জুন ১৯৭১ সালে ‘বাংলা ও বেলুচিস্তানের কসাই’ টিক্কা খান পূর্ব পাকিস্তান রাজাকার অর্ডিন্যান্স-১৯৭১ জারি করে আনসার বাহিনীকে রাজাকার বাহিনীতে রূপান্তরিত করেছিল। এই কুখ্যাত ঘাতক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ছিল পাকিস্তানপন্থী জামায়াতে ইসলাম,মুসলিম লীগ সহ অন্যান্য দলীয় নেতৃত্বের হাতে।
পরবর্তীতে ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সালে, পাকিস্তানী সামরিক জান্তার ঘোষিত এক ফরমানে রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল। মুক্তিকামী মানুষের স্বাধীনতা অর্জনের আকাঙ্ক্ষা দমনের উদ্দেশ্যে এই কুখ্যাত বাহিনী সদস্যরা ১৫ দিন মেয়াদী প্রশিক্ষণ নিত।
কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী আচরণ থাকা সত্ত্বেও সামগ্রিকভাবে এ বাহিনীর অমানুষ সদস্যরা পাকিস্তানী হার্মাদ’দের সহযোগী হিসেবে খুন,ধর্ষণ,হত্যা,লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ সহ বিভিন্ন নৃশংসতার সাথে যুক্ত ছিল। স্মর্তব্য, পাকিস্তানপন্থী বেঈমানদের ভেতর ‘পালের গোদা’ হিসেবে পরিচিত শীর্ষ অমানুষগুলোর বিচার সম্পন্ন ও চলমান রয়েছে।
তবে চুনোপুঁটি রাজাকারদের বর্বরতা কোন অংশেই কম ছিলোনা। প্রত্যাশা করি, বেঁচে থাকা সেসব অমানুষদের বিচার প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হবে দ্রুত গতিতে।