খোদা বক্স মৃধামাইক্রোফোনের সামনে থেকে হারিয়ে গেল একটি চেনা মুখ। মাঠে খেলা থাকবে, কিন্তু ধারাভাষ্য কক্ষে আর ফিরে আসবেন না তিনি। মৃত্যুর অন্ধকারে মিলিয়ে গেছেন জনপ্রিয় ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার খোদা বক্স মৃধা।
টাইফয়েড ও নিউমোনিয়ায় ভুগে ( সকাল ৩০ মার্চ, ২০১০ ) সোয়া আটটায় রাজশাহী মহানগরের হেতেমখাঁর নিজ বাসভবনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। খোদা বক্সের ৬৫ বছরের জীবনের ৩৮টি বছরই কেটেছে রেডিও আর টেলিভিশন ধারাভাষ্যে।.খোদা বক্স মৃধার ভাই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় ফজলে সাদাইন জানালেন, খোদা বক্স ক্রিকেটের পাগল ছিলেন ছোটবেলা থেকেই। রাজশাহী জেলা ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব করেছেন। রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠা করেছেন সানরাইজ স্পোর্টিং ক্লাব। জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ বললেন, ‘সবাই তাঁকে ধারাভাষ্যকার হিসেবে জানলেও আমাদের কাছে তাঁর পরিচয় একজন খেলোয়াড় এবং সংগঠক হিসেবেও।’
১৯৭২ সালে কলকাতা ইস্ট বেঙ্গল বনাম রাজশাহী জেলা ফুটবল দলের একটি প্রদর্শনী ম্যাচ রাজশাহী বেতারে সরাসরি সম্প্রচার হয়েছিল, ধারাভাষ্যে খোদা বক্সের অভিষেক সে ম্যাচ দিয়েই। বেতার এবং টেলিভিশন ধারাভাষ্যে এর পর থেকেই নিয়মিত ছিলেন খোদা বক্স।
খোদা বক্সের জন্ম ১৯৪৫ সালে ২২ জানুয়ারি রাজশাহীর হেতেমখাঁয়। তিনি ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক। ১৯৬৮ সালে সিলেট এমসি কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে শিক্ষকতা পেশার শুরু।
আরও পড়ুন…
- পিটিয়ে হত্যা: ভিডিওতে শনাক্ত ছাত্রদলের ৫ নেতাকর্মী
- ২০২৩ এর সফল ফ্রিল্যান্সার অ্যাওয়ার্ড পেলেন সাইমন সাদিক
- ডিআর কঙ্গোতে শান্তিরক্ষী মিশনে সেনাবাহিনীর ‘আর্মড হেলিকপ্টার ইউনিট’ মোতায়েন
অবসর নেন ২০০৩ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে। গতকাল বাদ আসর সেই কলেজ মাঠেই হলো খোদা বক্সের প্রথম জানাজা। নগরের জিরো পয়েন্টে দ্বিতীয় এবং বাদ মাগরিব হেতেমখাঁ বড় মসজিদে তৃতীয় জানাজা শেষে হেতেমখাঁ কবরস্থানে দাফন করা হয় তাঁর মরদেহ। এর আগে তাঁর মরদেহ রাখা হয় মুসলিম হাইস্কুলে। সেখানে রাজশাহীর সর্বস্তরের মানুষ তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর শোক: খোদা বক্স মৃধার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘তাঁর মৃত্যু দেশের ক্রীড়া ধারাভাষ্য জগতের জন্য অপূরণীয় এক ক্ষতি।’ শোক প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকারও। এ ছাড়া শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, বাংলাদেশ ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা, বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি, সোনালী অতীত ক্লাব, সম্মিলিত ক্রীড়া পরিবার এবং রাজশাহীর বিভিন্ন সংস্থা ও ক্লাব।