ইংলিশ ফুটবল ক্লাব লিভারপুল স্ট্রাইকার সাদিও মানে যেনো মহানুভবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। বছরে ১২ মিলিয়ন ডলারের বেশি আয় করলেও তার চলাফেরা একদম সাধারণ।
অন্যসব তারকাদের মধ্যে অনেকেই যেখানে টাকা উড়িয়ে ফুর্তি করতে ব্যস্ত সেখানে তিনি ব্যস্ত মানুষের উপকারে। নিয়মিত ক্ষুধার্ত শিশুদের খাওয়ান তিনি। এমনকি নিজে ব্যবহার করেন স্ক্রিণ ফেটে যাওয়া পুরোনো ফোন।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় মানের মানের এমন ছবি ভাইরাল হওয়ার পর জানালেন নিজের সহজ জীবনযাপনের রহস্য।
অনেক তারকাই প্রতি মাসে নতুন সিরিজের ফোন ব্যবহার করে টাকা উড়িয়ে থাকেন। অথচ মানে একবারেই ব্যতিক্রম। বরং এমন কাজকে ভোগের কয়েদি হয়ে যাওয়া বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এত বড় তারকা হয়েও সাধারণ জীবন যাপনের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘দশটি ফেরারি গাড়ী, বিশটি ডায়মণ্ড ঘড়ি আর বিলাসবহুল বাড়ি, নিত্যনতুন মডেলের বিলাস সামগ্রী এসব দিয়ে কী হবে। এগুলো শুধু বৈষয়িক অবজেক্ট ছাড়া আর কিছুই নয়।’
এদিকে মানের দার্শনিক সত্তাও প্রকাশ পেয়েছে তার কথায়। তিনি বলেন, ‘মানুষের রুচি খুবই নিম্নমানের না হলে কেউ বিশ ত্রিশ হাজার ডলারের ঘড়ি হাতে দিয়ে ঘুরবেনা। আর এসবে আমার এবং সমাজের কি উপকার হবে। যেই মুহুর্তে আমার নিঃশ্বাস শেষ সেই মুহুর্ত থেকে এসবের মালিকানাও শেষ।’
নিজ দেশের উন্নয়ন কার্যে আয়ের বড় অংশ খরচ করে থাকেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজের বিলাস বহুল বাড়ির পরিবর্তে অসংখ্য স্কুল তৈরি করেছি, দামি পোষাকে ওয়্যারড্রব ভর্তি না করে অসংখ্য বস্ত্রহীন মানুষকে বস্ত্র দিয়েছি। নিজে দামি গাড়ি চালানোর পরিবর্তে অগণিত স্কুল ছাত্র ছাত্রীদের স্কুল বাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহে দামি রেস্টুরেন্টে না খেয়ে হাজার হাজার ক্ষুধার্ত শিশুর খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
এসব করার কারণও বলেছেন মানে। সেখানে যেনো উঠে এসেছে তার মহত্বের অনন্য উদাহরণ। সাদিও মানে বলেন, ‘একসময় আমি আর ফুটবল খেলতে পারবোনা। বার্ধক্য আসবে। নিঃশ্বাসের ইতি ঘটবে। কিন্তু বাড়ি, গাড়ি, ঘড়ি, ফোন আমাকে বাঁচিয়ে রাখবেনা। যেসব মানুষকে সাহায্য করেছি তাদের নিঃশ্বাসেই হয়তো আমি বেঁচে থাকবো।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি শিক্ষিত না । তাই হয়তো শিক্ষার গুরুত্ব বুঝেছি। দরিদ্র ছিলাম বলেই হয়তো জীবনের আসল অর্থ বুঝেছি। কিন্তু দুনিয়ায় আজ যারা বড় শিক্ষিত তারাই হয়তো শিক্ষার গুরুত্বটা ঠিকঠাক বুঝছেন না। যদি বুঝতেন তবে দুনিয়াতে এতো অভুক্ত শিশু না খেয়ে রাতে ঘুমোতে যেতোনা। মানুষ দিন দিন এভাবে ভোগ বিলাসের কয়েদি হয়ে ওঠতোনা।’